'আমার নতুন কিছু পাওয়ার নেই'

মৌসুমী
মৌসুমী

‘আজ আমাদের চলচ্চিত্রে কিছু অশুভ ছায়া কাজের পরিবেশকে নষ্ট করছে। কেউ আবার অলিখিতভাবে শিল্পীদেরও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন, সিনেমার ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন। এই অশুভ ছায়া পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে পড়ছে। আজকে আমি মৌসুমীর কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি থেকে নতুন করে পাওয়ার কিছু নেই।’ বললেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া চিত্রনায়িকা মৌসুমী।

৩ নভেম্বর ছিল দেশের সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা মৌসুমীর জন্মদিন। এ উপলক্ষে গতকাল রোববার রাতে সিনেমা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে তিনি এসব কথা বলেন।

অক্টোবরে গঠন করা হয়েছে চলচ্চিত্রের নতুন সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরাম। এই সংগঠনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মৌসুমী। সম্প্রতি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। অনেক দিন ধরে চলচ্চিত্রে ‘নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ’ যে খেলা চলছিল, তা নিয়েও কথা বলেন এই নায়িকা।

মৌসুমী বলেন, ‘চলচ্চিত্রের আমার জুনিয়রদের মধ্যে শাকিব খান প্রসঙ্গে বলতে চাই, তাঁকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার যে আয়োজন দেখেছি আর আলোচনা শুনেছি—তা আমার মোটেও ভালো লাগেনি। এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই, চলচ্চিত্রে ও-ই (শাকিব খান) বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। সেই শাকিবকেই যদি হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়, নানাভাবে অপমান করা হয়—তখন সাধারণ পর্যায়ের শিল্পীদের অবস্থা কী হতে পারে, তা আমরা অনুমান করতে পারি।’

শিল্পীদের স্বার্থ দেখার দায়িত্ব কার? এফডিসির নাকি সরকারের? মৌসুমী আক্ষেপ করে বললেন, ‘না। তবে বড় ধরনের কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই এফডিসি কর্তৃপক্ষের কাছে যাব। আরও বড় সমস্যা হলে সরকারের কাছে যাব, সহযোগিতা করতে বলব। কিন্তু চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি তো শিল্পীদের স্বার্থরক্ষার নামে কিছুই করছে না।’

শিল্পীরা যদি ভুল করেন, তাহলে তাঁদের নিষিদ্ধ করার যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান মৌসুমী। তিনি বলেন, ‘কোনো শিল্পী যদি ভুল করে, কেন ভুল করেছে, শুরুতে তা জেনে ওই শিল্পীকে বোঝানো উচিত। আর যদি লাগাতার ভুল করে, তাহলে সিনিয়রদের সহযোগিতায় এর সমাধানের পথ বের করা উচিত। সবাইকে একসঙ্গে বসে সুন্দর পথ দেখানোর ব্যবস্থা করা উচিত। এখন কিন্তু হাতে গোনা কয়েকজন প্রযোজক ছাড়া কেউ সিনেমায় লগ্নি করছেন না। এ কারণে পুরো চলচ্চিত্রশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

মৌসুমীর মতে, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি যদি এসব না করত, তাহলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরামের প্রয়োজন হতো না। তিনি বলেন, ‘যদি সবকিছু নিয়ম মেনে চলত, তাহলে শাকিব খান চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি থেকে বের হতো না। সবাই সবার মতো ভালো কাজ করুক, এটাই আমি চাই।’