আমার বয়স নাকি ৪৬!

জয়া আহসান ছবি: সংগৃহীত
জয়া আহসান ছবি: সংগৃহীত

নতুন ছবি ‘ক্রিসক্রস’-এর টিজার ও গান মুক্তির পর অপ্রত্যাশিত সাড়া পেয়েছেন জয়া আহসান। এসব কিছুর পাশাপাশি দু-একটি বিষয় বাংলাদেশের গুণী এই শিল্পীকে নাকি ভাবাচ্ছে। এ নিয়ে তিনি ফেসবুকে পোস্টও দিয়েছেন। জয়াকে এখন সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে বয়সের ভুল তথ্য প্রচার। কিছু সংবাদমাধ্যম এমনটা করে যাচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, জয়ার পারিবারিক তথ্যও ভুলভাবে গণমাধ্যমে উপস্থাপিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এ নিয়ে খানিকটা চিন্তিত দেশে ও দেশের বাইরে একাধিক পুরস্কার পাওয়া বাংলাদেশি অভিনেত্রী জয়া আহসান।

জয়া আহসান বলেন, ‘ইদানীং বেশ কয়েকজন বিভিন্ন পত্রপত্রিকা/উইকিপিডিয়ার তথ্যসূত্র টেনে আমার বয়স নিয়ে বেশ চর্চা করছেন। বলা হচ্ছে, আমার বয়স নাকি ৪৬! গুজব-গুঞ্জন আমি বরাবরই খাবারের লবণের মতো উপভোগ করেছি। দু-একজন সমবয়সী কিংবা আমার চেয়ে বয়সে বড় শ্রদ্ধাভাজন কয়েকজন অভিনেত্রী নিজেদের অধিকার মনে করে গণমাধ্যমে আমার বয়সের ভুল তথ্য নিয়ে চর্চা করেছেন—বিষয়টি মজার। এত দিন উপভোগ করেছি, তবে খুব সম্ভবত আমার চুপ থাকাটায় অনেকে “মৌনতা সম্মতির লক্ষণ” হিসেবে ধরে নিয়েছেন। নিন্দুকেরাও আমার বয়সের ভুল তথ্য প্রচার করে আনন্দ পাচ্ছেন!’

যে বা যাঁরা বয়স নিয়ে এত বেশি আনন্দে মেতে উঠছেন, তাঁদের উদ্দেশে জয়া বলছেন, ‘আমি প্রথম ও শেষবারের মতো সবার উদ্দেশে বলতে চাই, বয়স নয়, একজন শিল্পীর প্রকৃত পরিচয় হওয়া উচিত তাঁর কাজে। ৪৬ কিংবা ৫৬ কিংবা তার চেয়ে বেশি বয়স হলেই অভিনেত্রীরা কাজের অযোগ্য কিংবা তারুণ্যদীপ্ত চরিত্রে অভিনয় করতে পারবেন না—এমন ধারণা বিশ্বের কোনো চলচ্চিত্রশিল্পই পোষণ করে না। তাই ব্যক্তি জয়া আহসানের যে বয়স, তা নিয়ে আমি এতটুকু বিচলিত নই।’

ভুল তথ্য প্রচার করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেয় করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছেন জয়া। বিশেষ করে গুণী এই অভিনেত্রীর কাজ যাঁরা পছন্দ করেন, দায়িত্বশীল যেসব সাংবাদিক তাঁকে নিয়ে দুই কলম লেখার মতো যোগ্য মনে করেন, তাঁরা ভবিষ্যতে বিষয়টি সংবেদনশীলভাবে দেখবেন বলেই আশা করছেন জয়া। তিনি বলেন, ‘প্রকৃত সত্য হলো, ৪৬ বছর আগে আমার বাবা-মার বিয়ে তো দূরের কথা, দেখাও হয়নি। এত দিন বিষয়টি হেসেই উড়িয়ে দিয়েছি। তবে ইদানীং বিষয়টি মাত্রাতিরিক্ত আকার ধারণ করায় পরিবার ও কাছের বন্ধুদের অনুরোধে লিখতে বাধ্য হয়েছি।’

বিরসা দাশগুপ্তের ‘ক্রিসক্রস’ ছবির টিজার ও গান মুক্তি পর অপ্রত্যাশিত সাড়া পেয়েছেন জয়া। বললেন, ‘ভালো হোক কিংবা মন্দ—আমার অভিনীত চলচ্চিত্র কিংবা আমার কাজ নিয়ে বেশির ভাগ দর্শকই গুরুত্বের সঙ্গে মতামত দেন। কখনো আমার কাজ ভক্তদের গর্ব বাড়িয়ে দেয়, কখনো আমি তাঁদের হতাশ করি। তবে যাঁরা আমার কাজ অপছন্দ করেন, আমাকে অপছন্দ করেন—তাঁদের আমি অপছন্দ করি না। বরং তাঁদের ব্যাপারে আমি আরও অনেক বেশি যত্নশীল। আমি মনে করি, গঠনমূলক সমালোচনাই একজন শিল্পীকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়। আমি আমার অভিনয়জীবনে বরাবরই সমালোচকদের দেখানো পথে চলার চেষ্টা করেছি। তবে শুধু “বলার জন্য বলা” নেতিবাচক মন্তব্য কখনো আমার ভেতর প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে আমি নির্ভার।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, ‘ক্রিসক্রস’ ছবি পাঁচজন নারীর লড়াকু জীবনের গল্প নিয়ে। এই পাঁচটি চরিত্রের নাম ইরা, সুজি, মিস সেন, রূপা আর মেহের৷ পাঁচজনের আলাদা জীবন৷ কিন্তু কোথায় যেন তাদের প্রত্যেকের চমৎকার একটি মিল রয়েছে। তারা লড়াই করছে সমাজে টিকে থাকার জন্য। নিজের অবস্থান তৈরির পাশাপাশি অধিকার আদায়ের জেদ তাদের মনে।

সবশেষে জয়া আহসান তাঁর সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, ‘একজন অভিনেতার কাজ নিয়ে লেখার সময় যদি তাঁর বয়সের বিষয়টি না আসে, একজন অভিনেত্রীর ক্ষেত্রেও সে বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিকভাবে আসাটা কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে কিন্তু আমাদের ভেবে দেখার অবকাশ রয়েছে।’