নাচের জন্য স্কুল ভাঙচুর!

‘পদ্মাবত’ ছবির ‘ঘুমর’ গানের দৃশ্যে দীপিকা পাড়ুকোন
‘পদ্মাবত’ ছবির ‘ঘুমর’ গানের দৃশ্যে দীপিকা পাড়ুকোন

অনেক চড়াই-উতরাই পার করে শেষ পর্যন্ত সঞ্জয় লীলা বানসালির ছবি চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়েছে। তবে, মুক্তির জন্য বানসালিকে ছবির নামই পাল্টে ফেলতে হয়েছে। দীপিকা পাড়ুকোন অভিনীত ‘পদ্মাবতী’ এখন হয়ে গেছে ‘পদ্মাবত’। তবু ঝামেলা শেষ হচ্ছে না। সম্প্রতি ভারতের মধ্যপ্রদেশের একটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই ছবির ‘ঘুমর’ গানের সঙ্গে নাচ পরিবেশন করে। খবর পেয়ে রাজস্থানের করনি সেনার সদস্যরা স্কুলে হামলা করেন।

ভারতের মধ্যপ্রদেশের রতলম শহরের সেন্ট পলস কনভেন্ট স্কুলে গত রোববার ছিল বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে স্কুলের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ‘পদ্মাবত’ ছবির বিতর্কিত গান ‘ঘুমর’-এর সঙ্গে নাচ পরিবেশন করে। এই খবর করনি সেনা সদস্যদের কানে পৌঁছালে তাঁরা স্কুলে এসে ভাঙচুর করেন। টাইমস অব ইন্ডিয়া পত্রিকায় প্রকাশিত কয়েকটি ছবিতে দেখা যায় করনি সেনার সদস্যরা স্কুলের চেয়ার ও সাউন্ড বক্স ভাঙচুর করেন। এমন ভাঙচুর দেখে স্কুলের শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

‘ঘুমর’ গানের সঙ্গে নাচের সময় স্কুলে ভাঙচুর করেন করনি সেনা সদস্যরা। ছবি: টাইমস অব ইন্ডিয়ার সৌজন্যে
‘ঘুমর’ গানের সঙ্গে নাচের সময় স্কুলে ভাঙচুর করেন করনি সেনা সদস্যরা। ছবি: টাইমস অব ইন্ডিয়ার সৌজন্যে

‘পদ্মাবত’ ছবির শুটিং করতে গিয়ে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে নির্মাতাকে। সঞ্জয় লীলা বানসালির এই ছবিটি শুরু থেকেই ভালোভাবে নিতে পারছেন না রাজপুত করনি সেনা সদস্যরা। প্রথমে গুজব রটে, এই সিনেমায় নাকি দিল্লির সুলতান আলাউদ্দিন খিলজির সঙ্গে রানি পদ্মাবতীর একটি স্বপ্নের দৃশ্য আছে। সেই দৃশ্যে দুজনকে শোয়ার ঘরে দেখা গেছে। এ খবর ছড়ানোমাত্রই উগ্রবাদীরা হামলা করে ‘পদ্মাবত’ ছবির সেটে। এরপর কিছুদিনের জন্য ছবির শুটিং স্থগিত ঘোষণা করা হয়। জয়পুরে তাঁদের শুটিং করতে না দেওয়ায় কোলহাপুরে শুটিং শুরু হয়। সেখানেও ঘটে বিপত্তি। মাঝে কিছুদিন উগ্রবাদীরা চুপ ছিল। কিন্তু গত সেপ্টেম্বরে ‘পদ্মাবতী’র পোস্টার প্রকাশিত হওয়ার পর ছবিটি ঘিরে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়। রাজস্থানের জয়পুরের রাজ মন্দিরের সামনে পোড়ানো হয় এই ছবির পোস্টার। এই উত্তেজনা ছড়িয়ে যেতে থাকে সারা ভারতে। প্রথম গান ‘ঘুমর’ প্রকাশের পরও বানসালি ও দিপীকাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, এখানে রানি পদ্মিনীকে অপমান করা হয়েছে।

ইতিহাসবিদ ও রাজপরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত সেন্সর বোর্ডের প্রিভিউ কমিটি কিছুদিন আগে ‘পদ্মাবত’কে কিছু দৃশ্য পরিবর্তন করে মুক্তির ছাড়পত্র দিয়েছে। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল গত বছরের ১ ডিসেম্বর। আর নতুন মুক্তির তারিখ ২৫ জানুয়ারি। কিন্তু চিতরগড়ের ক্ষত্রিয় সমাজের ১০০ জন নারী ঘোষণা দিয়েছেন, ‘পদ্মাবত’ মুক্তি পেলে তাঁরা রানি পদ্মাবতীর মতো সবাই একসঙ্গে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করবেন। টাইমস অব ইন্ডিয়া