ধরপাকড়ে দুশ্চিন্তা, স্থায়ী নাগরিকত্ব চান তাঁরা

ভেনেজুয়েলার সাংবাদিক ইউলিমার নানেস স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি নিয়ে ২০১০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। কিন্তু সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পর বিভিন্ন বিমানবন্দরে হুলুস্থুল-বিশৃঙ্খলা দেখে নানেস সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি মার্কিন মুলুকের স্থায়ী নাগরিকত্ব চাইবেন।
ট্রাম্পের ওই নিষেধাজ্ঞা এখন আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে আরও অনেক বিদেশি যাঁরা বৈধ বা অবৈধভাবে বসবাস করছেন, এখন তাঁরা ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্ক ও বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। ৩৪ বছর বয়সী নানেস বললেন, তিনি এমনটা মনে করছেন না যে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার লোকজনের বিরুদ্ধে লাগবেন। তবে সবকিছুই এত অস্থিতিশীল আর নিয়মকানুনের এত পরিবর্তন দেখে ভয় লাগে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত ২৭ জানুয়ারি এক নির্বাহী আদেশে মুসলিমপ্রধান সাতটি দেশের মানুষের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ৯০ দিনের জন্য এবং সিরীয় শরণার্থীদের জন্য অনির্দিষ্টকাল বন্ধ করে দেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিমানবন্দরে বহু মানুষ আটকা পড়লে ব্যাপক হট্টগোল দেখা দেয়। নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত দেশ ইরান, ইরাক ও সিরিয়ার অনেক মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রে অবতরণের পর পরবর্তী বিমানে করে ফেরত পাঠানো হয়। মার্কিন ভিসা থাকা সত্ত্বেও অনেকে বাইরে থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে পারছিলেন না। এসব প্রসঙ্গ টেনে নানেস বলেন, তিনি বিস্মিত ও আতঙ্কিত।
নানেসের মতো অনেকেই এখন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের বৈধতা হালনাগাদ করতে ছোটাছুটি শুরু করেছেন। কেউ কেউ কাজের ভিসাকে স্থায়ী বসবাসের অনুমতিতে উন্নীত করতে চাইছেন। আর গ্রিনকার্ডধারী ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্বের আবেদন করছেন। মায়ামির অভিবাসন আইনজীবী লোরেন পেরেস বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয়ের পর থেকেই লোকজনের পাগলামি শুরু হয়েছে। তবে তাঁদের ভয় একেবারে ভিত্তিহীন নয়।
পেরেসের মতো ইমিগ্রেশন অ্যাটর্নিরা বললেন, তাঁরা একটি নির্বাহী আদেশের খসড়া অনুলিপি পেয়েছেন। এটি বাস্তবায়িত হলে কাজের ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতার দরকার হবে। আর যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা বিদেশিদের জন্য নিজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসাটা আরও কঠিন হয়ে যাবে। অবশ্য ট্রাম্প কবে এই আদেশে সই করবেন, তা জানা যায়নি। তাঁর স্বাক্ষরের আগেই মার্কিন নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বসবাসের অনুমতি জোগাড় করতে বিদেশিরা উঠেপড়ে লেগেছেন।
মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউট জানায়, ফ্লোরিডায় প্রায় সাড়ে ছয় লাখ অভিবাসীর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের বৈধ কাগজপত্র নেই। পিউ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক জরিপ বলছে, মায়ামিতে কাগজপত্রবিহীন বিদেশির সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের সব শহরের মধ্যে পঞ্চম সর্বোচ্চ। আর এ সংখ্যা সাড়ে চার লাখ।