গানে গানে সুরের ধারার চৈত্রবিদায়

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা

রবীন্দ্রনাথের গানে গানে চৈত্রবিদায়ের উৎসব করেছেন সুরের ধারার শিল্পীরা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ছিল তাদের চৈত্রসংক্রান্তি উৎসব। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের আঙিনায় সূর্যাস্তের পর শিশুশিল্পীদের কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ উৎসব। পরে ছিল এর মূল আনুষ্ঠানিকতা।

স্বাগত বক্তব্য দেন সুরের ধারার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। তিনি বলেন, রবীন্দ্রসংগীত শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও পথপরিক্রমায় সুরের ধারায় খানিকটা পরিবর্তন এসেছে। এখন রবীন্দ্র আদর্শে মুক্তবুদ্ধির, সুস্থ রুচির বিশ্বমানব তৈরিই এ প্রতিষ্ঠানের কাজ।

সুরের ধারার রজতজয়ন্তী উপলক্ষে চার দিনের অনুষ্ঠানের তৃতীয় দিনে গতকাল আরও ছিল রবীন্দ্রনাটক নিয়ে আলোচনা। এতে ‘আত্মজীবনের নাটকরূপ’ বিষয়ে মূল আলোচনা করেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক সৌমিত্র বসু। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শফি আহমেদের সভাপতিত্বে এ অধিবেশনের প্রধান অতিথি ছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসুরায় চৌধুরী। আলোচনা করেন বিশ্বভারতীর শিক্ষক পার্থ চক্রবর্তী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কামাল উদ্দিন কবির। রবীন্দ্র নাটক নিয়ে আলোচকেরা বলেন, কবির ব্যক্তিগত নানা সংকট উঠে এসেছে তাঁর নাটকগুলোতে। বিশেষ করে তাঁর তরুণ বয়সে লেখা নাটকে। রাজা নাটকে স্বজনহারানোর বেদনা বুকে নিয়েও রাজাকে অবিশ্বাস করতে না পারা চরিত্রটি যেন কবির নিজেরই চরিত্র। এতে ফুটে উঠেছে তাঁর ঈশ্বরে বিশ্বাস। এ ছাড়া বিসর্জন নাটকটি বারবার পরিবর্তন, সংশোধন ও পরিমার্জনের নানা যৌক্তিকতা নিয়েও কথা বলেন আলোচকেরা। আলোচনায় এসেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শারদোৎসব, প্রায়শ্চিত্ত, ডাকঘর নাটকগুলোর কথা।

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আগে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সাংস্কৃতিক পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন লিলি ইসলাম, মহিউজ্জামান চৌধুরী, অণিমা রায় ও অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়। নৃত্য পরিবেশন করে নাচের দল নৃত্যম, সুরের ধারার নৃত্য বিভাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আবৃত্তি করেন ভারত ও বাংলাদেশের বাচিক শিল্পীরা। পরে ছিল পার্থ চক্রবর্তীর নির্দেশনায় নাটক ফাল্গুনী।

সংগীত সংগঠন সুরের ধারার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত বুধবার থেকে শুরু হয় চার দিনের উৎসব। আজ ভোরে রবীন্দ্রসংগীত গেয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার আয়োজন করে সংগঠনটি। এ উপলক্ষে হাজার কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত গেয়ে বর্ষবরণের এ আয়োজনটি যৌথভাবে করছে চ্যানেল আই ও সুরের ধারা।