সনজীদা খাতুনকে গানে গানে জন্মদিনের শুভেচ্ছা

সংস্কৃতিসাধক সন্‌জীদা খাতুনের ৮৫তম জন্মদিনে স্বজন–সুহৃদেরা তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। গতকাল বিকেলে ছায়ানট ভবনে।  ছবি: প্রথম আলো
সংস্কৃতিসাধক সন্‌জীদা খাতুনের ৮৫তম জন্মদিনে স্বজন–সুহৃদেরা তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। গতকাল বিকেলে ছায়ানট ভবনে। ছবি: প্রথম আলো

বাঙালিকে তার সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেননি যাঁরা, সনজীদা খাতুন তাঁদের একজন। পাকিস্তান সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সংস্কৃতজনদের নিয়ে আয়োজন করছিলেন কবিগুরুর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনের। নতুন দেশ পাওয়ার পর তার সাংস্কৃতিক পথরেখা নির্ধারণে জীবন উৎসর্গ করেছেন। সংস্কৃতি সাধনা ও সাংস্কৃতিক যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন আজও। এই সাধকের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী ছিল কাল।

গতকাল বুধবার বিকেলে নিজের হাতে গড়ে তোলা সংস্কৃতির পীঠস্থান ছায়ানট সংগীত বিদ্যায়তন আয়োজন করেছিল তাঁর পছন্দের গান আর পাঠের আসর। তিনি অনুষ্ঠানে আসার আগেই ফুল নিয়ে সেখানে অপেক্ষা করছিলেন সংস্কৃতিকর্মী ও তাঁর গুণগ্রাহীরা। শুভেচ্ছা বিনিময় ও কুশল জিজ্ঞেস করে সনজীদা খাতুন গিয়ে বসেছেন মিলনায়তনের দর্শকসারিতে।

ছায়ানটের শিল্পীরা সনজীদা খাতুনকে নিবেদন করে সমবেত কণ্ঠে গেয়ে শোনান, ‘শুকনো পাতার নূপুর পায়ে’, একক কণ্ঠে আবু হুরায়রা শোনান, ‘আমার মন যখন জাগলি না রে’। গানের পর মঞ্চে আসেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী। তিনি বলেন, ‘সনজীদা খাতুনের মূল কাজ ছিল বাঙালি যেন বাঙালি হয়ে ওঠে। এ কাজে গত কয়েক দশক ধরে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ছায়ানট ছাড়া তাঁর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা শিকড়, সুরের জাদু-রঙের জাদু, নালন্দা-এসব প্রতিষ্ঠানেরও লক্ষ্য এক-বাঙালি হয়ে ওঠা। বাংলার সমাজ ও আকাশে যখন কালো হয়ে এল, মানবতা নিষ্পেশিত হলো ধর্মের অপব্যাখ্যায়, তখন সন্জীদা খাতুন ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন সারা দেশে।

অনুষ্ঠানে মিতা হক গেয়ে শোনান ‘হেলাফেলা সারা বেলা’, ‘কী সুর বাজে আমার প্রাণে’, ‘তোমায় গান শোনাব’। রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত ছাড়াও শিল্পীরা গেয়ে শোনান দুরবিন শাহ্, জালাল উদ্দীন খাঁ, বেঁচু দত্ত, আঙ্গুর বালা, অতুলপ্রসাদ সেনের গান। শিল্পীদের মধ্যে আরও ছিলেন মহিউজ্জামান চৌধুরী, লাইসা আহমদ লিসা, খায়রুল আনাম শাকিল, আবুল কালাম আজাদ ও ইফফাত আরা দেওয়ান। শ্রুতিকাব্য আবৃত্তি করেন শীমমা নাজনীন ও জহিরুল হক খান।