'আমাদের সম্পর্ক ছিল অম্লমধুর'

♦ আজ প্রয়াত নায়ক রাজ্জাকের ৭৭ তম জন্মদিন।
রাজ্জাককে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন আরেক অভিনেতা ফারুক।
রাজ্জাক ও ফারুকের মধ্যে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।
ফারুক বললেন, রাজ্জাক আছেন, থাকবেন সবার স্মৃতিতে।

রাজ্জাক ও ফারুক।
রাজ্জাক ও ফারুক।

আজ প্রয়াত নায়ক রাজ্জাকের ৭৭তম জন্মদিন। গত বছরের ২১ আগস্টে প্রয়াত এই অভিনেতাকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন আরেক অভিনেতা ফারুক। বললেন নানা ধরনের ঘটনার কথাও। লিখেছেন হাবিবুল্লাহ সিদ্দিক

‘আমি আর রাজ্জাক ভাই খুব কাছাকাছি সময়ে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেছিলাম। স্বাভাবিকভাবে সবার ধারণা, আমাদের মধ্যে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সেটা ছাপিয়ে আমাদের মধ্যে একটা দারুণ আন্তরিকতাপূর্ণ ও ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছিল। আমাদের সম্পর্ক ছিল অম্লমধুর।’ প্রয়াত ‘নায়করাজ’ রাজ্জাকের জন্মদিনের আগের দিন গতকাল এভাবেই বলছিলেন চলচ্চিত্রের ‘মিয়াভাই’ অভিনেতা ফারুক।

ফারুক বলেন, ‘রাজ্জাক ভাইয়ের সঙ্গে প্রথম পরিচয় এফডিসিতে। তখন এফডিসিতে যেতে আমি খুব ভয় পেতাম। রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। আমার এক বন্ধু চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছিল। ছবির নাম আর মনে নেই। রাজ্জাক ভাই ওই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু ছবিটি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। তখন আমিসহ কয়েকজন গিয়েছিলাম ঝামেলা মেটাতে। ওই সময় রাজ্জাক ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয়। পরে তো একসঙ্গে ছবিও করেছি। নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত এরাও মানুষ ছবিতে বাবার দুই ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম আমরা দুজন। রাজ্জাক ভাই বড় আর আমি ছোট। তখন থেকেই ওনার সঙ্গে সম্পর্ক গাঢ় হয়।’

ফারুক জানান, স্বাধীনতার পরপরই পুরোদস্তুর অভিনয় শুরু করেন তিনি। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন নায়করাজ। তখন অনেক বিষয় নিয়ে দুজনের অভিমান হতো, ঝগড়া হতো। কিন্তু সেটা অল্প সময়ের জন্য। পরের দিনই আবার দুজন বুকে বুক মিলিয়ে সবকিছু সমাধান করেছেন।

ফারুক বলেন, ‘এমনও হয়েছে রাজ্জাক ভাই আমার সঙ্গে রাগ করে বাড়ি চলে গিয়েছেন। আমি পরের দিন ব্যান্ড পার্টি নিয়ে তাঁর গুলশানের বাড়িতে গিয়েছি। তিনি ব্যান্ড পার্টির আওয়াজ শুনে বের হয়ে এসে বুকে টেনে নিয়েছেন।’

কথায় কথায় এ রকম অসংখ্য ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন ফারুক। বলেছেন রাজ্জাক আর তাঁর সম্পর্কের গল্প। একজন অভিনেতা থেকে তাঁর নায়করাজ হয়ে ওঠার গল্প। তিনি বলেন, ‘তাঁর অনেক জন্মদিনেই আমি গিয়েছি। মজা করেছি। একসঙ্গে ছবিও তুলেছি। পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করেছি।’ এই তো রাজ্জাক নামের আগে ‘প্রয়াত’ লেখার এক-দুই বছর আগের জন্মদিনেও উপস্থিত ছিলেন তিনি।

আজও রাজ্জাকের জন্মদিন। তিনি নেই। ফারুক বললেন,  তিনি আছেন, থাকবেন সবার স্মৃতিতে।