পুরস্কার পাওয়ার পর

মেহ্‌জাবীন ও অপূর্ব। ছবি: কবির হোসেন
মেহ্‌জাবীন ও অপূর্ব। ছবি: কবির হোসেন
>মেহ্জাবীন উত্তরায় শুটিং করছেন। অপূর্ব নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে। আনন্দ-এর বৈশাখ সংখ্যার ছবি তোলার জন্য দুজনকে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে। গত সোমবার পূর্বাচলের ৩০০ ফুট রাস্তা ধরে সময় অনুযায়ী পৌঁছে গেলেন মেহ্জাবীন। অবশেষে গ্রামের রাস্তায় ক্যামেরাবন্দী হলেন দুজন। ছবি তোলা শেষ করেই বসলেন প্রথম আলোর মুখোমুখি। সঙ্গে ছিলেন হাবিবুল্লাহ সিদ্দিক


কদিন পরই পয়লা বৈশাখ। শুরুতেই দুজনের কাছে জানতে চাইলাম বৈশাখের কেনাকাটা হলো? উত্তর দেওয়ার জন্য যেন মুখিয়ে ছিলেন মেহ্জাবীন। ‘আমি একটা শাড়ি আর কামিজ কিনেছি। একটা সকালে, আরেকটা বিকেলে পরব। কিন্তু এখনো ঠিক করিনি কোনটা আগে পরব।’ অপূর্ব কিছু একটা ভাবছিলেন। তাকাতেই সে ভাবনায় ছেদ পড়ল সম্ভবত। ‘ওহ, আমি তো আসলে এসব কেনাকাটা করি না। আমার স্ত্রী করে। ও নিশ্চয় কিছু একটা করে রেখেছে। বৈশাখের আগের দিন সারপ্রাইজ দেবে।’

সারপ্রাইজের অপেক্ষায় আছেন অপূর্ব। আছেন খাওয়ার অপেক্ষাতেও। ‘জানেন আমি খুবই ভোজনরসিক। বৈশাখের দিন আমাদের বাসায় সব আত্মীয়স্বজন আসেন। এবারও আসবেন। আমি জানি সেদিন ভর্তা, ইলিশের ব্যাপক আয়োজন হবে। আমি অপেক্ষায় আছি। বাসায় সবাই এলে আমার দারুণ লাগে। আমি আসলে যৌথ পরিবারে বড় হয়েছি তো, তাই কোনো উপলক্ষ পেলেই সবাই এখনো এক জায়গায় হই।’

এই দুজন এবারই প্রথম মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছেন। তা-ও তারকা জরিপে। ভক্তদের (পড়ুন পাঠক) ভোটে। বড় ছেলে টেলিছবির জন্য। এটা এই সময়ের জন্য সেরা প্রাপ্তি বলে জানালেন মেহ্জাবীন। বললেন, ‘এবার এই টেলিছবি এত জনপ্রিয় হয়েছে যে এখনো প্রতিদিনই কেউ না কেউ এটা নিয়ে কথা বলেন। সব বয়সী এবং সব শ্রেণির মানুষ পছন্দ করেছেন। জনপ্রিয়তার দিক থেকে এটা আমার জন্য একটা সেরা কাজ।’
পুরস্কার না পেলে খারাপ লাগত। মেহ্জাবীন হাসেন একটু। তা তো একটু লাগতই। সেই খারাপ লাগা থেকে নিশ্চয় পরেরবার আরও ভালো কাজ করতাম।’
মেহ্জাবীনের সঙ্গে গলা মেলালেন অপূর্ব। ‘আমারও তাই। মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার এই দেশের অন্যতম সেরা পুরস্কার। এটার অপেক্ষায় ছিলাম।’

বড় ছেলের পর দুজনকে জুটি করে অহরহ নাটক-টেলিছবির অফার আসছে। বাসা ভরে গেছে চিত্রনাট্য। কিন্তু চিত্রনাট্য পছন্দ না হলে দুজন কোনোভাবেই ‘হ্যাঁ’ বলছেন না। ‘আমার একটা সমস্যা হলো, পুরো চিত্রনাট্য না পড়েই অনেক সময় হ্যাঁ বলে দিই। কিন্তু শুটিং করতে গিয়ে বিপদে পড়ি। এটা আর করছি না। আর মেহ্জাবীনের সঙ্গে জুটি হলে আমি দায়িত্ব দিই ওকেই। ও আবার মনোযোগ দিয়ে চিত্রনাট্য পড়ে তবেই সিদ্ধান্ত নেয়।’ বলেন অপূর্ব।

সহ-অভিনেতার কাছ থেকে এমন প্রশংসা শুনে লক্ষ্মী মেয়ের মতো চুপচাপ হয়ে যান মেহ্জাবীন। ‘সংযুক্তি’ হিসেবে যোগ করেন, ‘ধরুন, আমার মা দারুণ বিরিয়ানি রান্না করেন। কিন্তু প্রতিদিন খেলে কি ভালো লাগবে। এটা সপ্তাহে এক দিনই খেতে হবে। অপূর্ব ভাইয়ের সঙ্গে আমার জুটি হয়ে অভিনয় করার ব্যাপারটি এমনই। প্রতিদিন করতে চাই না। দারুণ চিত্রনাট্য পেলে তবেই একসঙ্গে কাজ করা হয়।’

দুজনের শুটিংয়ের তাড়া। যে যার জায়গার ফিরবেন। শেষ প্রশ্ন করি, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পাওয়ার পর সম্মানী বাড়িয়েছেন কি? দুজন হাসেন। অপূর্ব জানান পুরস্কার পাওয়ার আগেই বাড়িয়েছি। আর মেহ্জাবীন বলেন, ‘এখনো বাড়াইনি। ভাবছি।’

তবে সম্মানী না বাড়ালেও জানালেন, ভক্তদের ভাগ্য নির্ধারণ করতে প্রথম আলো কার্যালয়ে আসছেন মঙ্গলবার। ‘আমরা পাঠকদের ভোট করা কুপন তুলব। আমাদের মাধ্যমে তাঁরা পুরস্কৃত হবেন ভাবতেই ভালো লাগছে।’ বলেন অপূর্ব।
পাঠকদের জন্য সুখবর হলো দুজনই এসেছিলেন। কুপনও তুলেছেন। ভেতরের পাতায় রয়েছে বিজয়ীদের নাম।