তালাকের সালিসি বৈঠকে একা অপু

অপু বিশ্বাস
অপু বিশ্বাস

তালাকের সালিসি বৈঠকে একাই গেলেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। শাকিব খানের পাঠানো তালাক নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার সকাল ১০টায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল ৩ মহাখালী কার্যালয়ে তাঁদের দুজনকেই থাকতে বলা হয়। কিন্তু শুটিংয়ে ব্যস্ততার কারণে মাসখানেকেরও বেশি সময় ধরে দেশের বাইরে থাকায় বৈঠকে দেখা যায়নি শাকিবকে।

অপু বিশ্বাসের উপস্থিতির বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন ডিএনসিসি অঞ্চল ৩-এর নির্বাহী কর্মকর্তা হেমায়েত হোসেন। তিনি বলেন, ‘অপু তাঁর মামা স্বপন কুমারকে সঙ্গে নিয়ে বেলা ১১টার কিছুক্ষণ পর আমাদের অফিসে আসেন। ঘণ্টাখানেকের মতো অবস্থান করে তাঁর মতামত জানান।’

বৈঠকে অপু কী বলেছেন? হেমায়েত হোসেন বলেন, ‘অপু তাঁর স্বামী ও সন্তান নিয়ে সংসার করার ইচ্ছার কথা আমাদের জানিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, শুধু সংসার করার জন্যই তিনি ধর্মান্তরিত হয়েছেন। তাঁর স্বামীর প্রতি এখন আর কোনো অভিযোগ নেই তাঁর।’

শাকিব খান এই মুহূর্তে ব্যাংককে পরিচালক উত্তম আকাশের ‘চিটাগাইঙ্গা পোয়া নোয়াখাইল্যা মাইয়্যা’ ছবির শুটিংয়ে ব্যস্ত। এর আগে তিনি একই পরিচালকের ‘আমি নেতা হব’ ছবির কাজ করেছেন। তারও আগে লম্বা সময় ধরে শাকিব ছিলেন ভারতের হায়দরাবাদে ‘নোলক’ ছবির শুটিংয়ে। সেখান থেকে সরাসরি তাঁকে চলে যেতে হয় ব্যাংককে। ব্যাংককে দুটি ছবির গানের শুটিং শেষে আরেকটি নতুন ছবির কাজে তাঁর অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা।

গতকাল রোববার রাতে শাকিবের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়। শাকিব বললেন, ‘এ মুহূর্তে দম নেওয়ার সময় পাচ্ছি না। গত বছর লম্বা সময় ধরে আমি সেভাবে কাজ করতে পারিনি। এতে প্রযোজক ও পরিচালকেরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সব ধরনের ঝামেলা কাটিয়ে গত বছরের শেষ দিকে আবার সিনেমার কাজে মনোযোগী হতে পেরেছি। অনেক কাজ জমে আছে। আর যেন প্রযোজক-পরিচালকেরা আমার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত না হন, তাই মন দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’

আর বিচ্ছেদের বিষয় নিয়ে শাকিব বললেন, ‘এ বিষয়ে যা বলার আইনজীবীর মাধ্যমে আগেই বলে দিয়েছি। নতুন করে বলার কিছুই নাই। আমার মাথায় কাজ ছাড়া এখন আর কিছুই নাই।’

শাকিবের উপস্থিত না থাকার বিষয়টি নিয়ে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। বৈঠকে আমাদের উদ্দেশ্য দুজনকে বোঝানো। কিন্তু যদি তাঁদের কেউ পূর্বের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন, সে ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হবে না। আমরা আরও দুটি বৈঠকের সময় দিয়েছি। এর মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। তিনটি বৈঠকে যদি কোনো সমঝোতা না হয়, তাহলে তালাক কার্যকর হয়ে যাবে।’

প্রথম আলোকে অপু বিশ্বাসের দেওয়া তথ্যমতে, ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল শাকিব খানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের ব্যাপারটি কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে রেখে তাঁরা দুজন সিনেমার শুটিং অব্যাহত রাখেন। আট বছর নয় মাস আগের সেই বিয়ের খবর গত বছরের ১০ এপ্রিল একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সশরীরে উপস্থিত হয়ে প্রকাশ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিল ছয় মাস বয়সী ছেলে আব্রাম। সেদিনই অপু বলেছিলেন, ‘আমি শাকিবের স্ত্রী, আমাদের ছেলে আছে।’

বিয়ের খবর জনসমক্ষে আসার পর দুজনের সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হয়। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস নিজেদের মধ্যে মুখ-দেখাদেখি বন্ধ করে দেন। শুধু ছেলে আব্রামের কারণে মাঝেমধ্যে দেখা হলেও কথা হয় না দুজনের। সেই টানাপোড়েন চূড়ান্ত পরিণতির দিকে যায়, যখন আইনজীবীর মাধ্যমে শাকিব খান তালাকের নোটিশ পাঠান অপুর কাছে।

শাকিবের আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় শাকিব খান তাঁর চেম্বারে যান। তিনি অপুকে তালাক দেওয়ার ব্যাপারে তাঁর কাছে আইনগত সহায়তা চান। এরপর তিনি শাকিব খানের পক্ষে ডিনএসিসির মেয়র কার্যালয়, অপু বিশ্বাসের ঢাকার নিকেতনের বাসা এবং বগুড়ার ঠিকানায় এই তালাকের নোটিশ পাঠান।