বরকে কীভাবে খুশি রাখেন রানী?

রানী মুখার্জি। ছবি: সংগৃহীত
রানী মুখার্জি। ছবি: সংগৃহীত

‘হিচকি’ ছবির সাফল্যের পর দারুণ খুশি রানী মুখার্জি। এই খুশি সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন তিনি। তাই সাংবাদিকদের জন্য ‘হিচকি’ ছবির ‘সাকসেস পার্টি’র আয়োজন করেন এই বলিউড সুন্দরী। এদিন সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন। কিন্তু রানীর স্ত্রী সত্তা কখনো কখনো ছাপিয়ে যায় তাঁর অভিনেত্রী সত্তাকে। তিনি প্রযোজক-পরিচালক আদিত্য চোপড়ার স্ত্রী, তা সবারই জানা। আর রানী মনে করেন, অভিনেত্রী হওয়ার চেয়ে স্ত্রী হওয়া বেশি চাপের। সব সময় নিজের স্বামীকে খুশি রাখার কথা ভাবতে হয়। বাড়িতে সুন্দর এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রাখতে হয়।

মুম্বাইয়ের এক পাঁচ তারকা হোটেলে ‘হিচকি’র সফলতার কথা বলতে গিয়ে নিজের জীবনের কিছু কথা রানী অকপটে জানান প্রথম আলোর এই প্রতিবেদককে। অভিনেত্রী হিসেবে সব সময় সেজেগুজে থাকতে হয়। এটা কতটা চাপের? রানী হেসে জবাব দেন, ‘অভিনেত্রী হিসাবে নয়, বরং স্ত্রী হিসেবে চাপে থাকি। আমি শুধু আদির (আদিত্য) জন্য সাজি। বরকে খুশি রাখতে সাজতে হয়। বিয়ের পর জরুরি হয়ে দাঁড়ায় যে আপনাকে রোজই যেন সুন্দর লাগে আপনার স্বামীর জন্য। আমি অভিনেত্রী পরে, আগে তো স্ত্রী। স্বামী যখন সারা দিন পর বাড়িতে ফেরেন, তখন তিনি কী দেখতে চান? একটি সুন্দর মুখ, আর সুন্দর বাতাবরণ।’

বরকে খুশি রাখতে গেলে ভালো ভালো খাবার রেঁধে খাওয়াতেও হয়। বাড়িতে রান্না করার অভ্যাস আছে? রানীর মুখে আবার সেই চিরাচরিত হাসি। বললেন,‘“হিচকি” ছবিতে দেখেননি আমি আটা মাখছি? আরে আটা না মাখলে বউ হলাম কী করে (সজোরে হেসে)! বাড়িতে একটু-আধটু রান্না করি। তবে রোজ রান্না করতে ভালো লাগে না।’

বাঙালি পদ রান্না করে খাওয়ানো হয় আদিত্যকে? বলিউড সুন্দরীর জবাব, ‘না, আমি বাঙালি রান্না করি না। কেক বেক করতে ভালোবাসি। ইতালির খাবার বেশি তৈরি করি। আমার হাতের স্পেশাল অমলেট আদি খুব ভালোবাসে। প্রতি রোববার এই অমলেট বানাই। আদির কাছে পৃথিবীর সেরা অমলেট আমিই বানাই। আর বাঙালি রান্না করার জন্য মা আছেন। জামাইয়ের মন জয় তো করতে হবে। তাই নানা বাঙালি পদ রান্না করে মা জামাইকে খাওয়ান।’

রানী মুখার্জি। ছবি: সংগৃহীত
রানী মুখার্জি। ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের আর পাঁচটা নায়িকার থেকে উল্টো স্রোতে হাঁটতে পছন্দ করেন রানী। এ যুগের বলিউড অভিনেত্রীরা সাধারণত গর্ভাবস্থা লুকান না। এমনকি কিছু অভিনেত্রী এই সময় ফটোশুট করেছেন বা র‍্যাম্পে হেঁটেছেন। এ প্রসঙ্গে রানী বলেন, ‘লুকানো বা দেখানোর প্রশ্ন নয়। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেকের ভাবনা আলাদা। কারও অধিকার নেই যে প্রেগনেন্সি নিয়ে কোনো অভিনেত্রীকে প্রশ্ন করে। এটা খুবই ব্যক্তিগত বিষয়। গর্ভকালীন অবস্থায় কোনো নারী বাইরে বের হয় কি না, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ। তাই এ বিষয়ে মিডিয়ার কথা বলা ঠিক নয়। প্রেগনেন্সিকে ঘিরে প্রত্যেকের আলাদা আলাদা বিশ্বাস। বাঙালি মেয়েরা সাধারণত চার মাসের আগে বাইরে বের হন না। আমিও তাই করেছিলাম।’

আজও অভিনেত্রীরা মা হওয়ার পর তাঁকে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। রানী বলেন, ‘অভিনেতাদের বিয়ের পর বা বাবা হওয়ার পর কেউ কোনো প্রশ্ন করে না। কিন্তু অভিনেত্রীদের বিয়ের পর অথবা মা হওয়ার পর নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। অনেকে প্রশ্ন করেন, বাচ্চা হওয়ার পর কাজ করবেন কি না। মা হওয়ার পর কি কাজ করা যায় না? অভিনয়টা আমার কাজ। সব মেয়েরা কি মা হওয়ার পর কাজ ছেড়ে দেন?’

‘হিচকি’র পর এখন শুধু মেয়ে আদিরার সঙ্গে লম্বা সময় কাটাতে চান রানী। তাই আদিরাকে সঙ্গে নিয়ে উড়ে গেছেন তাঁরই পছন্দের জায়গায়। রানী বলেন, ‘মেয়েদের ছুটি পাওয়া মুশকিল। “হিচকি”র সব কাজ আপাতত শেষ। মানে একজন অভিনেত্রীর কাজ শেষ হলো। এবার একজন মায়ের কাজ শুরু।’