জন্মদিনে মান্যতা ও বন্ধুদের চিঠি পেয়েছেন সঞ্জয়

সঞ্জয় দত্ত
সঞ্জয় দত্ত

জেলের বাইরে থাকলে হয়তো তাঁর জন্মদিনটা অন্য রকম হতো। কিন্তু জেলে থাকলেও সঞ্জয় দত্তকে স্মরণ করেছেন তাঁর প্রিয়জনেরা। পাঠিয়েছেন শুভেচ্ছা বার্তা ও চিঠি। স্ত্রী মান্যতার চিঠি-কবিতা আর বলিউডের বন্ধুদের কাছ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা লেখা অনেক চিঠি পেয়েছেন এ অভিনেতা।
বলিউডের অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের ৫৪তম জন্মদিন ছিল ২৯ জুলাই। অস্ত্র মামলায় দণ্ড পাওয়ায় জীবনের বিশেষ দিনটিতে কারাগারেই থাকতে হয়েছে এ ‘খলনায়ক’ তারকাকে। যোগাযোগের আর কোনো উপায় না থাকায় চিঠি লিখে প্রিয় মানুষটিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রণবীর কাপুর, রাজকুমার হিরানিসহ বলিউডের একাধিক তারকা-নির্মাতা।
এ প্রসঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে ‘মিড-ডে’ জানায়, বলিউড-সংশ্লিষ্ট অনেকেই সঞ্জয়কে খুব পছন্দ করেন। কিন্তু এবারের জন্মদিনে তাঁদের ছেড়ে একা একা পুনের ইয়েরাওয়াড়া কারাগারে বন্দী থাকতে হয়েছে সঞ্জয়কে। সেখানে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হলো চিঠি। বিশেষ দিনটিতে তাঁকে স্মরণ করে তাঁর শূন্যতা অনুভবের কথা ও জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সঞ্জয়ের কাছের মানুষজন। চিঠিগুলোতে আরও অনেক আবেগপূর্ণ অনুভূতির কথাও ঠাঁই পেয়েছে।
সঞ্জয়ের জন্মদিনকে বিশেষ করে তুলতেই চিঠিগুলো তাঁকে লেখা হয়েছে। কাছের বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীরা আগেই চিঠিগুলো লিখে সঞ্জয়ের স্ত্রী মান্যতাকে দিয়েছিলেন। তিনি হিসাব-নিকাশ করেই চিঠিগুলো পোস্ট করেছেন, যাতে বিশেষ দিনটিতে সেগুলো সঞ্জয়ের হাতে গিয়ে পৌঁছায়।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মাসে একবারের বেশি দেখা করার অনুমতি নেই সঞ্জয়ের। তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য আগস্ট মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে মান্যতাকে। তিনি অবশ্য জন্মদিনে স্বামীকে চমকে দেওয়ার জন্য যমজ দুই সন্তানকে নিয়ে ইয়েরাওয়াড়া কারাগারে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র ২৫ দিন আগে সঞ্জয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন তাঁর বোন প্রিয়া।

এ ছাড়া, সঞ্জয়ের আইনজীবীও ঘন ঘন তাঁর সঙ্গে দেখা করছেন। এসব কারণে জন্মদিন হওয়া সত্ত্বেও বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী এ তারকা অভিনেতার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পায়নি তাঁর স্ত্রী ও যমজ দুই সন্তান। দেখা করার সুযোগ না পেলেও জন্মদিনের উপহার হিসেবে স্বামীকে ব্যক্তিগত চিঠি ও নিজের লেখা কবিতা পাঠিয়েছেন মান্যতা।  

এদিকে ২২ জুলাই ছিল সঞ্জয়পত্নী মান্যতার জন্মদিন। স্ত্রীকে জন্মদিনের উপহার হিসেবে শুকনো গোলাপ ফুলের পাপড়ি এবং নিজ হাতে লেখা কবিতা পাঠিয়েছিলেন সঞ্জয়। আগেই কারাগারের বাগান থেকে তিনি একটি গোলাপ ফুল সংগ্রহ করেছিলেন। পরে সেটা বইয়ের পাতার ভাঁজে রেখে শুকিয়ে নেন। শুকনো গোলাপ ফুলটির পাপড়ি ছাড়িয়ে তা পাঠিয়ে দেন মান্যতাকে নিয়ে লেখা কবিতার সঙ্গে।

প্রসঙ্গত, বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ২০ বছর আগের এক মামলায় গত ২১ মার্চ সঞ্জয়কে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। এই অস্ত্র মামলায় আগে দেড় বছর সাজা খেটেছেন সঞ্জয়। আদালতের রায় অনুযায়ী আরও সাড়ে তিন বছর জেলের ঘানি টানতে হবে তাঁকে। রায় হওয়ার পর থেকেই নির্ধারিত সময়ের আগে মুক্তি পাওয়ার সব রকম চেষ্টা চালিয়েছেন সঞ্জয়। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। শাস্তির রায় পুনর্বিবেচনার শেষ চেষ্টা হিসেবে সম্প্রতি তিনি কিউরেটিভ পিটিশন করেছিলেন। কিন্তু তা খারিজ করে দিয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। এতে করে সঞ্জয়ের কারামুক্তির সব পথই বন্ধ হয়ে গেছে।

১৯৯৩ সালের মার্চ মাসে মুম্বাইয়ে ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি স্থানে ১২টি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরিত হয়েছিল। সে সময় ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণে মারা গিয়েছিল ২৫৭ জন। আহত হয়েছিল ৭০০ জনের বেশি।

ভয়াবহ ওই সহিংসতার পর বিস্ফোরণ মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে ১৯৯৩ সালের এপ্রিলে সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করে মুম্বাই পুলিশ। ২০০৬ সালে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগটি বাদ দেওয়া হয়। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি পেলেও সঞ্জয়কে অবৈধ অস্ত্র রাখার অপরাধে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।