রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে বাপ্পী

রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুদের সঙ্গে চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী
রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুদের সঙ্গে চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী

কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে একটি দিন কাটিয়েছেন চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার তিনি ছিলেন কক্সবাজারের জামতলী ও চাকমারকুল রোহিঙ্গা শিবিরে। সেখানে তিনি রোহিঙ্গা শিশু, কিশোর-কিশোরী আর নারীদের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নেন। আজ বুধবার সকালে ঢাকায় ফিরে এসেছেন তিনি। এরপর প্রথম আলোকে বললেন, ‘চমৎকার একটা দিন কাটিয়েছি তাদের সঙ্গে। এমন অভিজ্ঞতা হবে ভাবতেও পারিনি। খুব গরম ছিল। কিন্তু আমি খুব আনন্দ পেয়েছি। আর সময়টা খুব উপভোগ করেছি।’ বাপ্পীকে অস্থায়ী রোহিঙ্গা শিবির দেখাতে সাহায্য করেন বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের কর্মীরা।

বাপ্পী চৌধুরী গত আট দিন কক্সবাজারে ব্যস্ত ছিলেন ‘নায়ক’ ছবির শুটিং নিয়ে। ছবির পরিচালক ইস্পাহানি আরিফ জাহান। জানা গেছে, কক্সবাজারে ‘নায়ক’ ছবির গানের দৃশ্যের কাজ হয়েছে। বাপ্পী চৌধুরীর সঙ্গে ছিলেন ছবির নায়িকা অধরা। আরও ছিলেন নৃত্য পরিচালক বাবা যাদব ও মাসুম বাবুল।

রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুদের সঙ্গে চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী
রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুদের সঙ্গে চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী


বাপ্পী চৌধুরী বলেন, ‘ছবির কাজ শেষে গতকাল সবাই ঢাকায় ফিরে এসেছেন। কিন্তু আমি থেকে যাই। কারণ, হাতে কিছু সময় ছিল। ছবির কাজের সময় ওখানে ব্র্যাকের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে পরিচয় হয়। তাঁর কাছ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ব্যাপারে অনেক কিছু জানতে পারি। আমি তাদের সঙ্গে দেখা করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করি। এই কর্মকর্তার সহযোগিতায় আমি কক্সবাজারে জামতলী ও চাকমারকুল রোহিঙ্গা শিবিরে যাই।’

কক্সবাজার শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে জামতলী রোহিঙ্গা শিবিরে বাপ্পী চৌধুরী যখন যান, তখন সকাল আটটা। বললেন, ‘রোহিঙ্গা শিবিরে বাঁশের তৈরি হাজারো ছোট ঘর দেখেছি। সেখানে বাস করছে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা একটা বিশাল জনগোষ্ঠী। শুনেছি, প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী এখানে আছে।’

রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুদের সঙ্গে চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী
রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুদের সঙ্গে চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী


ব্র্যাক পরিচালিত শিশুবান্ধব কেন্দ্রে শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান বাপ্পী চৌধুরী। বললেন, ‘এখানে রোহিঙ্গা শিশুদের ইংরেজি, বর্মিজ ভাষায় বর্ণমালা শেখানো হচ্ছে। তারা গান শিখছে। শেখার ব্যাপারে তাদের আগ্রহ দেখে খুব ভালো লেগেছে।’

এখানে শিশুবান্ধব কেন্দ্রে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা দেখেন বাপ্পী চৌধুরী। বলেন, ‘শিশুরা কাগজে রংপেনসিল দিয়ে ফুল, পাখি, মাছ এঁকেছে। আমি তাদের জন্য চকলেট নিয়ে গিয়েছিলাম। সেগুলো তাদের দিয়েছি।’

রোহিঙ্গা শিবিরে কিশোরদের সঙ্গে ফুটবল খেলেছেন চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী
রোহিঙ্গা শিবিরে কিশোরদের সঙ্গে ফুটবল খেলেছেন চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী


চাকমারকুল রোহিঙ্গা শিবিরে ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাপ্পী চৌধুরী। সেখানে তিনি বিবাহবিচ্ছেদের সমস্যা, শিক্ষার গুরুত্ব আর নারীর ক্ষমতায়নের ব্যাপারে কথা বলেন। এ ছাড়া জন্ম নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা করেন। কিশোরদের সঙ্গে ফুটবল খেলায় অংশ নেন তিনি।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান বাপ্পী চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই অসহায় মানুষগুলোকে আশ্রয় দিয়ে সেই মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন।’