নীরব শুটিংয়ে তাহসান ও শ্রাবন্তী

কক্সবাজারে ‘যদি একদিন’ ছবির শুটিংয়ে তাহসান ও শ্রাবন্তী। ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারে ‘যদি একদিন’ ছবির শুটিংয়ে তাহসান ও শ্রাবন্তী। ছবি: সংগৃহীত

একেবারে নীরবে ছবির শুটিং করছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় গায়ক ও অভিনয়শিল্পী তাহসান আর ভারতের বাংলা ছবির অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা শ্রাবন্তী। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে দুই দিন ধরেই ‘যদি একদিন’ ছবির শুটিং করছেন তাঁরা। পরিচালক মুহাম্মদ মুস্তফা কামাল রাজ বলেন, ২৫ জুন পর্যন্ত সেখানে ছবিটির শুটিং হবে।

সাধারণত দেশের বাইরে থেকে কোনো নায়ক-নায়িকা শুটিংয়ে এলে বেশ ঢাকঢোল পেটানো হয়। সেদিক থেকে উল্টো পথের যাত্রী হলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ। তাঁর নতুন ছবি ‘যদি একদিন’-এর শুটিংয়ে ভারতের কলকাতা থেকে এসেছেন শ্রাবন্তী। দুই দিন ধরে কক্সবাজারে নীরবে তাহসান, শ্রাবন্তী আর আফরিনকে নিয়ে শুটিং করছেন, অথচ কাউকে জানতেও দিচ্ছেন না। অনেক অনুরোধের পর প্রথম আলোর কাছে শুটিংয়ের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। নীরবে শুটিংয়ের কারণ জানতে চাইলে নির্মাতা বলেন, ‘নতুন এই ছবি নিয়ে আমাদের অনেক পরিকল্পনা আছে। সেই পরিকল্পনামতো আমরা শুটিংয়ের কাজ শেষ করছি। ছবির শুটিং নিয়ে ঢাকঢোল পেটানোর কোনো কারণ দেখছি না।’

কক্সবাজারে ‘যদি একদিন’ ছবির শুটিংয়ে তাহসান ও শ্রাবন্তী। ছবি-সংগৃহীত
কক্সবাজারে ‘যদি একদিন’ ছবির শুটিংয়ে তাহসান ও শ্রাবন্তী। ছবি-সংগৃহীত

কক্সবাজারে এবারের লটে দৃশ্যের পাশাপাশি গানের শুটিং করা হচ্ছে। আগামীকাল রোববার শুটিং করা হবে ‘যদি একদিন’ ছবির শিরোনাম গানের শুটিং। নাভেদ পারভেজের সুর ও সংগীতের এই গানের কথা লিখেছেন মাহমুদ মানজুর। আর গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন তাহসান ও কোনাল। ‘যদি একদিন’ শিরোনামের গানটির কিছু অংশের শুটিং হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি সমুদ্রসৈকতে। সে সময় দৃশ্যধারণে অংশ নেন তাহসান।

নতুন লটের শুটিং কেমন হচ্ছে? তাহসান বলেন, ‘দারুণ! খুব চমৎকারভাবে কাজটি করা হচ্ছে। যতদূর জানতে পেরেছি, এবারের লটে শেষ হয়ে যাবে “যদি একদিন” ছবির শুটিং।’

ছবিটি সম্পর্কে তাহসানের বক্তব্য, ‘ছবিটি দেখে কেউ বলবে না, এটা তাহসানের সঙ্গে যায় না। মানুষ হয়তো ভাবতে পারে, এই ছবি শুধুই নাচগান, মারামারি—এসব নিয়েই। সবাইকে বলতে চাই, এটি এমন একটি ছবি, যা আমি চাই।’

কক্সবাজারে ‘যদি একদিন’ ছবির শুটিংয়ে তাহসান ও শ্রাবন্তী। ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারে ‘যদি একদিন’ ছবির শুটিংয়ে তাহসান ও শ্রাবন্তী। ছবি: সংগৃহীত

দেশে ও দেশের বাইরে সবার কাছে তাহসানের পরিচিতি গানের মানুষ হিসেবেই। পাশাপাশি নাটক আর টেলিছবিতে অভিনয় করার কারণে অনেক চলচ্চিত্র নির্মাতা তাঁকে কাস্টিং করে ছবি বানানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু গল্পের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পারায় ছবিতে কাজ করার পক্ষপাতী ছিলেন না। বললেন, ‘ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব অনেক পেয়েছি, গতানুগতিক নায়ক হিসেবে বড় পর্দায় আসতে চাইনি। ভালো মানের গল্প খুঁজছিলাম, যা আমার সঙ্গে মানানসই। এই ছবির গল্প অসাধারণ। আমরা যে ধরনের ছবি দেখে অন্যদের কাছে ভালো লাগার অনুভূতি প্রকাশ করি, এটি তেমনই। শুধু তা-ই নয়, আমার ভক্তরা যে ধরনের গল্পের ছবি দেখে অভ্যস্ত, এটি ঠিক তেমনই। অভিনয়ের পাশাপাশি ছবিতে আমার গাওয়া গানও থাকছে।’

এর আগে দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনায় ‘শিকারী’ ছবিতে শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয় করেন শ্রাবন্তী। এবার শুধুই বাংলাদেশের প্রযোজিত ছবিতে কাজ করছেন। বললেন, ‘শুরুর দিকে পরিচালক রাজের সঙ্গে কথা বলে খুব ভালো লেগেছে। তিনি আমাকে চমৎকারভাবে একটা গল্প শুনিয়েছেন। আশা করছি, দারুণ একটা কাজ হতে যাচ্ছে।’ শ্রাবন্তী আরও বলেন, ‘আমার পূর্বপুরুষদের বাড়ি বরিশালে। তাই বাংলাদেশের প্রতি আমার আলাদা টান কাজ করে। এখানে আবার কাজ করার সুযোগ পাওয়ার অনুভূতি দারুণ।’

কক্সবাজারে ‘যদি একদিন’ ছবির শুটিংয়ে তাহসান ও শ্রাবন্তী। ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারে ‘যদি একদিন’ ছবির শুটিংয়ে তাহসান ও শ্রাবন্তী। ছবি: সংগৃহীত

শ্রাবন্তীকে নেওয়া প্রসঙ্গে পরিচালক রাজ বলেন, ‘আমার এই ছবির অরিত্রী চরিত্রে যেমন অভিনেত্রী দরকার, শ্রাবন্তীর মধ্যে সেই গুণ আছে। এরপর অনেক ভেবে চিত্রনাট্য অনুযায়ী তাঁকে নির্বাচন করেছি। শুটিংয়ের সময় মনে হয়েছে, আমি ভুল করিনি। আমার কথার সঙ্গে দর্শকেরাও একমত হবেন, ছবিটি মুক্তির পর।’

‘যদি একদিন’ রাজের পাঁচ নম্বর চলচ্চিত্র। এই ছবির অন্য অভিনয়শিল্পীরা হলেন তাসকিন রহমান, সাবেরী আলম, আফরিন প্রমুখ। রাজ পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘প্রজাপতি’তে জাহিদ হাসান, মৌসুমী ও মোশাররফ করিম অভিনয় করেন। পরের ছবির মধ্যে ‘ছায়া-ছবি’তে আরিফিন শুভ ও পূর্ণিমা (মুক্তি প্রতীক্ষিত); ‘তারকাঁটা’য় মৌসুমী, আরিফিন শুভ ও বিদ্যা সিনহা মিম এবং সর্বশেষ ‘সম্রাট’ ছবিতে অভিনয় করেন শাকিব খান, অপু বিশ্বাস ও ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত।