রথযাত্রায় শুরু হলো যাত্রার পথচলা

এবার মৌসুমে ৮০-৮১টি দলের যাত্রা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে
এবার মৌসুমে ৮০-৮১টি দলের যাত্রা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে

জগন্নাথদেবের রথযাত্রার সঙ্গে বাংলা যাত্রার নিবিড় সম্পর্ক আদিকাল থেকে। রথযাত্রা মানেই ‘বাংলা যাত্রা’র সূচনা। আর যাত্রা বাঙালির প্রাচীন লোকশিল্প। আগের দিনে বাঙালি, অথচ যাত্রাগান শোনেনি, এমন মানুষ কম পাওয়া যাবে। এবার বাংলা যাত্রাগানের ১৪২৫ মৌসুমের সূচনা হলো ১৪ জুলাই রথযাত্রার দিন। এদিন মাঙ্গলিক আচার-আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শিল্পী নির্বাচন, পালা বাছাই আর তাতে গানের সুর বসানোর কাজ শুরু করেছে যাত্রাদল মালিকেরা।

দেশের প্রথম সারির যাত্রাদল আনন্দ অপেরার মালিক মোশাররফ হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে প্রত্যেক দলেই দু-তিনটি করে নতুন পালা রাখা হচ্ছে। তাতে সাবলীল নৃত্য-গীত আর অভিনয় মহড়াতে (পালার মহড়া) কিছু সময় প্রয়োজন হবে। নতুন-পুরোনো পালার মহড়াতে দলগুলোর সময় কাটবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত। পূজার সপ্তমীর দিন থেকে শুরু হবে পালা প্রযোজনা।

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে বৈধ নিবন্ধন প্রাপ্ত যাত্রার দল ছিল ৬৫টি। এ মৌসুমে নতুন নিবন্ধন পেয়েছে আরও পাঁচটি। এ ছাড়া কিছু দল সংগঠিত হয় জেলা প্রশাসকের লাইসেন্সে। সব মিলে ৮০-৮১টি দলের যাত্রা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মৌসুমে। বাগেরহাট থেকে সংগঠিত রাজবানী অপেরার মালিক নন্দিত অভিনেত্রী গঙ্গা রানী মণ্ডলের কাছ থেকে জানা গেছে, তাঁর নিজের দলসহ অন্য দলগুলো পৌরাণিক, ঐতিহাসিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও জীবনীমূলক পালায় সাজাচ্ছে। নতুন পালাগুলো লিখেছেন দেশীয় পালাকারেরা। এবার কয়েকটি রাজনৈতিক পালা মঞ্চে আসছে। এসব পালার ভাব-ভাষা-ছন্দে থাকবে দেশপ্রেম, জাতীয় জাগরণ ও গভীর ভ্রাতৃত্ববোধ। দেশীয় পালাকার শেখ লতিফ, চৈতন্য কুমার দেবনাথ, অধ্যাপক সফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক মঈন উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক অরবিন্দ মণ্ডল, কাজী জাহাঙ্গীর ও দেবদাস ঢালীর পালাগুলো সমাজজীবনকে সুষ্ঠুভাবে গড়ে তোলার দায়িত্ব পালনের সঙ্গে মানুষকে ধর্মবোধ, জাতীয়তাবোধ কিংবা মানবিকতাবোধে উদ্বুদ্ধ করবে, এমন আশা পোষণ করছেন যাত্রার নন্দিত নির্দেশকেরা।