ঢাকায় তিন ইউরোপীয় দেশের যৌথ সাংস্কৃতিক যাত্রা

চুক্তি সাক্ষর শেষে বাংলাদেশের সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সঙ্গে ক্লাস্টার সদস্য ও অতিথিরা। ফ্রাঙ্কো-জার্মান দূতাবাস, ঢাকা, ১১ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো
চুক্তি সাক্ষর শেষে বাংলাদেশের সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সঙ্গে ক্লাস্টার সদস্য ও অতিথিরা। ফ্রাঙ্কো-জার্মান দূতাবাস, ঢাকা, ১১ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর যৌথ উদ্যোগ হলো ইউরোপিয়ান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কালচার (ইউনিক)। সংগঠনটি এবার বাংলাদেশে নিজের যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে।

সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য প্রচারণা ও সংস্কৃতির পারস্পরিক বোঝাপড়ায় বুধবার ফ্রাঙ্কো-জার্মান দূতাবাসে ইউনিক ক্লাস্টার সদস্যদের মধ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এখন থেকে ইউনিক ক্লাস্টারে একসঙ্গে কাজ করবে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ, ব্রিটিশ কাউন্সিল ও গ্যোটে ইনস্টিটিউট।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। উপস্থিত ছিলেন ইইউর রাষ্ট্রদূত রেন্সে তিরিঙ্ক, ফরাসি রাষ্ট্রদূত আন মারি বুহ্দাঁ, ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেক এবং জার্মানির রাষ্ট্রদূত টমাস প্রিনজ। বাংলাদেশে ক্লাস্টারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ, ব্রিটিশ কাউন্সিল ও গ্যোটে ইনস্টিটিউট বিস্তৃত পরিসরে নিয়মিত নানা কার্যক্রম আয়োজন করবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাস হাজার বছরের। আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাল নিয়ে প্রকল্প আকারে কাজ করার যে যাত্রা আজ শুরু হয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমরা ইউনিকের সকল কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।’

ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের পরিচালক বারবারা উইকহ্যাম বলেন, ‘ঐতিহ্য ও নিজস্ব সংস্কৃতির দিক থেকে বাংলাদেশ অত্যন্ত সমৃদ্ধ। বৃহৎ পরিসরে এ ঐতিহ্যের আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন অর্জনে সহায়তা করতে ব্রিটিশ কাউন্সিল প্রায় ৭০ বছর ধরে কাজ করছে। বাংলাদেশ সরকারের যৌথ সহযোগিতায় বাংলাদেশের সৃষ্টিশীল প্রেক্ষাপটের চিত্র তৈরিতে আমরা সাম্প্রতিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছি এবং এ উদ্যোগের একটি শক্ত ভিত্তি তৈরিতে আমরা আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ-গ্যোটে ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ করছি। যা একই সঙ্গে প্রত্নতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিস্তৃত প্রচারণায় আন্তসাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধির পাশাপাশি, এ খাতে দক্ষতার সমন্বয় ও প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।’

আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার পরিচালক ব্রুনো প্লাস রাজধানীতে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের তিনটি কেন্দ্র রয়েছে জানিয়ে বলেন, বছরে এক শর মতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করছে। ইউনিক বাংলাদেশ তৈরির মাধ্যমে ইউরোপ ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।

গ্যোটে ইনস্টিটিউটের পরিচালক কারস্টেন হ্যাকেনব্রক জানান, অতীতে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ ও গ্যোটে ইনস্টিটিউট একসঙ্গে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি প্রকল্প ও কর্মশালায় বাংলাদেশের ঐতিহ্য যেমন-ফ্যাশন ডিজাইন, স্থাপত্য নিদর্শন ও পাট দিয়ে নির্মিত আসবাবপত্র নিয়ে কাজ করেছে। ইউনিক বাংলাদেশের এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে আমাদের বাংলাদেশি অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করবে বলে মনে করেন তিনি।

আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ, ব্রিটিশ কাউন্সিল ও গ্যোটে ইনস্টিটিউট নিয়মিতভাবে দেশের বিভিন্ন উৎসব যেমন-ছবি মেলা, ঢাকা আর্ট সামিট, ঢাকা লিট ফেস্ট, উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসব, ঢাকা লোকসংগীত উৎসব ও দক্ষিণ এশীয় আর্ট বিয়েনাল আয়োজনে সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে। ঢাকায় আরবান স্টাডি গ্রুপসহ প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সুরক্ষার ইউনিক, স্থানীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করবে। সাধারণভাবে, সবার জন্য বন্ধ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের অধীনে থাকে ভবনগুলোতে অভিগম্যতা বৃদ্ধিতে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জাতীয় ঐতিহ্য দিবস ঘোষণায় ইউনিক পরামর্শক হিসেবে কাজ করবে। নানা কর্মসূচির মাধ্যমে ইউনিক, বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করবে।