আন্দোলনকারীরা নতুন করে ভাবছেন

নুসরাত ফারিয়া ও জিৎ
নুসরাত ফারিয়া ও জিৎ
>

• প্রযোজকেরা কলকাতার ছবি আমদানির দিকে ঝুঁকছে।
• যৌথ প্রযোজনার মতোই ছবির বিনিয়োগ দুই দেশের।
• কিন্তু সেই ছবি বাংলাদেশে আসছে ভারতীয় বাংলা ছবি হিসেবে।

‘আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।’—বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি অভিনেতা মিশা সওদাগর যৌথ প্রযোজনার নতুন নীতিমালা না মেনে প্রযোজকদের কলকাতার ছবি আমদানির দিকে ঝোঁকার প্রবণতা নিয়ে এই মন্তব্য করলেন। অথচ এই সংগঠনের নেতা ও সদস্যরাই গত বছর যৌথ প্রযোজনার পুরোনো নীতিমালা বদলে তা কঠোর করার আন্দোলনে নেমেছিলেন।

শুধু শিল্পীদের এই সংগঠনটিই নয়, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট আরও কিছু সংগঠন ও ব্যক্তি এখন নতুন নীতিমালার কঠোরতা ও এর ফলে প্রযোজকদের ভারতীয় ছবি আমদানির দিকে ঝোঁকার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কারণ যৌথ প্রযোজনার মতো করেই একটি ছবির পেছনে লগ্নি করছে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রযোজকেরা। কিন্তু নীতিমালা না মানার কারণে ছবি মুক্তির সময় তা হয়ে যাচ্ছে ভারতের কলকাতার ছবি। আর বাংলাদেশে তা আসছে বিনিময় চুক্তিতে আমদানি হয়ে। এর ফলে বাংলাদেশের শিল্পী, কুশলীরা আগে যা-ও কলকাতার ছবিতে সমানুপাতিক হারে কাজের সুযোগ পেতেন, এখন সেই সুযোগও থাকছে না।

যৌথ প্রযোজনার মতোই ছবির বিনিয়োগ দুই দেশের। কিন্তু সেই ছবি বাংলাদেশে আসছে ভারতীয় বাংলা ছবি হিসেবে। একই দিনে কিংবা এক সপ্তাহ আগে-পিছে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তা মুক্তি পাচ্ছে।

কিছুদিন আগে বিনিময় চুক্তিতে বাংলাদেশে মুক্তি পায় কলকাতায় প্রযোজিত ছবির ইয়েতি অভিযান, ‘ককপিট’ ও ‘ইন্সপেক্টর নটি কে’। কিন্তু এসব ছবির কাজ শুরু হয় বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায়। চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট অনেকে বলছেন, কাগজে-কলমে দুই দেশের প্রযোজকদের মধ্যে যৌথভাবেই ছবি নির্মাণের চুক্তি হচ্ছে। কিন্তু কাজ শেষ হলে বদলে যাচ্ছে দুই দেশে ছবি মুক্তির রীতি। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ও মধুমিতা মুভিজের কর্ণধার ইফতেখারউদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘এই মুহূর্তে হল বাঁচাতে, চলচ্চিত্র বাঁচাতে যেকোনো কঠিন শর্ত সহজ করে দেওয়া দরকার। যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা নিয়ে নতুন করে আমাদের একটু ভাবা উচিত।’

বিনিয়োগের দিক থেকে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ অংশগ্রহণ আর মুক্তির সময় কলকাতার একক প্রযোজনার ছবি হিসেবে প্রচার হওয়ায় এই দেশের শিল্পী, কলাকুশলীরা কি বঞ্চিত হচ্ছেন না? এমন প্রশ্নে মিশা সওদাগর বলেন, ‘যদি ব্যাপারটি এমন হয়েই থাকে তাহলে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।’

পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বিষয়ে নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি এমন কিছু একটা ঘটছে। এখন আর ঢালাওভাবে ছবি আমদানি করতে দেওয়া হবে না। তা ছাড়া যাঁরা ছবি রপ্তানি করছে, সেটাও সঠিক নিয়মে হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।’

যৌথ প্রযোজনার ছবি ছিল ‘চালবাজ’-এর ভারত অংশের প্রযোজক এসকে মুভিজ। এখন এটি বাংলাদেশে আমদানি করা ছবি হিসেবে মুক্তি পাবে। এ নিয়ে এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক অশোক ধানুকা মুঠোফোনে বলেন, ‘ছবিটা যৌথ বিনিয়োগ আছে কি না, সেটা মূল বিষয় নয়। আমরা বিনিময় চুক্তির নিয়ম মেনেই এটি বাংলাদেশে মুক্তি দিতে যাচ্ছি।’