কার সঙ্গে প্রেম করেছেন মাধুরী?

মাধুরী দীক্ষিত ও সঞ্জয় দত্ত
মাধুরী দীক্ষিত ও সঞ্জয় দত্ত

বলিউড তারকা মাধুরী দীক্ষিত নাকি কঠিন প্রেমে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তিনি কার সঙ্গে প্রেম করেছেন, জানতে চান? ১৯৯১ সালের গোড়ার দিকের ঘটনা। ‘সাজন’ ছবির শুটিং করছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন আরেক বলিউড তারকা সঞ্জয় দত্ত। শুটিংয়ের ফাঁকে তাঁদের মাঝে কখন যে প্রেম শুরু হয়ে গেছে, তা টের পাননি সঞ্জয় দত্ত আর মাধুরী দীক্ষিত। কিন্তু তাঁদের আচরণ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চোখ এড়াতে পারেনি। এ সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই তা অস্বীকার করেছেন দুজনই। তবে তা বেশি দিন লুকিয়ে রাখতে পারেননি। ১৯৯২ সালে সুভাষ ঘাইয়ের ‘খলনায়ক’ ছবির শুটিংয়ের সময় এক ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাধুরী জানান, তাঁর প্রিয় মানুষ সঞ্জয় দত্ত, যার সঙ্গে তিনি জুটি বাঁধতে পছন্দ করেন।

আরেক সাক্ষাৎকারে মাধুরী দীক্ষিত আরও বলেন, ‘সঞ্জু (সঞ্জয় দত্ত) দারুণ একজন মানুষ। তাঁর মতো ভালো হৃদয়ের মানুষ আমি আর একজনও দেখিনি। একমাত্র সঞ্জুই পারে আমার মুখে হাসি আনতে।’

ওই সময় বলিউডের অনেকেই সঞ্জয় আর মাধুরীর প্রেমের ব্যাপারে জানতেন। আর মাধুরীকে বিয়ে করার জন্য নাকি সঞ্জয় দত্তও উঠেপড়ে লেগেছিলেন।

স্বামীর সঙ্গে মাধুরীর এই সম্পর্কের ব্যাপারটা অনেক আগে থেকেই ধারণা করেছিলেন সঞ্জয় দত্তের স্ত্রী রিচা শর্মা। তখন তিনি ছিলেন ক্যানসারের রোগী। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে তাঁর চিকিৎসা হচ্ছিল। সঞ্জয়ের সঙ্গে মাধুরীর প্রেমের গল্প সেখানে পৌঁছে যায়। সংসার বাঁচাতে চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখে একমাত্র মেয়ে ত্রিশলাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ফিরে আসেন মুম্বাই।

স্ত্রী আর কন্যাকে আনার জন্য সেদিন বিমানবন্দরে যাননি সঞ্জয় দত্ত। বিমানবন্দর থেকে সঞ্জয় দত্তের ল্যান্ড ফোনে দুবার কল দেন রিচা। তাঁর বোন এনা শর্মা সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে জানান, সেদিন রিচার ফোনকল রিসিভ করেননি সঞ্জয়। পরে এক সাক্ষাৎকারে রিচা বলেছিলেন, শুধু স্বামীর প্রতি ভালোবাসার জন্যই নিজের চিকিৎসা ফেলে ভারতে চলে এসেছেন।

তবে সংসারের ভাঙন ঠেকাতে পারেননি রিচা শর্মা। ভালোবাসা এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল, সঞ্জয় দত্ত তখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ক্যানসারে আক্রান্ত স্ত্রী রিচার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাবেন।

রিচা শর্মা তখন বলেছিলেন, ‘আমরা অনেক বছর ধরে একসঙ্গে আছি। দূরে থেকেও আমাদের যোগাযোগ নিয়মিত ছিল। এমন কিছু ঘটেনি যেখান থেকে আমাদের এত বছরের সম্পর্ক ভেঙে দিতে হবে। আমরা এই কঠিন সময় অতিক্রম করব। আমি কোনোভাবেই সঞ্জয়ের থেকে বিবাহবিচ্ছেদ চাই না।’

১৯৯৩ সালে রিচা শর্মার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হন সঞ্জয় দত্ত। রিচার অসুস্থতা ক্রমেই বাড়তে থাকে। যেহেতু তাঁর মস্তিষ্কে টিউমার ছিল, তাই ওই সময় মাথা কাজ করছিল না। আদালতে দীর্ঘদিন সঞ্জয়-রিচার মেয়ে ত্রিশলার অভিভাবকত্ব নিয়ে শুনানি চলে। কিন্তু ডিভোর্সের আগেই ১৯৯৬ সালে রিচা মারা যান। রিচার মৃত্যুর জন্য সঞ্জয় দত্তের অমানবিক আচরণকে দায়ী করা হয়।

এই সবকিছুই প্রভাব ফেলেছিল মাধুরী দীক্ষিতের ব্যক্তিগত জীবনেও। যেহেতু তিনি ছিলেন একটি রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে, তাই ওই সময় বিভিন্ন ম্যাগাজিন আর সংবাদপত্রে সঞ্জয়-মাধুরী-রিচাকে নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয়, তার প্রভাব পড়ে মাধুরীর পরিবারেও। একসময় সঞ্জয়ের কাছ থেকে দূরে সরে যান মাধুরী।

জানা গেছে, অনেক বছর পর আবার একই পর্দায় দেখা যাবে মাধুরী দীক্ষিত আর সঞ্জয় দত্তকে। ছবির নাম ‘সিদ্দত’। প্রযোজক করণ জোহর, আর পরিচালনা করবেন অভিষেক বর্মণ। ছবিতে আরও অভিনয় করবেন আলিয়া ভাট, বরুণ ধাওয়ান, সোনাক্ষী সিনহা ও আদিত্য রায় কাপুর। এই ছবির পটভূমি গত শতকের চল্লিশ দশকের। মুম্বাইয়ে এই ছবির বিশাল সেট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আর শুটিং শুরু হবে আগামী বছর গোড়ার দিকে।