কত্থক আর বেহালায় স্বস্তি

জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা ভবন মিলনায়তনে নৃত্য পরিবেশন করেন অনন্যা ওয়াফি রহমান
জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা ভবন মিলনায়তনে নৃত্য পরিবেশন করেন অনন্যা ওয়াফি রহমান

বৃষ্টি হয়নি। গরমের নিদারুণ দাপট ছিল। তাতে কী! নূপুর নিক্বণ আর বেহালার মন হরণ করা সুর শান্তির পরশ দিয়েছে জাতীয় সংগীত ও নৃতকলা ভবনের মিলনায়তনে। স্বস্তি মিলেছে সমাগত দর্শকের। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ছিল এ আয়োজন। এখানে কত্থক নৃত্য পরিবেশন করেন অনন্যা ওয়াফি রহমান। বেহালায় সুর তোলেন মাহামুদুল হাসান। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা ভবন মিলনায়তনে নৃত্য ও যন্ত্রসংগীত দিয়ে সাজানো অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে নৃত্য মঞ্চ ও শাস্ত্রীয় সংগীত পরিষদ।

ছিমছাম গোছানো আয়োজন। ছিল না অতিথির বক্তৃতা বা আলোচনা। উপস্থাপকের ঘোষণার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। শুরুতে প্রদীপ প্রজ্বালন করেন সমাগতরা। এরপর শুরু হয় কত্থক নাচ। মুদ্রার সঙ্গে অভিব্যক্তির সমন্বয়ে অনন্যার পরিবেশিত কত্থকের সৌন্দর্যে এগিয়ে যায় আয়োজন। ৪০ মিনিট ব্যাপ্তির পরিবেশনায় দর্শক মুগ্ধ হয়ে দেখেন। সরাসরি বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে তাল রেখে কত্থকে নানা আঙ্গিক উপস্থাপন করেন এই শিল্পী। বিলম্বিত লয়ে বন্দনার আশ্রয়ে শুরু হয় পরিবেশনা। ত্রিতালে ধাপে ধাপে এগিয়ে যায় পরিবেশনা। আঙ্গিকের বিস্তারে একে একে উপস্থাপিত হয় ঠাট, আমোদ, টুকরা, পরন, তেহাই, গৎভাও। দ্রুত লয়ের মাধ্যমে এ পর্বের সমাপ্তি হয়। এরপর মীরার ভজন। কৃষ্ণের প্রতি প্রবল অনুরাগী মীরার হৃদয়ের আকুলতা ফুটে ওঠে এতে। তারানা দিয়ে শেষ হয় শিল্পীর পরিবেশনা।

নাচ শেষ হলো। দৃষ্টির মুগ্ধতা শেষে শ্রবণের পালা। বেহালার মিষ্টি সুরকে সঙ্গী করে মঞ্চে আসেন মাহামুদুল হাসান। রাগ যোগের মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর পরিবেশনা। বিলম্বিত ত্রিতালের মাধ্যমে শুরু করে পদার্পণ করেন মধ্যলয়ে। এরপর বাজিয়ে শোনান দ্রুত ত্রিতালে। ঝিঞ্ঝোটি রাগ-আশ্রিত ছোট্ট একটি ধুনের মাধ্যমে শেষ হয় বেহালার বাদন। সমাগত দর্শকের শ্রবণযন্ত্রে মিলল স্বস্তি।

পরিবেশনা শেষে মঞ্চে আসেন অনুষ্ঠানের অতিথিরা। দুই শিল্পীর পরিবেশনার মূল্যায়ন করে কথা বলেন নাট্যজন আতাউর রহমান, একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক, নৃত্যশিল্পী সাজু আহমেদ ও মাহমুদুল হাসান।