মাঝে মাঝেই এ বিভ্রাট লক্ষ করা যায়

শুরুতে একটি বিভ্রাটের গল্প বলা যাক। ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে মাছরাঙা টিভিতে শুরু হলো চিত্রনায়ক আমিন খান ও মৌটুসি বিশ্বাস অভিনীত টেলিছবি আমি সুচিত্রা নই এর প্রচার। ৭-৮ মিনিট পরেই হঠাৎ আটকে গেল। প্রথমে অপেক্ষা তারপর ডিশ লাইনে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মাছরাঙা টিভির প্রচারে বিঘ্ন। তারপর অপেক্ষা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হলো, কিন্তু সে রাতে মাছরাঙা টিভি আর দেখাই গেল না। অথচ অন্যান্য চ্যানেল চলছিল স্বাভাবিকভাবেই। মাছরাঙা টিভিতে মাঝে মাঝেই এ বিভ্রাট লক্ষ করা যায়। আশা করি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।

২৪ নভেম্বর রাত ৮টা ১০ মিনিটে আরটিভিতে প্রচারিত হলো শফিকুর রহমান শান্তনু রচিত ও সকাল আহমেদ পরিচালিত সাপ্তাহিক নাটক শেষ সাত দিন। অভিনয়ে শাহেদ, প্রভা, আরফান প্রমুখ।

নাটকের গল্পটি সংক্ষেপে এ রকম, নবদম্পতি প্রভা ও শাহেদ কক্সবাজারে এসেছে হানিমুনে। হেসে খেলে দিন ভালোই কাটছিল দুজনের। হঠাৎ উদ্ভট সাজপোশাকধারী আরফানের সঙ্গে প্রভার একাকী দেখা হলে আরফান জানায় প্রভার আয়ু আছে আর মাত্র ৭ দিন। প্রথমে বিশ্বাস না হলেও অচিরেই শাহেদ ও প্রভার মাঝে এ নিয়ে দেখা দেয় আতঙ্ক। আরফান শাহেদকে জানায়, এই ৭ দিনের মাঝে সে যদি প্রভার কাছে তার জীবনের সবচেয়ে বড় অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চায়, তাহলে কোনো সুফল হতেও পারে। এরপর শাহেদ প্রভাকে জানায় একটি হিন্দু মেয়ের সঙ্গে তার প্রেম ও প্রতারণার কথা। শুনে প্রভা শাহেদকে প্রত্যাখ্যান করে। এরপর শাহেদ আত্মহত্যা করতে গেলে প্রভা এসে বাধা দেয়। প্রভা জানায়, ছদ্মবেশী আরফান তার পূর্বতন প্রেমিকার বড় ভাই। তার সঙ্গে যোগসাজশে সাজানো হয় এই ৭ দিন পর মৃত্যুর নাটক।

নাটকের গল্পটি ছিল ভালোই। গল্পের বুনন, সংলাপ—এসবই ছিল চরিত্র অনুযায়ী স্বাভাবিক ও আকর্ষণীয়। প্রভার অভিনয়ে কিছুটা কৃত্রিমতা থাকলেও তা মানিয়ে গেছে নববধূ হিসেবে। কিন্তু আরফানের মেকআপ ছিল কৃত্রিম ও বেমানান। নাটকের ঘটনায় সে অত্যন্ত দুর্ভাগা ও দুঃখকাতর একটি চরিত্র। মনে হয়েছে, তাকে সাধারণ ও স্বাভাবিকভাবে দেখালেই হয়তো দর্শকের কাছে তা হতো গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বস্ত।

২৩ নভেম্বর রাত ১১টা ৩০ মিনিটে সরাসরি গানের অনুষ্ঠান ‘মিউজিক এন রিদম’ প্রচারিত হয় এনটিভিতে। পারিহার উপস্থাপনায় এবারে অনুষ্ঠানের শিল্পী ছিলেন নাজু আখন্দ।

শিল্পী নাজু আখন্দ তরুণদের মাঝে এ সময়ে বেশ জনপ্রিয় ও প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পী। তিনি এই অনুষ্ঠানে একটানা প্রায় দেড় ঘণ্টা গান করেছেন। এবং প্রশংসনীয় দিক হলো প্রায় সবটাই করেছেন তিনি নিজের গান। যেটি তরুণ শিল্পীদের কাছে আমাদের প্রত্যাশিত। তাঁর কয়েকটি গান তো দর্শকের হৃদয়ে বেশ নাড়া দিয়ে গেছে, যেমন ‘আমাকে তুই আপন করে নে,’ ‘আমি মন দিয়েছি মনটা নিতে চাই,’ ‘মনে কী পড়ে না’ ইত্যাদি। আমরা সরাসরি গানের অনুষ্ঠানে এমন অনেক শিল্পীকেই পাই, যাঁদের নিজের কোনো গান নেই। তাঁরা নিজের গান দিয়ে বিখ্যাত শিল্পীদের জনপ্রিয় গান গেয়ে দর্শক মাতাতে চান। শিল্পী নাজু আখন্দ এসব কৃত্রিম পথে হাঁটেননি। তাঁর কণ্ঠ মিষ্টি ও সুরেলা, যেটি একজন শিল্পীর সবচেয়ে বড় সম্পদ। সুরের সব পর্দায় তাঁর কণ্ঠ চমৎকারভাবে ওঠানামা করেছে।

 এত সুন্দর একটি অনুষ্ঠানেও দর্শক হিসেবে কয়েকটি বিষয় আমাদের কাছে মোটেই গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। যেমন একজন দর্শকশ্রোতা ফোনে নিজেকে তাঁর পরিচিত বলে পরিচয় দিয়েছেন এবং একটি গানের অনুরোধ করেছেন, কিন্তু শিল্পী সেটি আমলে নেননি এবং তাঁর অনুরোধটিও রক্ষা করেননি। বিষয়টি দর্শক হিসেবে আমাদের কাছে ভালো লাগেনি। আত্মবিশ্বাসের পাশাপাশি শিল্পীর কাছে দর্শক বিনয়টিও আশা করে। দু-একটি গানের ফাঁকে ফাঁকে তিনি ‘হুই হুই’ শব্দ করেছেন। এটিও ভালো লাগেনি। এটি মনে হয় মঞ্চে মানায়, চ্যানেলে না। আর গানের ফাঁকে ফাঁকে কথোপকথনের সময় তিনি বারবার প্রযোজকের নাম ধরে অনাবশ্যক প্রশংসা করার চেষ্টা করেছেন, যেটি বেমানান মনে হয়েছে।