মালয়েশিয়ায় ভয়ের মধ্যে ছিলাম

>

২৩ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ায় ‘বাংলাদেশি নাইট’ নামের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী আশনা হাবিব ভাবনা। সেই অনুষ্ঠানের আয়োজক অনন্য মামুনকে আদম পাচারের অভিযোগে আটক করেছে মালয়েশিয়ার পুলিশ। সব ঝামেলা পেরিয়ে ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরেছেন ভাবনা। তাঁর কাছ থেকে সেই ঘটনা কিছুটা জানা গেল।

কখন জানতে পারলেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে আদম পাচারের অভিযোগে অনুষ্ঠানটির আয়োজক অনন্য মামুন আটক হয়েছেন?

আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি হয় ২৩ ডিসেম্বর রাতে। সেটা সফলভাবেই শেষ হয়। জায়গা না পেয়ে মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান দেখেছেন। পরের দিন দুপুরে শপিং করে এসে আমাদের অনুষ্ঠানের খাবারের পৃষ্ঠপোষকতাকারী প্রতিষ্ঠান রেস্তোরাঁ রসনা বিলাসের সামনে দাঁড়ানোর পর পরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাস ও অভিনয়শিল্পী আমান রেজার কাছ থেকে জানতে পারি এ ঘটনা। তখন শুনি, এই অনুষ্ঠানের আড়ালে আদম পাচার করেছেন অনুষ্ঠানটির আয়োজক অনন্য মামুন। এ কারণে মালয়েশিয়া পুলিশ তাঁকে আটক করেছে। শুনে তো আমি হতবাক! কারণ, যাওয়ার আগে বিন্দুমাত্র বুঝতে পারিনি আয়োজক এ ধরনের অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত।

ভাবনা
ভাবনা

এরপর কী করলেন?

জানার পরপরই তো ভয় পেয়ে যাই। ততক্ষণে বাংলাদেশেও খবরটি প্রচার হয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল মালয়েশিয়ার ওই শোতে অংশ নেওয়া শিল্পীদের ছবি দিয়ে খবর প্রচার শুরু করেছে। দেশ থেকে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব একের পর এক ফোন দিয়ে যাচ্ছেন। কী যে এক অবস্থা! বোঝাতে পারব না। যতক্ষণ মালয়েশিয়ায় ছিলাম, ততক্ষণ পর্যন্ত ভয়ের মধ্যে ছিলাম। যদিও আমাদের কাছে ওয়ার্ক পারমিটসহ সব বৈধ কাগজপত্র ছিল।

কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ভয় পাচ্ছিলেন কেন?

ভয় পাব না? আমাদের শোয়ের আড়ালেই তো এ ধরনের জঘন্য কাজ করা হয়েছে। যদি পুলিশ আমাদের শিল্পীদের শুধু জিজ্ঞাসাবাদের জন্যও ডাকত, কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রাখত, তাতেই তো শিল্পীদের মানসম্মান থাকত না। ভিনদেশের মাটিতে দেশের শিল্পীদের অসম্মান হতো।

আয়োজক অনন্য মামুনের এমন কাজ প্রসঙ্গে কিছু বলার আছে?

আমি ভিনদেশের একাধিক শোয়ে অংশ নিয়েছি। শো শেষে বাঙালি হিসেবে সব সময়ই নিজের মাথা উঁচু করে পারফর্ম করেছি। আর এই শো করতে গিয়ে নিজেকে চোর মনে হয়েছে। আয়োজক একটা ঘৃণিত কাজ করেছেন। আয়োজকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

শুনলাম, চলচ্চিত্রের জন্য গল্প লিখছেন?

লেখা হয়ে গেছে। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের জন্য এটি আমার লেখা দ্বিতীয় গল্প। প্রথমটির মতো এবারেরটিও অনিমেষ আইচ পরিচালনা করবেন। গল্পের নামটা আপাতত বলছি না। গল্পে তিন-চার বছরের ফুটফুটে সুন্দর একটি মেয়ে লাগবে। পাচ্ছি না। পেলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। এর বাইরে অন্য একটি নতুন কাজে হাত দিয়েছি।

কী কাজ?

উপন্যাস লিখছি। খুব সাহস করেই লিখতে শুরু করলাম। প্রায় দেড় শ পাতা লেখা হয়ে গেছে।
সাক্ষাৎকার: শফিক আল মামুন