সংগীতের প্রতি ভালোবাসা এই মানুষগুলোকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে

আবুল খায়ের
আবুল খায়ের

বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। অথচ এ উৎসবটি না হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। আমরা অর্থমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ যে তিনি জাতিকে এ উৎসবটি ফিরিয়ে দিতে ভূমিকা রেখেছেন। সংস্কৃতিবান্ধব এ সরকারের সময়ে যদি আমরা উৎসবটি হারাতাম, সেটা হতো দুঃখজনক। প্রধানমন্ত্রী সেটি হতে দেননি। সে জন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। সেই সঙ্গে আমি অর্থমন্ত্রী, সংস্কৃতিমন্ত্রী, আবাহনী লিমিটেডের সভাপতি, ক্লাবটির খেলোয়াড় ও সমর্থক এবং সংগীতপ্রেমী বাঙালির কাছে কৃতজ্ঞ। তাঁরাই জাতিকে এ উৎসব ফিরিয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে আমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছে কৃতজ্ঞ যে শুরু থেকে তারা এ উৎসবের সঙ্গে ছিল, হয়তো ভবিষ্যতে আবারও যুক্ত হবে।

আসলে সংস্কৃতির সবগুলো শাখা একত্র করতে পারলে মানুষ হয়ে উঠবে আরও মানবিক। সংগীত হচ্ছে সংস্কৃতির সব থেকে শক্তিশালী অংশ। মানুষের অন্তর শুদ্ধ করতে সংগীত সরাসরি ভূমিকা রাখে। সে জন্য আমরা সংগীতকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এ উৎসবটি করতে উদ্যোগী হয়েছি। শিল্পী গড়ে তোলার লক্ষ্যে সংগীতালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। আমি নিশ্চিত আগামী ১০ বছরের মধ্যে এ সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অন্তত ২০ জন বিশ্বমানের উচ্চাঙ্গসংগীত শিল্পী ও যন্ত্রশিল্পী আত্মপ্রকাশ করবে। কেননা বিশ্বের স্বনামখ্যাত সব পণ্ডিত এ প্রতিষ্ঠানে সরাসরি শেখাচ্ছেন। এ কাজটি করতে পারাও আমাদের জন্য একটি গর্বের ব্যাপার। এ ছাড়া শিল্পকলা ও নন্দনতত্বের প্রায় সব শাখা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সেগুলোও বাঙালির মনন তৈরি, বিকাশ ও চর্চায় অনবদ্য ভূমিকা রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

আমাদের লক্ষ্য, মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করা। যাঁরা দেশটাকে চালাচ্ছেন, তাঁদের আরও মানবিক করে তোলা। মানবিক মনের একজন মানুষ যখন নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল ও প্রতিষ্ঠিত হবেন, তাঁর দ্বারা অন্য মানুষ ও পুরো মানবজাতি উপকৃত হবে। এ উৎসবটিকে ঢাকায় সীমাবদ্ধ না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে। পরিসরগতভাবে একে শিগগির ঢাকার বাইরে নেওয়া সম্ভব নয়। তবে উচ্চাঙ্গসংগীতের এ ধরনের আসর ছোট পরিসরে আমরা সারা দেশে করব। দুই মাস পর পর প্রতিটি জেলায় আমরা উচ্চাঙ্গসংগীতের ছোট আসর করব, যাতে মানুষ উৎসবের রস আস্বাদনের জন্য প্রস্তুত হতে পারেন। তাঁদের শ্রোতা-মন ও কান তৈরি হয় এবং শিল্পীরাও অনুপ্রাণিত হন।

আমাদের অভিলাষ সফল করার জন্য আমি বাংলাদেশের সবগুলো বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই, বিশেষ করে পুলিশ, ডিবি, ডিজিএফআই, এসবি, র‍্যাবকে। ধন্যবাদ জানাই সিটি করপোরেশন, ভারতীয় হাইকমিশন, ব্র্যাক ব্যাংক, চ্যানেল আই এবং ব্লুজ কমিউনিকেশনসকে। সর্বোপরি বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোকে। কেননা তারা এ উৎসবটিকে নিজের করে নিয়েছে। এবং সব থেকে বড় ধন্যবাদটি দিতে চাই সংগীতপ্রেমী বাঙালিকে। সংগীতের প্রতি ভালোবাসা এই মানুষগুলোকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে, দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।