বাস্তবেরও নায়ক রজনীকান্ত

রজনীকান্তের (মাঝে) সঙ্গে সাত বছর বয়সী ইয়াসিন ও তার পরিবার
রজনীকান্তের (মাঝে) সঙ্গে সাত বছর বয়সী ইয়াসিন ও তার পরিবার

তাঁর চেহারা ‘নায়কসুলভ’ নয়। মুখে কাঁচা-পাকা দাড়ি। মাথায় পড়েছে টাক। কিন্তু এই মানুষটির সিনেমা মুক্তি পেলে দক্ষিণ ভারতে হইচই পড়ে যায়। নাম তাঁর রজনীকান্ত। শুধু সিনেমা দিয়ে নয়, সিনেমার বাইরের কাজ দিয়েও তিনি মানুষের মন কেড়েছেন। তার প্রমাণ মিলল আরেকবার। দক্ষিণ ভারতের এক শিশুর সারা জীবনের শিক্ষার দায়িত্ব নিয়ে দক্ষিণের এই বড় তারকা বাস্তবেও নায়ক হয়ে থাকলেন।

গল্পটি তামিলনাড়ুর ইরোদ জেলার ইয়াসিনের। সাত বছর বয়সী ইয়াসিন পড়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে, স্থানীয় পঞ্চায়েত স্কুলে। নিয়মিতই সে স্কুলে যায়। ১২ জুলাই স্কুলে যাওয়ার পথে একটি মানিব্যাগ কুড়িয়ে পায় সে। তার মধ্যে ছিল ৫০ হাজার রুপি। শিশু ইয়াসিন টাকাগুলো খুব সহজেই গায়েব করে দিতে পারত। কিন্তু তা না করে সে দিয়ে দেয় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের হাতে। তিনি পৌঁছে দেন পুলিশ সুপারের কাছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে যায় ছোট খবরটি। চোখ এড়ায় না রজনীকান্তেরও। তিনি খুঁজে বের করেন ইয়াসিন ও তার পরিবারকে। নিজের বাসায় ডেকে নেন তাদের। প্রিয় নায়ককে এভাবে সামনে দেখতে পাবে, কখনো ভাবেনি ইয়াসিন। শুধু তা-ই নয়, ওর এই সততার জন্য মেলে রজনীকান্তের কাছ থেকে উপহারও। যে উপহার অবাক করেছে ইয়াসিন ও তাঁর পরিবারকে। ইয়াসিনের সারা জীবনের পড়ালেখার পুরো খরচ জোগানের দায়িত্ব নিয়েছেন যে রজনীকান্ত।

শিশু ইয়াসিনের প্রতি রজনীকান্তের এই মুগ্ধতার কারণ কী? ‘এই বয়সে মানুষ মানুষকে ঠকায়, চুরি করে, এমনকি সামান্য টাকার জন্যও মানুষকে মেরে ফেলে। আর এই সময়ে সে (ইয়াসিন) বলল, “এটা আমার টাকা নয়। ” এমনকি টাকাও ফেরত দিয়ে দিল। কী সততা! এটা অসাধারণ গুণ।’ বললেন থালাইভা, মানে রজনীকান্ত।

পড়ালেখার দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারটি নিয়ে রজনীকান্ত বলেন, ‘সে এখন সরকারি স্কুলে পড়ছে। সেখানেই তাকে পড়তে দেওয়া হোক। এরপর যেভাবেই সে পড়তে চায়, তার দায়িত্ব আমি নিলাম। প্রত্যেক শিশু তো অবশ্যই, অন্য সবার জন্যও সে বড় অনুপ্রেরণা।’ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস