এবার বইয়ে এসেছে মুভি মোগলের গল্প

অনুষ্ঠানে এ টি এম শামসুজ্জামান, এ কে এম জাহাঙ্গীর খান ও আমজাদ হোসেন
অনুষ্ঠানে এ টি এম শামসুজ্জামান, এ কে এম জাহাঙ্গীর খান ও আমজাদ হোসেন

‘আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসের সঙ্গে জাহাঙ্গীর খানের নাম নিবিড়ভাবে জড়িয়ে গেছে। বাবার শাসন অগ্রাহ্য করে তিনি চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেছিলেন। যদিও চলচ্চিত্র প্রযোজনা থেকে এখন অনেক দূরে সরে আছেন, তারপরও মনটা চলচ্চিত্রেই পড়ে আছে। চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক এ কে এম জাহাঙ্গীর খানের জীবনী নিয়ে প্রকাশিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বললেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) জহির রায়হান মিলনায়তনে ‘মুভি মোগল এ কে এম জাহাঙ্গীর খান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একই সঙ্গে দেশের চলচ্চিত্রের বিশিষ্ট এই প্রযোজকের ৭৯তম জন্মদিন উদ্‌যাপন করা হয়।

ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘এখনো অতীত জীবনে স্মৃতি নেড়েচেড়ে আনন্দ পান এ কে এম জাহাঙ্গীর খান। আমরা চাই চলচ্চিত্রে এখন যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গে এ কে এম জাহাঙ্গীর খানের সংযোগ যেন অব্যাহত থাকে। তিনি যতটুকু করতে পেরেছেন, তাঁর স্বীকৃতি যেন তিনি পান। এই স্বীকৃতির মধ্যে তিনি আনন্দিত জীবন খুঁজে পাবেন।’

আনিসুজ্জামান বলেন, দীর্ঘ পাঁচ দশক চলচ্চিত্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থেকে তিনি বিনোদনের নানামাত্রিক বৈশিষ্ট্যের ছবি উপহার দিয়েছেন। পোশাকি, ফ্যান্টাসি, ফোক ও সাহিত্যের চলচ্চিত্রায়ণ করেছেন। তাঁর অধিকাংশ ছবির প্রাণ গল্প, গান ও সংলাপ।’

‘মুভি মোগল এ কে এম জাহাঙ্গীর খান’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফরিদুর রেজা সাগর। তিনি বলেন, ‘এ কে এম জাহাঙ্গীর খান যে ব্যবসা করে সবচেয়ে বেশি নাম করেছেন, সেটি চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র জগতের সম্রাট তিনি, মুভি মোগল হিসেবে তাঁকে নিয়ে সবাই গর্বিত। তিনি সব সময় সম্রাটের মতোই বাংলাদেশের মানুষের মনে থাকবেন, কারণ তিনি অনেক চমৎকার ছবি তৈরি করেছেন। যে ছবিগুলো তৈরি করেছেন, সেগুলো এখনো আমাদের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে।’

এ কে এম জাহাঙ্গীর খান প্রযোজিত ‘নয়নমণি’ ছবিটি নির্মাণ করেন আমজাদ হোসেন। ছবিটি দারুণ ব্যবসাসফল হয়। বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ কে এম জাহাঙ্গীর খানের অন্য একটি গুণের কথা তুলে ধরলেন তিনি। বললেন, ‘নয়নমণি ছবিটির পর আমার একটা অসুখ হয়। হাসপাতালে ভর্তি হই। অস্ত্রোপচার হয়। এর মধ্যে শুনলাম, আমার মা মারা গেছেন। আমাকে জামালপুর যেতেই হবে। তখনো কাটা ঘা, সেলাই খোলা হয়নি। আমার যাওয়ার কথা শুনে জাহাঙ্গীর সাহেব তাঁর গাড়িটা আমাকে দিলেন। আমার চিকিৎসক বললেন, কোনো অবস্থাতেই যেন গাড়ি ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটারের বেশি না চলে। সেই গাড়ির জন্য এই মানুষটিকে আমার সব সময় মনে থাকবে।’

‘মুভি মোগল এ কে এম জাহাঙ্গীর খান’ বইয়ের লেখক আবদুল্লাহ জেয়াদ। এটি প্রকাশ করেছে জ্যোতি প্রকাশ। প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সৈয়দ হাসান ইমাম, এ টি এম শামসুজ্জামান, কাজী রোজী, মুশফিকুর রহমান প্রমুখ।