সংসদ টিভি হবে 'শিল্পকলা টিভি'

রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মূল ভবন থেকে পরিচালনা করা হবে এই চ্যানেলটি
রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মূল ভবন থেকে পরিচালনা করা হবে এই চ্যানেলটি
• সংসদ টিভিকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়া হবে।
• মূলধারা এবং তৃণমূল পর্যায়ের লোকসংস্কৃতি প্রচার করা হবে এই চ্যানেলে।
• সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমি থেকে পরিচালনা করা হবে।
• বিজ্ঞাপনের আয় দিয়ে চলবে।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ‘শিল্পকলা টিভি’ নামে শিগগিরই একটি টিভি চ্যানেল চালু করতে যাচ্ছে। দেশের শিল্প-সংস্কৃতি এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম সারা দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এই চ্যানেলে সংগীত, নৃত্য, নাটক, চিত্রকলাসহ শিল্পের সব মাধ্যমের নানা অনুষ্ঠান দেখা যাবে। গতকাল রোববার শিল্পকলা চ্যানেল চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক।

জানা গেছে, ২০১২ সালে একটি স্বতন্ত্র চ্যানেল প্রতিষ্ঠার জন্য আবেদন করেছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। তখন থেকে চলছিল চিঠি চালাচালি। অবশেষে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেড় মাস আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা “শিল্পকলা চ্যানেল” বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। আমরা স্বতন্ত্র চ্যানেলের আবেদন করেছিলাম। প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছেন, যেহেতু সব সময় সংসদ টেলিভিশনের সম্প্রচার কার্যক্রম থাকে না, তাই সংসদ টেলিভিশনটাকেই শিল্পকলা টেলিভিশন হিসেবে পরিণত করা যেতে পারে।’ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইব্রাহীম হোসেন খান বলেন, ‘এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের আপত্তি নেই। শিগগিরই আনুষ্ঠানিক বৈঠকের মধ্য দিয়ে সংসদ টিভি টেকওভার করে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেব। যখন সংসদ অধিবেশন চলবে, তখন আমরা তা সম্প্রচার করব। অন্য সময়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম দেখানো হবে।’

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘এত চ্যানেলের ভিড়ে দর্শকের কাছে নতুন আরেকটি চ্যানেল জনপ্রিয় করা কঠিন। তাই আমরা গতানুগতিক সব চ্যানেল থেকে আলাদা কিছু করার চেষ্টা করছি। যেখানে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য বহন করে—এমন বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হবে।’ এ চ্যানেলে বিজ্ঞাপন থাকবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করে নিজস্ব অর্থ জোগানে চলবে এ চ্যানেল।’

শিল্পকলা চ্যানেলটি সেগুনবাগিচা রোডের বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ভবন থেকেই পরিচালনা করা হবে। এ জন্য সম্পূর্ণ ডিজিটাল স্টুডিও স্থাপন, হাই ফ্রিকোয়েন্সি সাউন্ড সিস্টেম, অত্যাধুনিক ক্যামেরা, লাইটসহ একটি স্বতন্ত্র টেলিভিশন চ্যানেল পরিচালনার জন্য যে ধরনের যন্ত্রাংশ প্রয়োজন, এর সবই সংযোজন করা হবে, এমনটা বলেছেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী।

সারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ে শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশ ও এর প্রচারে কাজ করবে শিল্পকলা টিভি। লিয়াকত আলী বলেন, জেলা শিল্পকলা একাডেমির কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদের দিয়ে স্থানীয় কাজগুলো করা হবে। এ ছাড়া কারিগরি বিষয় যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য নতুন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। এর আগে জাতীয় সংসদের কার্যক্রম দেশবাসীর কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন।