ফারুক ও ববিতার সাক্ষাৎকার

ফারুক ও ববিতা। ছবি: প্রথম আলো
ফারুক ও ববিতা। ছবি: প্রথম আলো
>জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬-তে এবার আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী ফারুক ও ববিতা। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে দুজনকে তিনটি করে প্রশ্ন করা হয়েছিল। উত্তর দিয়েছেন তাঁরা।

প্রশ্ন: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন। আপনার দায়িত্ব তো বেড়ে গেল। কীভাবে দেখছেন বিষয়টিকে?
ফারুক: এটা অনেক বড় সম্মান। আমরা সারা জীবন চলচ্চিত্রে যে মেধা, শ্রম দিয়েছি, যে কষ্ট করেছি, তারই জন্য এই সম্মাননা। আমার মনে হয়, শিল্পীদের জন্য আরও কিছু করতে পারে সরকার। যেমন আমাদের ভিআইপি স্ট্যাটাস নেই, এটা থাকা উচিত। আমি আমাদের চলচ্চিত্র পরিবারকে ভালো রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
ববিতা: আমরা শিল্পীরা সমাজের প্রতি, চলচ্চিত্রের প্রতি দায়বদ্ধ থাকি। এই সম্মাননা যে কত বড় আনন্দের, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এখন মনে হচ্ছে, এত বছর ধরে যে কাজ করে এসেছি, তার একটা স্বীকৃতি পেলাম। একা তো কিছু করা যায় না। করব সবাই মিলে। সচেতনভাবে ভালো কাজ করতে হবে।

প্রশ্ন: চলচ্চিত্রের জন্য কী করতে চান?
ফারুক: পুরো চলচ্চিত্রশিল্প নিয়ে ভাবতে গিয়ে দেখি, একদিকে আছেন অসহায় শিল্পী, অন্যদিকে কর্মক্ষেত্রে আনন্দ পাওয়া শিল্পী। এই ভাগাভাগি ঠিক নয়। সবাইকে মিলে যেতে হবে। এফডিসিতে শুটিং হওয়া উচিত। সে জন্য এফডিসিরও কাজ আছে। বর্তমান সরকার উদারমনা। যেসব কথা বলছি, আলোচনা তো হচ্ছে, একদিন তা সত্য হবে। আশা নিয়েই বাঁচতে চায় মানুষ।
ববিতা: এখন যে সময়, তাতে নতুনদের জন্য জায়গা করে দিতে হবে। এখন মেধাসম্পন্ন অনেক তরুণ শিল্পী আছেন। তাঁরা যেন ভালো কাজকে অগ্রাধিকার দেন। আমি ভালো ছবি করতাম মনের খিদে মেটানোর জন্য। বিনা পারিশ্রমিকেও কাজ করেছি, যখন দেখেছি ছবিটা ভালো। টিকে থাকতে হলে সব ধরনের কাজই করতে হবে, কিন্তু নিজেকে চলচ্চিত্রের ইতিহাসে দৃষ্টান্ত হিসেবে রাখার জন্য ভালো কাজ করতে হবে।

প্রশ্ন: আপনার সঙ্গে আরও একজন অসাধারণ শিল্পী পাচ্ছেন আজীবন সম্মাননা। তাঁর ব্যাপারে কিছু বলুন।
ফারুক: ববিতা তো সত্যজিৎ রায়ের নায়িকা। আন্তর্জাতিক খ্যাতি আছে তাঁর। ববিতার সঙ্গে আমার বেশ কিছু সুপারহিট ছবি আছে। যে বৈশিষ্ট্য অনেকের মধ্যে নেই, তা আমি ববিতার মধ্যে দেখেছি। সাধারণ জীবনেও তাঁর ব্যবহার অতুলনীয়। সবার থেকে একটু আলাদাই মনে হয়েছে ববিতাকে।
ববিতা: ফারুক ভাই তো অসাধারণ শিল্পী। প্রতিবাদী গ্রামের যুবকের চরিত্রে তাঁর তুলনাই হয় না। আমি তাঁর সঙ্গে যে কটি ছবিতে কাজ করেছি, সে অভিজ্ঞতা থেকে বলব, তিনি অনেক বড় শিল্পী। আমি যদিও ফারুক ভাইয়ের আগে চলচ্চিত্রে এসেছি, কিন্তু একসঙ্গে অনেক ছবিতে নায়ক-নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছি। একসময়ের সে নায়ক-নায়িকা এবার আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন-এটা নিঃসন্দেহে অনেক আনন্দের।