'আমার দেশ থেকে বের হ' বলেই চলল গুলি

শ্রীনিবাস কুচিভোতলা। ছবি ফেসবুক।
শ্রীনিবাস কুচিভোতলা। ছবি ফেসবুক।

দেশ ছাড়ার হুমকি দিয়ে গুলি চালিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় এক প্রকৌশলীকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুজন। এর মধ্যে একজন ভারতীয়। গত বুধবার রাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসে ঘটনাটি ঘটেছে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ওই ভারতীয় প্রকৌশলীর নাম শ্রীনিবাস কুচিভোতলা। তাঁর বাড়ি অন্ধ্র প্রদেশের হায়দরাবাদে। কানসাসের গার্মিন ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি কোম্পানিতে কাজ করতেন তিনি। স্থানীয় সময় গত বুধবার রাতে অলোক মাদাসানি নামের এক বন্ধুর সঙ্গে কানসাসের স্থানীয় একটি পানাশালায় যান শ্রীনিবাস। মাদাসানিও পেশায় প্রকৌশলী। হঠাৎই এক ব্যক্তি পানশালায় ঢুকে তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। গুলি ছুড়তে ছুড়তে ৫১ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ‘আমার দেশ থেকে বের হ’ বলে বারবার চিৎকার করছিলেন।
মার্কিন পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গুলি ছোড়া ওই ব্যক্তি মার্কিন নৌবাহিনীর সাবেক একজন সদস্য। তাঁর নাম অ্যাডাম পুরিনটন। পুরিটনের ছোড়া গুলিতেই মারা যান শ্রীনিবাস। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন অলোক মাদাসানি। তাঁদের বাঁচাতে এসে স্থানীয় বাসিন্দা ল্যান গ্রিলট গুলিবিদ্ধ হন। অলোক ও গ্রিলটকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে অলোককে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

অ্যাডাম পুরিনটন। ছবি ফেসবুক।
অ্যাডাম পুরিনটন। ছবি ফেসবুক।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এক টুইট বার্তায় শ্রীনিবাসের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মর্মাহত।’ তিনি আরও বলেন, ৩২ বছর বয়সী শ্রীনিবাস কুচিভোতলার মরদেহ হায়দরাবাদে আনতে সাহায্য করা হবে।
এদিকে নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাস এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছে। মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ম্যারি কে কার্লসন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসীদের একটি দেশ। এ দেশ ভ্রমণের জন্য, কাজ করার জন্য, পড়াশোনার জন্য এবং বাস করার জন্য সারা বিশ্ব থেকে যাঁরা আসেন তাঁদের স্বাগত জানায়।’
ওই বিবৃতি বলা হয়, ‘মার্কিন কর্তৃপক্ষ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করবে এবং অপরাধীকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবে। বিচার ওই পরিবারের বিষাদে ছোট হলেও সান্ত্বনা দেবে।’
এদিকে ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর মিজৌরি এলাকার অন্য একটি পানশালা থেকে অ্যাডামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হায়দরাবাদের জওহরলাল নেহরু টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে ২০০৫ সালে স্নাতক করেন শ্রীনিবাস। এরপর ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে। পড়াশোনা শেষে ২০১৪ সালে কানসাসের একটি কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন ভারতীয় প্রকৌশলী শ্রীনিবাস। তাঁর স্ত্রী সুনয়না ডুমানা ওই এলাকায় একটি প্রযুক্তিবিষয়ক কোম্পানিতে কাজ করেন।