শুরু হলো চঞ্চল-তিশার 'আয়েশা'

আয়েশা নাটকের শুটিংয়ে চঞ্চল চৌধুরী ও তিশা
আয়েশা নাটকের শুটিংয়ে চঞ্চল চৌধুরী ও তিশা

একজন লাউ কাটছেন, আরেকজন পেঁয়াজ। তাঁদের মধ্যে চলছে বাক্যবিনিময়। কিন্তু পেঁয়াজটা মনমতো কাটা হচ্ছে না। যিনি লাউ কাটছেন, তাঁর মুখেও আসছে না জুতসই হাসিটা। তাই একবার-দুইবার করে মোট ছয়বার চেষ্টা করতে হলো চঞ্চল ও তিশাকে। এরপরই ক্যামেরায় ধরা পড়ল মনের মতো সেই দৃশ্য। নির্মাতা বললেন ‘কাট’। দৃশ্য ‘ওকে’ হওয়ার পর চেয়ার টেনে বসলেন চঞ্চল চৌধুরী। কতগুলো পেঁয়াজ কাটলেন? প্রশ্ন করতেই জবাব দিলেন চঞ্চল, ‘আধা কেজি তো হবেই!’

এরপর মধ্যাহ্নভোজ
দীর্ঘদিন পর নিয়ম ভেঙে গতকাল পাতে গরুর কালাভুনা তুললেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও নুসরাত ইমরোজ তিশা। কারণ দিনটি বিশেষ ছিল তাঁদের জন্য। ফারুকী-তিশার অষ্টম বিবাহবার্ষিকী। দিনটি শুটিং সেটে কাজের মধ্য দিয়েই কেটে গেল। দিনভর চলল আয়েশা নাটকের শুটিং। সেখানেই ছিল বিবাহবার্ষিকী উদ্যাপন। সেটে চঞ্চল চৌধুরী ও তিশা অভিনয় করছেন আবেদীন ও আয়েশা নামের দুটি চরিত্রে। মনিটরের পেছনে তাঁদের নির্দেশনা দিচ্ছেন ফারুকী।

১১ বছর পর টেলিভিশনের জন্য নাটক বানাচ্ছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। আনিসুল হকের লেখা আয়েশামঙ্গল উপন্যাস অবলম্বনে দুই পর্বে নাটকটি বানাচ্ছেন তিনি। পবিত্র ঈদুল আজহায় প্রচারের জন্য নাটকটি বানানো হচ্ছে। গতকাল ছিল তাঁদের শুটিংয়ের প্রথম দিন। সকাল নয়টা থেকে শুরু হয় কাজ। সত্তরের দশকের আবহ পর্দায় তুলে ধরতে সে কী চেষ্টা সবার। তেজগাঁওয়ের নাবিস্কো কোম্পানির কারখানায় তিনটি ঘর নিয়ে ফেলা হয়েছে সেট। সেই পুরোনো আমলের কাঁসার থালাবাসন, দেয়ালে ঝোলানো ‘মা’ লেখা হাতে সেলাই করা ওয়াল ম্যাট, ছোট চৌকিতে পাতা মাদুর। সবকিছুই মনে করিয়ে দেয়-আমরা এ সময়ে নেই, আছি সত্তরের দশকের শেষ ভাগে।

এর আগেও ফারুকী এই উপন্যাসটি নিয়ে নাটক বানিয়েছিলেন, তাতে অভিনয় করেছিলেন আহমেদ রুবেল ও বন্যা মির্জা। শুটিং করতে গিয়ে আবারও পুরোনো কাজ নির্মাতাকে প্রভাবিত করছে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে নির্মাতা বলেন, ‘১৮ বছর আগের থেকে এখনকার সময়ে অনেক কিছুই বদলে গেছে। পুরোনো প্রেমই অনেক বছর পর আবার নতুন করে করা হলে যেমনটা হয়, এই কাজের বেলায় তা-ই হচ্ছে। অনেক কিছুই ফিরে ফিরে আসছে।’

কথা বলতে বলতে পরের দৃশ্যের প্রস্তুতি নিতে চলে গেলেন চঞ্চল চৌধুরী। আর খাওয়ার পর জানালা দিয়ে আসা দক্ষিণের বাতাসে চোখ লেগে গেল তিশার। হঠাৎ ফারুকীর মাথায় এল তিশার এই ঘুমিয়ে পড়াকে কাজে লাগানো যাক। আমাদের কথা থেমে গেল। ঘুমন্ত তিশাকে ক্যামেরায় ধারণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন ফারুকী। যে দৃশ্য শুট করার কথা ছিল, সেটা পিছিয়ে গেল।

সামনে আরও কয়েক দিন এভাবেই চলবে আয়েশা নাটকের শুটিং। পুরো দল নিয়ে ফারুকী যাবেন নোয়াখালী, এরপর আবার ঢাকায় ফিরে আরেক দফা হবে নাটকের শুটিং।