আমি সেই শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা করছি: মিথিলা

মিথিলা। ছবি: ফেসবুক থেকে
মিথিলা। ছবি: ফেসবুক থেকে

ছোট পর্দার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী ও বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল মিথিলা। কাজ করেছেন মিউজিক ভিডিওতে। আজ বুধবার সকালে তিনি রেডিও স্বাধীন ৯২.৪ এফএমে একটি অনুষ্ঠান শুরু করেছেন। স্টুডিও থেকে সরাসরি প্রচার করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানের নাম ‘বেড়ে ওঠার গল্প’। সঞ্চালনা করছেন তিনি। দুপুরে এই অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ নিয়েই কথা হলো মিথিলার সঙ্গে।

আজ সকালে রেডিওতে আপনার একটি অনুষ্ঠান শুনেছি।
হ্যাঁ, ‘বেড়ে ওঠার গল্প’। আজই শুরু হলো। শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ নিয়ে। প্রতি বুধবার সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত প্রচার করা হবে। এখানে আমি তো থাকছিই, সঙ্গে অতিথি থাকছেন। আর মা-বাবারা সরাসরি ফোন করতে পারবেন। তাঁদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করব।

যতটুকু জানি, আপনি তো এই বিষয়টি নিয়েই কাজ করছেন।
আমি ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের ‘আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট’ বিভাগের প্রধান। শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ নিয়ে আমার কাজ। এ ছাড়া আমি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট’ বিষয়ে মাস্টার্স করেছি। এটা আমার দ্বিতীয় মাস্টার্স। বিভিন্ন দেশে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল কাজ করছে। আফ্রিকার উগান্ডা, তানজানিয়া আর লাইবেরিয়াতেও আমাদের ‘শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ’-এর প্রোজেক্ট আছে। আমাকে সেসব দেশে প্রায়ই যেতে হয়। বলতে পারেন এটা আমার সেকেন্ড হোম।

গবেষণার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। তার কী খবর?
ব্র্যাকে শুরু থেকে আমি গবেষণার কাজ করেছি। ২০১১ সালে আমি ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালে এসেছি।

‘শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ’ নিয়ে অনুষ্ঠান করার ব্যাপারে আগ্রহী হলেন কেন?
এটা আমার খুব আগ্রহের জায়গা। এই বিষয়ের ওপর পড়েছি, দেশে আর দেশের বাইরে এখন কাজও করছি। নিজের এই পছন্দের বিষয়টি নিয়ে গত বছর রেডিও স্বাধীনের সঙ্গে কথা হয়। এখানে জনসচেতনতা তৈরির জন্য কিছু কাজ হচ্ছে। সেখান থেকে এই এফএম রেডিওর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলি। ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলি। সবাই রাজি হলেন।

আজ প্রথম অনুষ্ঠান প্রচারিত হলো। কেমন সাড়া পেয়েছেন?
খুব ভালো। এতটা সাড়া পাব, তা আমি আগে থেকেই বুঝেছি। কারণ, আমাদের এখানে হঠাৎ করে সবাই মা-বাবা হয়ে যায়। একদিকে এর জন্য যেমন কোনো প্রস্তুতি থাকে না, অন্যদিকে এ ব্যাপারে কোনো জ্ঞানও নেই। আমি যখন মা হয়েছি, তখন আমার মনে হাজার-কোটি প্রশ্ন ছিল। আমি গুগলের সহযোগিতা নিয়ে সেসব প্রশ্নের জবাব খুঁজেছি। এটা তো সবার পক্ষে সম্ভব না। অনেকে তা বোঝেন না। উন্নত বিশ্বে যেমন মা-বাবা হওয়ার আগে কিংবা পরে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা থাকে, আমাদের এখানে তা নেই। আমি সেই শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা করছি। আশা করছি, আমার এই চেষ্টার মধ্য দিয়ে অনেকেই উপকৃত হবেন। পৃথিবীটা কিন্তু দ্রুত বদলে যাচ্ছে। এর সঙ্গে আমাদের সবাইকে তাল মেলাতে হবে।

যখন মা হয়েছেন, তখন পড়ার ব্যাপারটি আপনার নিজের কতটা কাজে লেগেছে?
আমি যখন মাস্টার্স করেছি, তখন আয়রার বয়স ছিল এক বছর। আমি প্রতিদিন বাসায় এসে ওকে খেয়াল করতাম। ওর শারীরিক আর মানসিকভাবে বেড়ে ওঠার পাশাপাশি আমার পড়া, দারুণ কাজে লেগেছে।

আয়রার বয়স কত হলো?
আগামী ৩০ এপ্রিল পাঁচ হবে।

ওর জন্মদিনের জন্য কী পরিকল্পনা করছেন?
আয়রার নিজেরই অনেক পরিকল্পনা আছে। আমি আবার এক সপ্তাহের জন্য ডেনমার্ক যাচ্ছি। একটা কনফারেন্স আছে। ফিরে এসে ওর পছন্দ মতো সবকিছু করব।

এবারই প্রথম চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন?
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, নাম ‘মুখোমুখি’। পরিচালক পার্থ সেন। ছবিতে আমি ঢাকার একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। শুটিং করতে কলকাতায় গিয়ে রাস্তা হারিয়ে ফেলি। তখন একজন ফটোগ্রাফারের সঙ্গে পরিচয় হয়। সে আমাকে সহযোগিতা করে। একসময় আমাদের বন্ধুত্ব হয়। কিন্তু নানা কারণে আমাদের যোগযোগ থেমে যায়। আমি ঢাকায় ফিরে আসি। অনেক দিন পর আবার আমাদের দেখা হয়। এর মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটে যায়। এভাবেই ছবির গল্প এগিয়ে গেছে।

ছবির শুটিং তো কলকাতায়ই হয়েছে।
আমরা শুটিং করেছি কলকাতার নিউমার্কেট, সাউদার্ন অ্যাভিনিউ, গলফ গার্ডেনসহ বিভিন্ন জায়গায়। অনেক শহর ঘুরেছি। কিন্তু সেই ছোটবেলা থেকে কলকাতা আমার ভালোবাসার শহর। এই ভালোবাসা তৈরি হয়েছে বই পড়ে আর গান শুনে। এবারই প্রথম ভালোবাসার শহরে গিয়েছি, তা-ও আবার শুটিং করছি। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে কলকাতায় অনেকেই আমাকে চেনে, জানে। ওখানে আমার ভক্ত আছে জানা ছিল না।