সেই মেকআপম্যানদের পাশে কুসুম শিকদার

কুসুম সিকদার। ছবি: ফেসবুক থেকে
কুসুম সিকদার। ছবি: ফেসবুক থেকে

২ এপ্রিল প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় স্বল্প আয়ের রূপসজ্জাকারীদের ওপর। প্রতিবেদনে বলা হয় এই করোনায় স্বল্প আয়ের মানুষেরা পরিবার–পরিজন নিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে হিমশিম খাচ্ছেন। কষ্টে দিন পার করছেন তাঁদের অনেকেই। ‘বিপদে কোনো তারকা আমাদের পাশে নেই’ এমন একটি শিরোনামের এই প্রতিবেদনটি অভিনেত্রী কুসুম শিকদারের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি রূপসজ্জাকারীদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। যোগাযোগ করেন প্রথম আলোর প্রতিবেদকের সঙ্গে।

এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী কুসুম শিকদার বলেন, ‘করোনার এই পরিস্থিতিতে দেশের অনেক মানুষ খুবই সমস্যায় আছেন। অনেকেই খেতে পারছেন না। তখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম একদমই যাঁরা হতদরিদ্র গরিব, কোনো উপার্জন নেই, তাঁদের সাহায্য করব। এমন সময় প্রথম আলোর প্রতিবেদনটি চোখে পড়ে। তখন আমি ভাবলাম আমার ইন্ডাস্ট্রিতেই আগে হেল্প করি। তারপর আমি মেকআপম্যানদের সঙ্গে যোগাযোগ করি।’

কুসুম শিকদারের এগিয়ে আসা নিয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন বর্তমান টেলিভিশন মেকআপম্যান সমিতির সভাপতি এবং ফিল্ম মেকআপম্যান সমিতির সহসভাপতি রূপসজ্জাকারী মোহম্মদ আলী বাবুল। তিনি বলেন, ‘বেশ কয়বার আমার সঙ্গে কুসুম শিকদারের কথা হয়েছে। তিনি তালিকা চেয়েছেন। সেগুলো সরবরাহ করা হয়েছে। শুনেছি, তিনি আমাদের সংগঠনের ছেলেদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। এটা খুবই খুশির খবর। কুসুম শিকদারকে সাধুবাদ জানাই মানবতার সেবায় এগিয়ে আসার জন্য। তাঁর জন্য মন থেকে দোয়া করি।’

কুসুম সিকদার। ছবি: ফেসবুক থেকে
কুসুম সিকদার। ছবি: ফেসবুক থেকে

অর্থসহায়তা পাওয়া টিটু হোসেন বলেন, ‘ভাই, এই দুঃসময়ে অর্থসহায়তা পেয়ে আমরা খুবই খুশি। এটা বলে বোঝানো যাবে না। আমি এত দিন এটা মনের মধ্যে রেখেছিলাম, লজ্জায় বলতে পারছিলাম না। আমার ঘরে বাজার পর্যন্ত ছিল না। এটাও আমি লজ্জায় বলতে পারি নাই। ঠিকঠাকমতো খাইতে পারি নাই। অনেক বড় বিপদে ছিলাম। অনেক খুশি। কেউ যেখানে আমাদের খোঁজখবর নেয় না, সেখানে কুসুম আপা অর্থসহায়তা দিয়ে এগিয়ে আসছেন।’

শুটিংয়ের আগে অভিনেত্রী মিমকে সাজাচ্ছেন একজন মেকআপম্যান। ছবি:সংগৃহীত
শুটিংয়ের আগে অভিনেত্রী মিমকে সাজাচ্ছেন একজন মেকআপম্যান। ছবি:সংগৃহীত

অর্থসহায়তা পাওয়া সোহেল হোসেন, দিদার হোসেনের মতো আরও অনেকের ঘরে সহায়তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাজার পৌঁছেছে। আরেকজন রূপসজ্জাকারী বলেন, বিকাশে আপা টাকা দিয়েছেন। আপাতত কিছুদিন ডাল–ভাত খেয়ে চলতে পারব। ভাই, এই টাকাটা পাওয়ার পর আমার চোখে পানি চলে এসেছে। এতটাই টাকাপয়সা নিয়ে সংকটে ছিলাম। টাকা দিয়ে আগে চাল কিনেছি।’

বেশ কয়েকজনের বিকাশ নম্বর না থাকায় টাকা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এই প্রসঙ্গে কুসুম শিকদার বলেন, ‘আমি মেকআপম্যানদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে নম্বর নিয়েছি। তাঁদের তালিকা ধরে সহায়তা করার চেষ্টা করেছি। যাঁদের মোবাইলে বিকাশ নম্বর আছে, তাঁদের কাছে টাকা পৌঁছে গেছে। অনেকের মোবাইলে বিকাশ নেই, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আমার বাসায় এসে সহায়তা নিয়ে যাবেন।’

মাহিয়া মাহিকে সাজাচ্ছেন মেকআপম্যান। ছবি:সংগৃহীত
মাহিয়া মাহিকে সাজাচ্ছেন মেকআপম্যান। ছবি:সংগৃহীত

সাদ্দাম হোসেন বেশ কয়েকজনের নম্বর দিয়েছেন কুসুম শিকদারকে। তিনি এখনো টাকা পাননি। তিনি বলেন, ‘আপার ওপর আমরা খুবই খুশি। কুসুম শিকদার আপাকে আমি বেশ কয়েকজনের লিস্ট দিয়েছিলাম, সেখান থেকে ৭–৮ জন আমাকে ফোন দিয়ে জানিয়েছেন টাকা পেয়েছে। আমাদের সঙ্গে কথা হয়েছে, সবাই খুব খুশি। আমার সহকর্মী ভাইয়েরা যে সাহায্য পেয়েছেন, এতেই ভালো লাগছে। আর বেশ কয়েকজন আজ বা কালকের মধ্যেই সহায়তা পাবেন।’