২০১৬ সালের নভেম্বরে পাঁচটি দাবি নিয়ে শুরু হয়েছিল এফটিপিওর (ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন) আন্দোলন। টেলিভিশন নাটকের সঙ্গে জড়িত ১২টি সংগঠনের এই আন্দোলনের সর্বশেষ দাবি পূরণ হলেও ঝুলে আছে প্রথম চারটি। তবে দাবি পূরণ না হলেও পুরোনো দাবির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও কয়েকটি দাবি। সংগঠনের প্রথম দাবি ছিল, দেশের বেসরকারি চ্যানেলে বাংলায় ডাবকৃত বিদেশি সিরিয়াল বা অনুষ্ঠান বন্ধ করা। দাবির পক্ষে সংবাদ সম্মেলন, শহীদ মিনারে তারকাদের সমাবেশ, বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিসহ নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে এফটিপিও। কিন্তু আন্দোলনের সুফল মেলেনি। উল্টো সংগঠনটির ঝিমিয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে।
তবে ঝিমিয়ে পড়ার ব্যাপারটি বলতে নারাজ এফটিপিওর সদস্যসচিব গাজী রাকায়েত। তিনি বলেন, ‘আন্দোলন মোটেও ঝিমিয়ে পড়েনি। আন্দোলন নিয়ে সরকারি পর্যায়ে কাজ চলছে। খুব তাড়াতাড়ি দাবি বাস্তবায়িত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’ একই মতামত দেন সংগঠনের আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ।
গাজী রাকায়েত বলেন, বাস্তবায়নের জন্য বেশ কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করেছেন তাঁরা। যেমন গত বছরের ৪ ডিসেম্বর তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে গঠিত কেব্ল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০১৬ এবং ১৯ ধারার ৪ উপধারা লঙ্ঘনের বিষয় পর্যালোচনাসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনাপূর্বক সুপারিশ প্রদানের জন্য কমিটি গঠন করা হয়। এ বছরের ৩ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কমিটির সভা বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহ্বায়ক বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন অর রশীদ। সভায় কমিটির সদস্যরা একটি সুপারিশমালা প্রণয়ন করেন এবং পরবর্তী সময়ে সেটা তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেই সুপারিশমালা বাস্তবায়নের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে এফটিপিও সব ধরনের কর্মসূচি স্থগিত করে।
গাজী রাকায়েত বলেন, ‘সুপারিশমালা বাস্তবায়নের জন্য আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়ে প্রায় ১০-১২ বার চিঠি দিয়েছি, কিন্তু যা হওয়ার তাই হয়েছে। সর্বশেষ আমরা গত অক্টোবরে বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো), এফটিপিও এবং সরকারের প্রতিনিধি মিলে মিটিং ডাকা হয়েছিল। সেখানে আমরা উপস্থিত হলেও অ্যাটকো থেকে কেউ আসেনি।’
গাজী রাকায়েত বলেন, আবার তাঁরা শহীদ মিনারে একত্র হওয়ার পরিকল্পনা করছেন। সেখানে নতুন করে সিদ্ধান্ত হওয়ারও কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমরা সুপারিশমালা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। এটা বাস্তবায়নের দায়িত্ব তাদের। এ ব্যাপারে আমাদের আর কিছু করার নেই।’
তবে আন্দোলন নিয়ে এফটিপিও আশায় বুক বাঁধলেও দেশের বেশ কিছু টেলিভিশন চ্যানেলে চলছে বাংলায় ডাবকৃত বিদেশি ধারাবাহিক। যদিও এরই মধ্যে শেষ হয়েছে দীপ্ত টিভির সুলতান সুলেমান-এরপ্রচার। জানা গেছে, একই সময়ে নতুন আরেকটি বিদেশি ধারাবাহিক আছে প্রচারের অপেক্ষায়। এ ছাড়া চ্যানেল আইতে চলছে লুকানো ভালোবাসা, গাজী টিভিতে আলিফ লায়লা ও দুটি কার্টুন সিরিজ, মাছরাঙায় দিরিলিস। বেশ কয়েকটি চ্যানেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডাবকৃত ধারাবাহিক দর্শকের পছন্দের কারণেই প্রচারিত হচ্ছে।