'সালমান নয়, মান্নার মৃত্যু চলচ্চিত্রের ক্ষতি'

সালমান শাহ, মান্না ও মিশা সওদাগর
সালমান শাহ, মান্না ও মিশা সওদাগর

‘আমাকে কেউ যদি প্রশ্ন করেন, সালমান শাহ নাকি মান্না, কার মৃত্যুর পর চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে? আমি বলব, মান্না মারা যাওয়ার পর চলচ্চিত্রের বড় ক্ষতি হয়েছে। সালমান শাহ শুধু তারকাখচিত নায়ক ছিলেন, কিন্তু নায়ক মান্না ছিলেন গবেষক।’ বললেন চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় খলনায়ক ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর। রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আজ শনিবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উদ্যোগে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমের চুক্তি স্বাক্ষর ও লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, ‘দেশের চলচ্চিত্র এখন মহাসংকটের মধ্য দিয়ে পার হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, দেশের চলচ্চিত্রে এখন যে সংকট চলছে, তার জন্য মান্নার মৃত্যু দায়ী।’

প্রয়াত নায়ক মান্নাকে ‘চলচ্চিত্রের গবেষক’ উল্লেখ করে মিশা বলেন, ‘সালমান শাহ শুধু তারকাখচিত নায়ক ছিলেন। কিন্তু একটা ছবি কীভাবে চলবে, দেশের মানুষ কীভাবে আনন্দ পাবে, ইন্ডাস্ট্রি কীভাবে চলবে—তা নিয়ে ভাবতেন মান্না। আজ চলচ্চিত্রের যে সংকটময় অবস্থা, তার পঞ্চাশ ভাগের জন্য মান্নার মৃত্যু দায়ী। মান্না ঈদের সময় বুদ্ধি করে এমন একটা ছবি বানাতেন, সেই ছবির সাফল্য দেখে আরও ১০ কিংবা ১৫টা ছবি বানাতে প্রযোজকেরা এগিয়ে আসতেন।’

শুধু মান্না নয়, মিশা সওদাগর তাঁর বক্তব্যে চিত্রনায়ক জসীমকেও ‘চলচ্চিত্রের গবেষক’ হিসেবে অভিহিত করেন। জসীম ও মান্নার মতো ‘চলচ্চিত্রের গবেষক’ নেই বলে আজ চলচ্চিত্রের এই অবস্থা মনে করছেন তিনি।

২৮ বছর পর আবার শুরু হচ্ছে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতা। এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার। আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিবারের আহ্বায়ক আকবর পাঠান ফারুক, নায়ক এম এ আলমগীর, পরিচালক বদিউল আলম, সোহানুর রহমান সোহান, ছটকু আহমেদ, শাহ আলম কিরণ, এশিয়ান টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ, নায়ক জায়েদ খান ও সাইমন প্রমুখ।

মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমি চলচ্চিত্রের শিল্পীদের প্রতিনিধিত্ব করছি। আমি বলতে পারি, এ দেশে এখন কোনো শিল্পী নেই। এ মুহূর্তে বক্স অফিস মাতাবে, মানুষ দেখে খুশি হবে, মানুষের ভেতরটা তালি দেবে, দর্শক টাকা খরচ করে যাদের ছবি দেখতে যাবে—এ রকম শিল্পী আছে চার থেকে পাঁচজন। ১৮ কোটি মানুষের জন্য তা যথেষ্ট নয়। এখন শিল্পীর বড় অভাব!’

মান্না, সোহেল চৌধুরী, দিতি, অমিত হাসান, আমিন খান, মিশা সওদাগরসহ জনপ্রিয় অনেক শিল্পী ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার (বিএফডিসি) উদ্যোগে এর আগে ১৯৮৪, ১৯৮৮ ও ১৯৯০ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।