দুই ভাগে হচ্ছে প্রেক্ষাগৃহ আধুনিকায়ন প্রকল্প

দেশজুড়ে ৬৪টি জেলায় সিনেমা হলে আধুনিকায়ন করার প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল বেশ কয়েক মাস আগে। তথ্য মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা (বিএফডিসি) থেকে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করে পাঠানো হয়। জানা গেছে, প্রকল্পটি দুই ভাগে বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিএফডিসির কারিগরি শাখার একটি সূত্র বলছে, গত নভেম্বর মাসে তথ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সভায় দুই ভাগে কাজটি হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এক ভাগে থাকবে পাইরেসি বন্ধের জন্য কেন্দ্রীয় সার্ভারের মাধ্যমে প্রেক্ষাগৃহে ডিজিটাল প্রজেকশনের মাধ্যমে ছবি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা। অন্য ভাগে থাকবে সিনেমা হলের অবকাঠামো উন্নয়ন। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে দুটি প্রকল্প প্রস্তাব করে পাঠাতে বলা হয়েছে। খুব শিগগির তারা দুটি আলাদা প্রকল্প করে মন্ত্রণালয়ে জমা দেবে।

সারা দেশে সিনেমা হল আধুনিকায়ন প্রকল্পে ছিল প্রেক্ষাগৃহের অবকাঠামো উন্নয়ন, আধুনিক প্রদর্শন যন্ত্র বসানো, কেন্দ্রীয় সার্ভারের মাধ্যমে প্রেক্ষাগৃহে ছবি প্রদর্শনী, ই-টিকিটিং ইত্যাদি। এর জন্য ২৬২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছিল। তবে নতুন প্রকল্পে প্রেক্ষাগৃহের অবকাঠামো উন্নয়নের দিকটি বাদ যেতে পারে বলে জানা যায়। এতে বাজেটও কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। সে ক্ষেত্রে প্রকল্প দুটি হতে পারে: এক. কেন্দ্রীয় সার্ভার বসানো, দুই. সিনেমা হলে আধুনিক প্রদর্শন যন্ত্র বসানো।

দুটি প্রকল্প হওয়ার কারণ নিয়ে বিএফডিসির কারিগরি বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রকল্পটিতে মূলত দুটি বিষয়ই ছিল। একটি সরাসরি বিএফডিসি করতে পারছে। অর্থাৎ পাইরেসি বন্ধে কেন্দ্রীয় সার্ভারের মাধ্যমে প্রেক্ষাগৃহে ছবি প্রদর্শনীর প্রকল্পটি। আর প্রেক্ষাগৃহের আধুনিক প্রজেকশন যন্ত্র বসানোর বিষয়টি আসলে সিনেমা হলমালিকদের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাঁদের সঙ্গে এ বিষয়ে কী চুক্তি হবে, এটি গুরুত্বপূর্ণ। তাই দুটি আলাদা প্রকল্প প্রস্তাব করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

দেশজুড়ে প্রেক্ষাগৃহগুলোর ওপর একটি জরিপ করে গণযোগাযোগ অধিদপ্তর। তাদের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সারা দেশের সিনেমা হলগুলো আধুনিকায়ন করবে বিএফডিসি। মধুমিতা হলের মালিক ও চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, এটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু এই প্রকল্পের সঙ্গে প্রদর্শক সমিতিকে তারা রাখেনি। এর সঙ্গে টেকনিক্যাল ব্যাপার জড়িত। হলমালিকেরা এর সঙ্গে যুক্ত না হলে কীভাবে হবে? মেশিন লাগবে কি না, এগুলো তো হলমালিকেরা বুঝবেন।

প্রকল্পটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক সভাগুলোতে হলমালিকদের নেতৃস্থানীয় লোকজনের অংশগ্রহণ ছিল। তাঁদের মতামত নেওয়া হয়েছে। তবে ব্যাপকভাবে হলমালিকদের সঙ্গে বসার মতো সময় এখনো আসেনি। সময় হলে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হবে।

সারা দেশে ৬৪টি জেলায় আধুনিক প্রজেকশন সিস্টেম বসানো হবে। তবে কোন কোন সিনেমা হলে বা এক জেলার কয়টি সিনেমা হলে বসানো হবে, তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা সিদ্ধান্ত হওয়ার পর সিনেমা হলমালিকদের আহ্বান করা হবে। এ মাসের মধ্যেই মন্ত্রণালয়ে নতুন করে প্রকল্প প্রস্তাব জমা দেবে এফডিসি কর্তৃপক্ষ।