কত্থকের ছন্দময় সন্ধ্যা

• মাত্র ছয় মাস শিখে ওরা কত্থকে ফুল ফোটাল।
• শিক্ষার্থীদের চমৎকার নৃত্যশৈলীতে মুগ্ধ হন মিলনায়তনভর্তি দর্শকেরা।
• আসাদুজ্জামান নূর বলেন, সংস্কৃতির বন্ধনই মানুষের বিভেদ ঘোচাতে পারে।

জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের কত্থক নৃত্য শিক্ষার্থীদের দলীয় পরিবেশনা l ছবি: প্রথম আলো
জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের কত্থক নৃত্য শিক্ষার্থীদের দলীয় পরিবেশনা l ছবি: প্রথম আলো

কী তাক লাগানো ব্যাপার! মাত্র ছয় মাস শিখে ওরা কত্থকে ফুল ফোটাল। নেচে মাতিয়ে দিল দর্শকদের। ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের কত্থক নৃত্যের শিক্ষার্থীরা গতকাল সোমবার জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে পরিবেশনায় অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের চমৎকার নৃত্যশৈলীতে মুগ্ধ হন মিলনায়তনভর্তি দর্শকেরা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিল তাদের শিক্ষক মুনমুন আহমেদের একক পরিবেশনাও।

গতকালের চমৎকার এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। স্বাগত বক্তব্য দেন ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের কত্থকের শিক্ষক মুনমুন আহমেদ।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, সংস্কৃতির বন্ধনই মানুষের বিভেদ ঘোচাতে পারে। সংস্কৃতির ভিন্নতার মধ্যেই ঐক্য গড়ে ওঠে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তরুণদের বিপথগামিতা থেকে রক্ষা করতে সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট করতে হবে।

সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সংস্কৃতি প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে বলে মন্তব্য করেন ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। কুসংস্কারকে সংস্কৃতির শক্তিতে পরাজিত করা যায়। ১৯৭১ সালে সংস্কৃতি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন এ দেশের মানুষেরা। সংস্কৃতি সেখানে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।

কত্থক নৃত্য সন্ধ্যাটি ছিল পরীক্ষার-এমনটাই মন্তব্য গুরু মুনমুন আহমেদের। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ছয় মাসের প্রশিক্ষণে তারা শিখেছে। শেখার জন্য ছয় মাস খুব কম সময়।

আলোচনা পর্ব শেষে শুরু হয় কত্থক পরিবেশনা। শুরুতেই মুনমুন আহমেদের পরিচালনায় ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কত্থকের শিক্ষার্থীরা পরিবেশনায় অংশ নেয়। শুরুতেই তারা পরিবেশন করে ‘গুণবন্দনা’। এরপর তিন তালে টুকরা, পারান্থ, তেহাই, লারি ও উঠান। এরপর ছিল মুনমুন আহমেদের একক পরিবেশনা। তিনি পরিবেশন করেন তিন তালে ঠুমরি। এরপর তিনি গতের আশ্রয়ে নৃত্যের তালে নাও, ময়ূরের ছন্দ তুলে ধরেন। সবশেষে তিনি ‘মোরে গাগারিয়া কাহে সাতায়ে’ গানের সঙ্গে রাধা-কৃষ্ণের মান-অভিমানের গল্প বর্ণনা করেন।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশনায় অংশ নেয় শুভার্থী দে, মালিহা তাবাসসুম, তানশা আরোরা, আঁখি নূর বিনতে আলী, জেসিয়া তাহজিদা, অদিতি শ্রী, রনবীর সাহা, আসিমা কামাল, মাসুম রেজা, প্রাজ্ঞন ইয়েনিগালা, শ্রিবালা আলম, চন্দ্র রোজারিও, দ্যোতনা ভট্টাচার্য, অনামিকা বিশ্বাস, ফারিবা সিনা, তানিশা তাসমিম, জামিল হোসেন, জাকোয়ান সালোয়া, প্রিয়তা সরকার, শ্রেয়া হালদার, নার্গিস সুলতানা, নীলাদ্রি পাল ও পৃথ্বী মেহজাবীন। অনুষ্ঠানে তাদের প্রত্যেককে প্রশিক্ষণের স্বীকৃতি হিসেবে সনদ দেওয়া হয়।