কুকুর যখন হিরো!

চলচ্চিত্রে পোষা প্রাণীদের চেয়ে বেশি সংলাপ থাকে মানুষের। কিন্তু আইল অব ডগস-একিন্তু ব্যাপারটা একদম উল্টো। মানুষ নয়, এখানে পোষা প্রাণী কুকুরের ভূমিকা মুখ্য। আর শেষ পর্যন্ত মানুষকে সাহায্যও করতে এগিয়ে আসে এই প্রাণীগুলোই।

চলচ্চিত্রের পুরো গল্পটাই আবর্তিত হয়েছে একটি দ্বীপকে ঘিরে। সময়টা অবশ্যই এখন থেকে আরও অনেক পরের। জাপানে নেওয়া হয়েছে এক নতুন উদ্যোগ। ‘ক্যানাইন ফ্লু’র কারণে কুকুরদের খাঁচায় বন্দী করে ফেলে দেওয়া হচ্ছে অনেক দূরের একটি দ্বীপে। কী আর করবে সেখানে বুদ্ধিমান কুকুরেরা? নিজেদের মতো দল বেঁধে নিয়েছে তারা। সেখানে কারও নাম ডিউক, কারও কিং, কারও চিফ। এমনটাই চলছিল তাদের দিনকাল। এমন সময় হঠাৎ একদিন এক প্লেন উড়ে চলে এল দ্বীপে। খুঁজতে গিয়ে সেখানে কুকুরেরা খুঁজে পেল এক মানুষকে। একটু কি রাগ হলো না তাদের? অবশ্যই হলো। হাজার হোক, মানুষেরাই তাদের তাড়িয়ে ফেলে দিয়েছে এই দ্বীপে। তবে রাগ পাশে রেখে আতারি নামের ছেলেটার সব কথা শুনল তারা। বুঝতে পারল যে হারিয়ে যাওয়া এক কুকুরের খোঁজে কুকুরের ছবি নিয়ে এই দ্বীপে এসেছে আতারি। আতারিকে সাহায্য করবে বলে ঠিক করল কুকুরেরা।

এ তো গেল কেবল দ্বীপের কথা। জাপানে ওদিকে বেশ হইচই পড়ে গেছে এর মধ্যে। আতারি দ্বীপে আসার সময় একটা জুনিয়র টারবো হেলিকপ্টার ছিনতাই করে এনেছিল। ফলে তার পেছনে আদাজল খেয়ে লেগে পড়ে সবাই। হামলা করা হয় আতারির ওপর। রুখে দাঁড়ায় কুকুরেরা। আতারির পাশে এসে দাঁড়ায় ছবির প্রধান তারকা চরিত্র—কিং, রেক্স, চিফ, ডিউক এবং বস। এরপর কী হলো? আতারি কি পারবে নিজের কুকুরকে খুঁজে বের করতে? কেবল একটা ছবির মাধ্যমে এত বড় দ্বীপ থেকে হাজারটা ঝামেলা সামলে কাউকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব?

জানতে হলে আপনাকে দেখতে হবে আইল অব ডগস মুভিটি। অ্যানিমেশন মুভি, তবে একটু ভিন্ন স্বাদে পূর্ণ। দেখে আর যাই হোক, হতাশ হতে হবে না অ্যানিমেশন মুভিপ্রেমীদের। স্টপ-মোশন অ্যানিমেটেড এই চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন ওয়েস অ্যান্ডারসন। ভারতের পেইন্ট ব্রাশ এবং আমেরিকার ইমপিরিকাল পিকচার্স যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে চলচ্চিত্রটি। ৬৮তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের শুরু হয় আইল অব ডগস-এর মাধ্যমে। মুভির প্রধান চরিত্রগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন স্কারলেট জনসন, ব্রায়ান ক্রান্সটন, অ্যাডওয়ার্ড নরটন, জেফ গোল্ডবামসহ পরিচিত আরও অনেকে। ২০১৫ সালে ফ্যান্টাস্টিক মিস্টার ফক্স মুক্তির পরপরই অ্যান্ডারসন জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তার পরবর্তী মুভিটি হবে কুকুরদের নিয়ে। সেই অনুযায়ীই এগিয়েছিল কাজ। কাজে দেরি করেননি পরিচালক। আর তার প্রমাণ আইল অব ডগস। ২৩ মার্চ মুক্তি পেয়েছে চলচ্চিত্রটি। তবে আপনি যদি চলচ্চিত্রটি কেমন সেটা নিয়ে ধারণা পেতে চান আগে থেকেই তাহলে রোটেন ট্যোমাটজের ৯৭ ভাগ ইতিবাচক রেটিং আর মেটাক্রিটিকের ১০-এর মধ্যে ৮.৩ আশা করি কম মনে হবে না আপনার। তাহলে আর দেরি কেন?

সাদিয়া ইসলাম

উইকি, টোয়েন্টি সেঞ্চুরি ফক্স, রোটেন ট্যোমাটোজ অবলম্বনে