রাজীব বসাকের সোনার কাঠি রুপার কাঠি

রাজীব বসাক
রাজীব বসাক

জাদুকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন রাজীব বসাক। অনেকেই তাঁকে চেনেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় জাদু দেখিয়ে মন কেড়েছেন অনেকের। তবে সম্প্রতি দুরন্ত টিভিতে নিয়মিত আধা ঘণ্টার জাদুর অনুষ্ঠান করে শিশুদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন সহজেই। এখন দুরন্ত টিভির নাগালে থাকা শিশুরা ‘সোনার কাঠি রুপার কাঠি’ নামের অনুষ্ঠানটি দেখার জন্য অপেক্ষা করে অধীর আগ্রহে। এই আগ্রহের অন্যতম কারণ হলো, এখানে জাদু শেখা যায়। প্রতিদিনই একটা বিজ্ঞানের, আরেকটা কৌশলের জাদু শিখিয়ে দেন রাজীব বসাক। ফলে শিশুরা নিজেদেরও জাদুকর ভাবতে পেরে আনন্দ পায়।

জাদুর এই অনুষ্ঠান দুরন্ত টিভিতে শুরু হয়েছে ১৪ জানুয়ারি থেকে। সে সময় রবি থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৬টায় একবার দেখানো হতো, তারপর এর পুনরাবৃত্তি হতো বেলা সাড়ে ১১টায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আর রাত সাড়ে ১২টায়। ১৪ এপ্রিল থেকে নতুন করে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন দেখানো হচ্ছে বেলা সাড়ে ১১টায়, পুনরাবৃত্তি করা হচ্ছে রাত ১২টায়। প্রথম প্রান্তিকে সকাল সাড়ে ৬টায় যখন দেখানো হতো অনুষ্ঠানটি, তখনকার একটা দারুণ ঘটনা দিয়ে এই লেখা শেষ হবে। ধৈর্য ধরুন।

আধা ঘণ্টার এই অনুষ্ঠান রাজীব বসাকের জীবনও বদলে দিয়েছে। সন্তানকে স্কুলে দিতে গেলে তাঁকে ঘিরে ধরেন অভিভাবকেরা, তাঁদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়ে তাঁদের সন্তানেরা। তারপর সেলফি। কিংবা কোথাও দ্রুত যাওয়ার প্রয়োজন থাকলে বাসে উঠে পড়েন যখন, তখন বাসেও সেলফি তোলার অনুরোধ রাখতে হয়। তবে সবচেয়ে অবাক হয়েছেন তিনি বাজারের সবজিওয়ালাদের কাছ থেকে সেলফি তোলার অনুরোধ পেয়ে। এত ভালোবাসায় তিনি আপ্লুত।

জনপ্রিয়তা রাজীব বসাককে আনন্দ দেয়, কিন্তু এর একটি খারাপ দিক আছে, সেটাও তিনি জানেন। কথাচ্ছলেই বললেন, ‘অনেকেই মনে করে, আমার এখন নাম হয়েছে, তাই হয়তো আমি সব ধরনের শো করব না। ব্যাপারটা এমন নয়। আমি জাদুর মানুষ। জাদু নিয়েই থাকি। তাই স্পষ্ট করে বলতে চাই, জাদু দেখিয়ে আনন্দ পাই বলে সব ধরনের অনুষ্ঠানই করতে চাই আমি। শুধু টেলিভিশনে নিজের কাজ সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না।’

রাজীব বসাক জাদু নিয়ে মেতেছেন ১৯৮৪ সাল থেকে। পেশাদার জাদুকর হিসেবে নিজেকে তৈরি করেছেন ২০০৭ সাল থেকে। টেলিভিশনে এর আগেও ১৩ পর্বের কিংবা ২৬ পর্বের জাদুর অনুষ্ঠান করেছেন। কিন্তু দুরন্ত টিভিতে জাদু দেখাতে এসে যে স্বীকৃতি পেয়েছেন, তা অভূতপূর্ব।

রাজীব বসাকের সঙ্গে কথোপকথনের খানিকটা এ রকম:

—কোন বিষয়টি আপনাকে অনুপ্রাণিত করেছে সবচেয়ে বেশি?

—মেসেঞ্জারে অপরিচিত অভিভাবকদের মেসেজ।

—মেসেজ কী করে কাউকে অনুপ্রাণিত করে?

—তারা আমাকে একটা নির্দিষ্ট কারণে ধন্যবাদ দিয়েছেন।

—কী সেটা?

—শিশুরা ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠতে চায় না। স্কুলের জন্য তাদের তৈরি করতে কষ্ট হয়। ঘুমজড়ানো চোখেই তারা তৈরি হতে থাকে। এই জাদুর অনুষ্ঠানটি শুরু হওয়ার পর ভোরবেলায় বাবা-মায়েরাই টেলিভিশনে দুরন্ত টিভি চ্যানেলটি খোলেন। তাতে শিশুদের ঘুম এমনিতেই ভেঙে যায়। অনুষ্ঠান দেখে তারপর স্কুলের পথে রওনা হয়ে যায় ওরা।