'অ্যাড্রিফট' - গল্পটা সত্যি, কিন্তু...

অ্যাড্রিফট ছবির দৃশ্য
অ্যাড্রিফট ছবির দৃশ্য

সত্যি ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো সব সময়ই একটু বেশি প্রশংসিত হয়। সবার নজর কাড়ার জন্য সত্যি ঘটনার তুলনা হয় না। তবে যথেষ্ট রোমাঞ্চ আর তৈরি করা গল্পকে হার মানিয়ে দেয় কিছু সত্যিকারের ঘটনা। না, কোনো মানুষের বেড়ে ওঠার গল্প নয়। দারিদ্র্য, জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ, নিজের সঙ্গে মানসিক লড়াই—কিছুই নয়। অ্যাড্রিফট–এর ঘটনাগুলো গড়ে উঠেছে জীবনকে একটু একটু করে মৃত্যুর ভয়াল কবল থেকে ফিরিয়ে আনা নিয়ে।

একজন নারী, একজন পুরুষ। তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে ভালোবাসার সম্পর্ক। তবে একটা সময় ভালোবাসার এই সম্পর্ক কিছু প্রতিকূলতার মুখে পড়ে। পরিবার, সমাজ কিংবা অতি আবেগ তাদের প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। এই বাধার নাম মৃত্যু। ভালোবাসায় ভরপুর এই দম্পতি আটকা পড়ে প্রশান্ত মহাসাগরের একেবারে মাঝখানে। যেখানে তাদের কাছে না আছে দিকনির্দেশনা, না আছে যোগাযোগের কোনো মাধ্যম। এমনকি নৌকাকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার হাতিয়ারও ছিল না। তবু তাদের বাঁচতে হয়েছে। ছুটতে হয়েছে জীবনের খোঁজে। গন্তব্য হাওয়াই। এত গেল বেঁচে থাকার কথা। আর ভালোবাসা? ভালোবাসা টিকে থেকেছে তখনো। এমনই এক গল্পকে শব্দে বন্দী করেছেন ডেভিড ব্রানসন স্মিথ, অ্যারন ক্যানডেল ও জর্ডান ক্যানডেল। দুঃসাহসিক আর বাস্তব এই গল্প পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রের পর্দায় উপস্থাপনা করেছেন পরিচালক বালতাজার করমাকুর।

টামি ওল্ডহাম ও রিচার্ড শার্প—একজন আরেকজনকে ভালোবাসতেন। ১৯৮৩ সালের কথা। বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন এই দুজন। তবে তার আগে প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে বোট নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা হয় তাঁদের। টানা ৬ মাস এভাবেই কাটান তাঁরা। বেশ ভালোই চলছিল সব। তবে কেবল ভালোলাগাই নয়, তিক্ততা এসে জড়ো হয় একটা সময় এই গল্পে। সমুদ্রে তাঁদের দেখা হয় হারিকেনের সঙ্গে। দুমড়েমুচড়ে যায় টামি–রিচার্ডের নৌকা। আহত হন দুজনই। প্রথমে জ্ঞান ফেরে টামির। রিচার্ডকে না দেখতে পেয়ে টামি পাগলপ্রায় হয়ে যান। খুঁজে পাওয়া ছোট একটা নৌকায় করে টানা ৪১ দিন রিচার্ডকে খুঁজতে থাকেন টামি। মাখন, বাদাম, জমিয়ে রাখা খাবার খেয়ে কোনো রকমে জীবন বাঁচান তিনি। তবে সব কষ্টই সার্থকতা পায় যখন রিচার্ডকে খুঁজে বের করেন টামি।

একটু একটু করে সময় ফুরিয়ে আসছিল টামির। খাবার ছাড়া দুদিন পার করার পর এক দিন মানুষের আভাস পান তিনি। গুলি ছোড়েন। আর একটি জাপানিজ রিসার্চ শিপ এসে সাহায্য করে তাঁকে। ফিরে আসেন তিনি বাড়িতে একা। শার্পকে ভুলতে পারেননি এরপর টামি কখনোই। সমুদ্রকেও না। তাহলে শার্প কি সত্যিই ছিলেন না? টামি কাকে খুঁজে পেয়েছিলেন বোটে হারিকেনের পর? ট্রেইলার দেখলে এই প্রশ্ন আপনার মাথায় ঘুরবেই। মুভিটির মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন শেইলিন উডলি ও স্যাম ক্লাফিন। ইতিমধ্যেই বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে মুভিটি দর্শকদের মধ্যে। আগামী ১ জুন মুক্তি পাবে এটি সবার জন্য। কী ভাবছেন? দেখতে যাবেন নাকি?
সাদিয়া ইসলাম
মিরর, উইকি, আইএমডিবি অবলম্বনে