৩০ দিনের শিডিউল নষ্ট করেছেন তাঁরা

>২০১৫ সালের ঈদে মাহিয়া মাহির ছবি মুক্তি পেয়েছিল। অগ্নি ২ ছবিটি ব্যবসাসফলও হয়েছিল। এরপর তাঁর আরও ছবি মুক্তি পেলেও ঈদের ছবিতে দেখা যায়নি এই তারকাকে। এবারের ঈদুল আজহায় একসঙ্গে দুটি ছবি মুক্তির কথা শোনা যাচ্ছে এই অভিনেত্রীর। এরই মধ্যে প্রচারণায় নেমেও পড়েছেন এই তারকা। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শফিক আল মামুন
মাহিয়া মাহি। ছবি: আনন্দ
মাহিয়া মাহি। ছবি: আনন্দ

ঈদে আপনার দুটি ছবি মুক্তির বিষয়টি কি চূড়ান্ত?
জান্নাত চূড়ান্ত। এরই মধ্যে এই ছবিটি মুক্তির ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করে সবাইকে জানানো হয়েছে। শুনেছি মনে রেখ ছবিটিও মুক্তি পাবে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সে রকম প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে শুনেছি। কিন্তু ছবির পরিচালক, প্রযোজক কেউই আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাননি।

কিন্তু আপনি তো প্রচারণায় নেমেছেন?
জান্নাত ছবির প্রচারণা করছি। বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সবাইকে ছবিটি হলে গিয়ে দেখার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচারণা চালাচ্ছি। তবে মনে রেখ ছবিটির প্রচারণার ব্যাপারে প্রযোজক যেহেতু কিছু বলেননি, তাই আপাতত জান্নাত-এর প্রচারণার মধ্যেই আছি।

কোন ছবিকে এগিয়ে রাখবেন?
দুটি দুই ধরনের ছবি। জান্নাত গ্রামীণ পটভূমিতে তৈরি একটি সামাজিক ছবি। গল্পে জঙ্গিবিরোধী কিছু বক্তব্যও আছে। অন্যদিকে মনে রেখ বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ছবি। ছবির মধ্যে ধামাকা আছে। দর্শকের কাছে ছবিটি ভালো লাগবে। তবে জান্নাত ছবিতে কাজ করে বেশি শান্তি পেয়েছি।

২০১৫ সালে ‘অগ্নি ২’ দর্শক আলোচিত হয়েছিল। এবারের ঈদের ছবি তেমন আলোচনা তুলতে পারবে কি?
অগ্নি ২ যে ধরনের ছবি ছিল, এই দুটি ছবি সে ধরনের নয়। তবে ভিন্ন ভিন্ন গল্পের এই ছবি দুটি দর্শকদের হতাশ করবে না। কারণ, দুটি ছবিতেই কাজ করতে গিয়ে ব্যাপারটি অনুভব করেছি। যেহেতু চলচ্চিত্রের জন্য বর্তমান সময়টা ভালো যাচ্ছে না, তাই কিছুটা শঙ্কাও আছে। ঈদের এই দুটি ছবি আমার জন্য একধরনের চ্যালেঞ্জ। একটি ছবিও অগ্নি ২-এর মতো আলোচনায় আসে, তাহলে আমার চলচ্চিত্রে কাজের পথ আরও প্রশস্ত হবে।

অনেকেই বলেন, আপনি বিয়ের পর থেকে বাছবিচার করে ছবিতে অভিনয় করছেন না।
সত্যি কথা বলতে কি, বেশ কিছু ছবির ব্যাপারে এই অভিযোগ সত্যি। তবে কাজ শেষ না হলে কিছুই বলা যাবে না। এই সব ছবিতে আমার বিপরীতে হয়তো বড় কোনো তারকা নেই। কিন্তু কিছু ছবিতে গুণী নির্মাতা ছবিগুলো নির্মাণ করছেন। তবে বেশ কিছুদিন হলো আবার আগের মতো বেছে কাজ শুরু করেছি।

সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, ‘ও মাই লাভ’ নামে একটি নতুন ছবির শুটিংয়ের আগের দিন কাজ বাতিল করে দিয়েছেন। কেন?
অনেক কারণ আছে। প্রথমত, ওই ছবিতে আমার বিপরীতে আরিফিন শুভকে নেওয়ার কথা বলে চুক্তি করিয়েছিলেন। এরপর দেখলাম শুভ নয়, ভারতের একজন নতুন ছেলেকে নেওয়া হয়েছে। সে না হয় গেল, ভয়াবহ ব্যাপার হলো ছবির গল্প নিয়ে আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। গল্পে আমার একটি ছোট বোনের চরিত্র ছিল। হঠাৎ শুটিংয়ের আগের দিন জানতে পারলাম গল্প পরিবর্তন করে ছোট বোনের ওই চরিত্র আমার প্যারালাল নায়িকা বানানো হয়েছে। মেয়েটিকে কলকাতা থেকে নেওয়া হয়েছে। ১ আগস্ট শুটিংয়ের আগের দিন প্রযোজকের কাছে চিত্রনাট্যটি চাইলে প্রথমে দিতে চাননি। পরে দিলে পড়ে দেখি, আমাকে আগে দেওয়া চিত্রনাট্যের সঙ্গে পরেরটার কোনো মিল নেই। বোনের চরিত্রটিরও দৃশ্য, সংলাপ বাড়ানো হয়েছে। তারপরও অল্প কিছু সংলাপ পরিবর্তন করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু প্রযোজক ও পরিচালক করতে চাননি। এসব কারণে কাজটি ছেড়ে দিয়েছি।

কিন্তু ছবিতে চুক্তির সময় পারিশ্রমিক বাবদ আপনি দশ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। প্রযোজক দাবি করছেন, ছবিতে কাজ না করেই আপনি পাঁচ লাখ রেখে বাকি পাঁচ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন?এটি তো আমার প্রাপ্য। ১ আগস্টের শুটিং শুরুর আগে আরও একবার আমার ১৫ দিনের শিডিউল শেষ মুহূর্তে এসে বাতিল করতে হয়েছে। আবার এবারও ১৫ দিনের শিডিউল নেওয়া ছিল। সেটাও নষ্ট হয়েছে। আমার মোট ৩০ দিনের শিডিউল নষ্ট করেছেন তাঁরা। ওই সময়টাতে আমি আরেকটি ছবির কাজ করতে পারতাম। এ কারণে সমঝোতার ভিত্তিতেই তো আমার শিডিউল বাতিল বাবদ পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছেন প্রযোজক। ছবির পরিচালক ও প্রযোজকের উপস্থিতিতেই শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে বসে শিল্পী সমিতির নেতা, পরিচালক সমিতির নেতাদের মধ্যস্থতায় এটি হয়েছে। এ নিয়ে তো আর নতুন করে ছবির প্রযোজক ও পরিচালকের কোনো কিছু বলার কথা নয়।

বর্তমানে কী কী ছবির শুটিং করছেন?
অবতার, আনন্দ অশ্রু, প্রেমের বাঁধন, অন্ধকার জীবন ও পবিত্র ভালোবাসা ছবিগুলোর কাজ চলছে। এর মধ্যে দু-একটি ছবির কাজ শেষের পথে। শিগগির ভিআইপি নামে নতুন একটি ছবির শুটিং শুরু হওয়ার কথা আছে। ছবির নায়ক সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর।