দেখা গেল জামদানির নকশা

ল্যাকমে ফ্যাশন উইক সামার রিসোর্টের তৃতীয় দিনে করন জোহর ও সোনাক্ষী সিনহা যখন শো–স্টপার। ফাল্গুনী ও শেইন পিককের ডিজাইনে। ছবি: সংগৃহীত
ল্যাকমে ফ্যাশন উইক সামার রিসোর্টের তৃতীয় দিনে করন জোহর ও সোনাক্ষী সিনহা যখন শো–স্টপার। ফাল্গুনী ও শেইন পিককের ডিজাইনে। ছবি: সংগৃহীত
>• নামীদামি ব্র্যান্ডগুলো তাদের নতুন সংগ্রহ তুলে ধরছিল একেকটা ফ্যাশন শোতে
• চুনরি, বাটিক, ছাপার সঙ্গে তুলে ধরেন বাংলাদেশের জামদানির নকশা।
• ভারী না হওয়ার কারণে বিয়ের কনে আরাম পাবেন এই পোশাক পরে

তৃতীয় দিন। আগেই জানা হয়েছে, খ্যাতনামা ফ্যাশন ডিজাইনারদের অংশগ্রহণ থাকবে। ভারতের মুম্বাইতে গতকাল শুক্রবার গরমের ফ্যাশনধারা নিয়ে আয়োজিত ল্যাকমে ফ্যাশন উইক সামার রিসোর্টের তৃতীয় দিনে তাঁদের কাজের ঝলকই দেখা গেল বেশি। গরমে টেকসই ফ্যাশনের পাশাপাশি অন্যান্য স্টাইলও যে চলবে, সেটা ভালোভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছেন ডিজাইনাররা। ছেলে ও মেয়ে-উভয়ের জন্যই ছিল ফ্যাশনের নানা আয়োজন। হালকা রঙের পাশাপাশি ডিজাইনারদের তৈরি উজ্জ্বল রঙের পোশাক নজর কাড়ে সবার। টাই-ডাই, ছাপা নকশা, হাতের কাজ মিলিয়ে কাল ছিল পাঁচমিশালি ফ্যাশনের দিন।

সকাল থেকেই নামীদামি ব্র্যান্ডগুলো তাদের নতুন সংগ্রহ তুলে ধরছিল একেকটা ফ্যাশন শোতে। শুরু হলো ডিজাইনার আকশাত বানসালের পোশাক দিয়ে। প্লাস্টিক বর্জ্যের নিচে তলিয়ে যাওয়ার আগেই সমুদ্রকে বাঁচানো উচিত-এই ছিল তাঁর পোশাক-ভাবনা। প্লাস্টিকের পুনরাবর্তন করে তৈরি কাপড়ের পোশাক দেখান তিনি।
এরপর ডিজাইনার আনাম, সুমিরান কবির শারমা, শ্রেয়া ওজা, আমহ বাই জেডের ডিজাইনার মনিকা ও কারিশমা, রাহুল মঙ্গল ও শিখা মঙ্গল, গৌরাঙ্গ শাহ, খানিজো ব্র্যান্ড, কারিশমা শাহানি খান, শ্বেতা কাপুর, শেইন ও ফাল্গুনি পিকক, তরুণ তাহিলিয়ানি মূল মঞ্চ রানওয়ে ও সিক্স ডিগ্রি স্টুডিওতে পোশাকের চমক দেখান। প্রতিটি শো গুরুত্বপূর্ণ ছিল ডিজাইনারদের নিজ নিজ প্রতিভায়। অভিনেত্রী কালকি কোচিন মঞ্চে স্নিগ্ধতা ছড়ান অফ শোল্ডার টপ ও স্কার্টে। এ ছাড়া দিনের বিভিন্ন আয়োজনে শো স্টপার হয়ে আসেন অভিনেত্রী প্রিয়াংকা বোস, সাগরিকা ঘাটগে, হিনা খান, পত্রলেখা পাল, নিমরাত কাউর ও সুরভীন চাওলা।
তুমুল করতালি দিয়ে শেষ হয় ডিজাইনার গৌরাঙ্গ শাহর শো। পুরোনো দিনের হিন্দি গানের সঙ্গে আবার কখনো কত্থক নাচের সঙ্গে মডেলরা সাদা-নীল রঙের আনারকলি কামিজ, লেহেঙ্গা ও শাড়ি পরে মঞ্চে হাঁটেন। ভারতের সব ধরনের নকশা তিনি তুলে ধরেন পোশাকে। চুনরি, বাটিক, ছাপার সঙ্গে তুলে ধরেন বাংলাদেশের জামদানির নকশা। বললেন, ‘১৮ বছর ধরে কাজ করছি জামদানির নকশা নিয়ে। জামদানির নকশা সহজেই বানাতে পারি। নকশা বোনার সময় পরিবারের লোকজন একসঙ্গে বসে কাজ করেন। তাই মনের কথাগুলো যেন বোনার সময় নকশা হয়েই পোশাকে ফুটে ওঠে।’
শেইন ও ফাল্গুনি পিকক প্রথমবারের মতো ছেলেদের পোশাক তুলে ধরেছিলেন। সত্তর দশকের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন এখন আবার পুনরায় দেখা যাচ্ছে। সেটার ছাপ দেখা গেল তাঁদের নকশায়। চমক ছিল এই শোর শেষে। কারণ, শো স্টপার ছিলেন বলিউডের পরিচালক করণ জোহর আর অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহা।
রাতে জমকালো উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় তৃতীয় দিনের আয়োজন। তরুণ তাহিলিয়ানির শো বলে কথা। শো স্টপার ছিলেন কৃতি শ্যানন। ‘আ নিউ ভয়েস অব ট্র্যাডিশন’ শিরোনামে তরুণের বানানো স্বপ্নিল পোশাক পরে মঞ্চে হাঁটেন তিনি। শোর আগেই তরুণ তাহিলিয়ানি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এগুলো সান্ধ্য পোশাক ও কনেদের জন্য আদর্শ। ভারী না হওয়ার কারণে বিয়ের কনে আরাম পাবেন এই পোশাক পরে।’

গরমের কাটছাঁট
তৃতীয় দিনের ফ্যাশন শোগুলো থেকে চলতি ধারার সারমর্ম পাওয়া গেল। গরমের আগামী কয়েক মাস ফ্যাশনে খেল দেখাবে জ্যাকেট, গাউন, লম্বা, মাঝারি ও ছোট পোশাক। থাকবে জাম্পস্যুট, প্যান্ট, স্কার্ট। এসবের মধ্যেই ঘুরেফিরে আসবে নানা রকম কাট। লম্বা পোশাক যেমন শারীরিক কাঠামো অনুযায়ী আঁটসাঁট থাকবে, আবার ফ্লোয়ি, এ লাইন, ট্যুলে কাটও দেখা যাবে। অসমান (আনইভেন) কাটও থাকবে এবারের গ্রীষ্ম ফ্যাশনে। ইউনিলিভারের ব্র্যান্ড এবং আইএমজি রিলায়েন্স আয়োজিত এই ফ্যাশন সপ্তাহের প্রথম দিনে জ্যাকেটের প্রাধান্যই দেখা গেল। জ্যাকেটের হাতায় ব্যাটউইং কাট, ফ্রিল, কিমোনো কাট দেখা যাচ্ছে আর হাতাকাটাও আছে। আয়োজন শেষ হবে কাল রোববার।