নিজেদের ছোট ছোট কথা বললেন তাঁরা

অনিচ্ছা থাকলেও বাবার ইচ্ছায় সংগীতের সংস্পর্শে এসেছেন অনেকে। অন্তত দুজন শিল্পী সে কথা নিজের মুখে স্বীকার করেছেন। একজন ঘটমশিল্পী বিক্কু বিনায়করাম ও অন্যজন বেহালাশিল্পী মাইসোর মঞ্জুনাথ। একজন গত বৃহস্পতিবার রাতে উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের মঞ্চে বাজিয়েছেন, অন্যজনের বাজানোর কথা শুক্রবার রাতে। এ বছর দুজনই প্রথমবার এই উৎসবে বাজাতে এসেছেন।

গতকাল শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করতে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে একত্র হয়েছিলেন তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, বুধাদিত্য মুখার্জি, বিদুষী সুজাতা মহাপাত্র এবং বিনায়করামের ছেলে ও নাতি। উৎসবে এত এত দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতিতে যারপরনাই বিস্মিত তাঁরা। বাবা চেয়েছিলেন বিনায়করাম বাজাতে শিখলে সংসারে রোজগার বাড়বে। ঘটমসহ ঘরে তালা মেরে রাখতেন। শুধু খাওয়ার সময় খোলা হতো সেই তালা। এভাবে কাটে দুই বছর। বাজাতে বাজাতে একসময় পারদর্শী হয়ে ওঠেন তিনি।
শৈশবে বাবার কাছেই হাতেখড়ি মাইসোর মঞ্জুনাথের। তবে মোটেই বাবার কথা শুনতেন না তিনি। একবার বাবার সঙ্গে মঞ্চে বাজাতে উঠলে সবাইকে একটি করে মালা দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে দেওয়া হয়নি। এতে ভীষণ মন খারাপ হয়েছিল ছোট্ট মঞ্জুনাথের। সান্ত্বনা দিতে আয়োজকেরা বলেছিলেন, একলা বাজাতে এলে একসঙ্গে পাঁচটি মালা দেওয়া হবে। সেদিন বাড়ি ফিরে তিনি বাবাকে অনুরোধ করলেন তাঁকে যেন খুব ভালো করে বেহালাটা শেখানো হয়। তাঁদের থেকে পাঁচটি মালা আদায় করে নিয়েছিলেন মঞ্জুনাথ।
প্রথমবার বাংলাদেশে বাজাতে এসেছেন বুধাদিত্য মুখার্জি। বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর রয়েছে একধরনের যোগসূত্র। আর আজ নৃত্য করবেন বিদুষী সুজাতা মহাপাত্র, যিনি এ উৎসবের প্রথম আসরে এসেছিলেন। বললেন, নিজের বড় দল নেই বটে। কিন্তু একাই তিনি অনেকজন হয়ে নাচ করেন।
অজয় চক্রবর্তী বললেন, বহু তরুণ আসছেন এই উৎসবে। এটি একটি ভীষণ আনন্দের ব্যাপার। আর এ জন্যই এই উৎসব টিকে যাবে এই তরুণদের কারণেই। আসতে আসতে তৈরি হবে অভ্যাস, একসময় তৈরি হয়ে যাবে উচ্চাঙ্গসংগীতের কান।