'হৃদয়ে রংধনু' আটকে আছে ১৮ মাস

হৃদয়ে রংধনু ছবির দৃশ্য
হৃদয়ে রংধনু ছবির দৃশ্য

প্রযোজক ও পরিচালক সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা ছবিটি দেখেন। এর ৯ মাস পর এ বছরের ২৯ আগস্ট ছবিটিতে পর্যটনশিল্পের হুমকিসহ আটটি জায়গায় সংশোধনী দিয়ে প্রযোজক ও পরিচালক বরাবর চিঠি দেয় সেন্সর বোর্ড।

এ ব্যাপারে ছবির পরিচালক পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘আটটি অভিযোগের মধ্যে দু-একটি অভিযোগসংক্রান্ত দৃশ্য বা বিষয় ছবিতেই নেই। বাকি অভিযোগগুলো সংশোধন করে ব্যাখ্যাসহ এ বছরের ৮ সেপ্টেম্বর পুনরায় সেন্সর বোর্ডে ছবিটি জমা দিই।’

এরপর ১০ অক্টোবর ছবিটির আবার প্রিভিউ হয়। কিন্তু এর ফলাফল এখনো জানা যায়নি। এ ব্যাপারে রাজিবুল হাসান বলেন, ‘দ্বিতীয়বার প্রিভিউ করার পরও ছাড়পত্রের কোনো চিঠি পাচ্ছি না। দ্বিতীয়বার প্রিভিউর মতামত পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা শুনেছি। ইতিমধ্যে আমি তথ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করে ছাড়পত্র দেওয়ার ব্যাপারে চিঠিও দিয়েছি। প্রায় তিন মাস হয়ে যাচ্ছে, কোনো খবর নেই।’

এদিকে দ্বিতীয় দফায় প্রিভিউ করার সময় সেন্সর বোর্ডের সদস্যদের উপস্থিতি নিয়ে অভিযোগ করেছেন এই পরিচালক। তিনি বলেন, ‘১০ অক্টোবর দ্বিতীয়বার প্রিভিউ করার সময় আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। মাত্র তিনজন সদস্য ছবিটি দেখেছেন। ছবি শেষে বাকি তিনজন এসে স্বাক্ষর করে বোর্ড মিটিং করেন। বিষয়টি সেন্সর বোর্ডের নিয়মে পড়ে না।’

এ ব্যাপারে দ্বিতীয় দফায় সেন্সরে উপস্থিত তিন সদস্যের একজন মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘পরিচালক বিষয়টির ভুল ব্যাখ্যা করছেন। ঘটনা হলো, সংশোধনী ঠিকঠাক হয়েছে কি না, তা দেখার জন্য সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান একটি কমিটি করে দিয়েছিলেন। কমিটির সদস্য হিসেবে আমরা ছবিটি দ্বিতীয়বার দেখেছি। মতামত বোর্ডকে জানিয়েছি। যেহেতু ছবিটি পর্যটনশিল্পের সঙ্গে খানিকটা সাংঘর্ষিক মনে হয়েছে সেন্সর বোর্ডের, তাই পুনরায় যাচাই-বাছাই করে নিতে সেন্সর বোর্ড সদস্যদের মতামত তথ্য মন্ত্রণালয় হয়তো পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে থাকতে পারে।’

তবে পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, তাদের কাছে এ ধরনের কোনো কাগজপত্র আসেনি। এ ব্যাপারে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা দীপংকর সাহা বলেন, ‘তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের কোনো চিঠি পাইনি। সেন্সরে জমা দেওয়ার আগে পর্যটন করপোরেশনে ছবিটি দেখেছিলাম। এটি পর্যটনশিল্পের সহায়ক হিসেবে ইতিবাচক নোট লিখে তথ্য মন্ত্রণালয়ে দিয়েছি।’

ছবিটির গল্পে পর্যটনশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত নয়, আরও বিকশিত হওয়ার তথ্য আছে বলে মনে করেন ছবির পরিচালক। তিনি বলেন, ‘দেশের ৫৪টি জেলায় আমরা ছবির শুটিং করেছি। কাজ শেষ হওয়ার পর প্রথম পর্যটন করপোরেশনকে ছবিটি দেখাই। তারা ছবিটি দেখে খুশি হয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়ে এই ছবির জন্য সরকারের সেন্সর ফি মওকুফ করতে সহযোগিতা করেছে।’

পরিচালক জানান, দেশি-বিদেশি অনেক অভিনয়শিল্পী এই ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাঁরা হলেন মিনা পেটকোভিচ (সার্বিয়া), শামস কাদির, মুহতাসিম স্বজন, খিং সাই মং মারমা প্রমুখ। ২০১৪ সালে ছবিটির শুটিং শুরু হয়ে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়েছে।