মেহেরপুরে চলছে লালন স্মরণোৎসব

‘ধন্য ধন্য বলি তারে। বেঁধেছে এমন ঘর শূন্যের উপর পোজতা করে’—এমনই শত গানে মাতাল হয়ে উঠেছিল মেহেরপুরের কাজ নদের পাড়। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এখানে পালিত হচ্ছে বাউলসম্রাট লালন শাহের ১২৮তম তিরোধান দিবস।

সদরের আমঝুপি ইউনিয়নের চাঁদবিল গ্রামে বরাবরের মতো এ বছরও ‘মায়ের দান শান্তি আশ্রম’ এই উৎসবের আয়োজন করেছে। এবার এর ৩৩তম আসর।

দুই দিনব্যাপী এ উৎসবে এসেছেন অসংখ্য লালনভক্ত ও অনুসারী। উৎসবে পরিবেশন করা হচ্ছে লালনসংগীত। এ ছাড়া লালনের স্মৃতিচারণাসহ রয়েছে নানা ধরনের আয়োজন। আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠান শেষ হবে।

মেহেরপুরের চাঁদবিল গ্রামে কাজলা নদীর তীর ঘেঁষে ৩৩ বছর আগে ‘মায়ের দান শান্তি আশ্রম’ প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত লালন শাহের ভক্ত ও অনুরাগী অনিল ঘোষাই আশ্রমটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিবছর ৮ চৈত্র লালন উৎসব পালিত হয় আশ্রমটিতে। উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশের নানা প্রান্ত থেকে লালনভক্ত ও অনুরাগীরা আশ্রমে এসে জড়ো হন।

গতকাল ‘মানুষ গুরু নিষ্ঠা যার/ সব সাধন সিদ্ধ হয় তার’, ‘মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপারে তুই কুল হারাবি/ মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’, ‘এলাহী আলমীন গো আলা বাদশা আলমপনা তুমি’ এ রকম অসংখ্য লালনসংগীতের প্রেমে মত্ত হয়ে ওঠেন হাজারো ভক্ত-অনুরাগী।

আশ্রমটির প্রতিষ্ঠাতা অনিল ঘোষাই প্রথম আলোকে বলেন, মেহেরপুর জেলাজুড়ে অসংখ্য লালনভক্ত রয়েছে। সাঁইজির গান শুনতে পাওয়া যায় প্রায় সবখানে। ছোট-বড় অনেক আশ্রম রয়েছে সাঁইজির নামে। তবে সবচেয়ে বেশি ভক্ত-অনুরাগী এখানেই আসেন। সে কারণে দিনে দিনে আশ্রমের পরিধিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তা পাওয়া যায়। ভক্তরা এসে এখানে তৃপ্তি পান।