হোয়াইট হাউসের জায়গায় সেন্ট বাসিল ক্যাথিড্রাল

.
.

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাপ্তরিক বাসভবন হোয়াইট হাউসের একাংশ ঢেকে যাচ্ছে মস্কোর রেড স্কয়ারের সেন্ট বাসিল ক্যাথিড্রালে। হোয়াইট হাউস ভবনের উপরিভাগে রয়েছে রাশিয়ার বিখ্যাত ‘অনিয়ন ডোম’ বা পেঁয়াজ-আকৃতির গম্বুজচূড়া। আর এটিই হচ্ছে এ সপ্তাহের যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ। নতুন এ সংখ্যা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বিতর্কে জড়িয়েছে ম্যাগাজিনটি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা ছাড়াও প্রচ্ছদ কপির অভিযোগ উঠেছে টাইম-এর বিরুদ্ধে।
১৮ মে প্রকাশিত টাইম ম্যাগাজিনের চলতি সংখ্যার প্রচ্ছদকে চিত্তাকর্ষক হিসেবে বর্ণনা করেছে বেশ কয়েকটি মার্কিন গণমাধ্যম। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ককে ঘিরে চলমান বিতর্কের মধ্যেই টাইম এই নতুন প্রচ্ছদ বের করল।

টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে উঠে আসা হোয়াইট হাউস ও সেন্ট বাসিল ক্যাথিড্রাল স্থাপনা দুটি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পরিচয় বহন করে। ওয়াশিংটনের অন্যতম আকর্ষণীয় এ ভবনটি মস্কোর সেন্ট বাসিল ক্যাথিড্রালের সোনালি, লাল, নীল, সাদা রঙের সরু গম্বুজে ঢেকে যাওয়ার বিষয়টিকে সাম্প্রতিক সময়ে তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক পরবর্তী ঘটনার প্রতীকী হিসেবে তুলে ধরা হয়।
জানা যায়, টাইম ম্যাগাজিন তাদের চলতি সংখ্যায় ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পেছনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে চলা তদন্তের ওপর বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এদিকে টাইম ম্যাগাজিনের এই প্রচ্ছদ নিয়ে জোর সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এটিকে টাইম ম্যাগাজিনের ‘অসাধারণ’ ও ‘সাহসী’ কাজ বলে মত দিয়েছেন কেউ কেউ। আবার কেউ কেউ একে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনে হোয়াইট হাউসকে ক্রেমলিনে রূপান্তরিত করেছে বলে মনে করছেন।

সারা স্পোজা নামের একজন টাইম-এর নতুন প্রচ্ছদ নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনা করে বলেন, ‘এটি রুশ অর্থডক্স গির্জা সেন্ট বাসিল ক্যাথিড্রাল, ক্রেমলিন নয়; যে শিল্পী এটি এঁকেছেন, তিনি নিশ্চয়ই ছোটবেলায় কারমেন স্যান্ডিগো (যুক্তরাষ্ট্রের শিশুতোষ ভিডিও গেম) খেলেননি।’

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের রসালো ম্যাড ম্যাগাজিন টাইম-এর বিরুদ্ধে তাদের প্রচ্ছদ কপির অভিযোগ তুলেছে। ম্যাড কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে হোয়াইট হাউস ও সেন্ট বাসিল ক্যাথিড্রাল নিয়ে একটি প্রচ্ছদ ছেপেছিল তারা। টাইম ম্যাগাজিনকে পাঠকের বাহবা পেতে ভবিষ্যতে আরও সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে ম্যাড।

ওয়াশিংটনে গত সপ্তাহের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভকে গোপন তথ্য দিয়েছেন জানিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টসহ বেশ কয়েকটি মার্কিন গণমাধ্যমে খবর বেরোলে ট্রাম্পকে নিয়ে নতুন করে আবারও সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ অভিযোগকে অবশ্য ভিত্তিহীন এবং একে ‘পলিটিক্যাল সিজোফ্রোনিয়া’ বলে অভিহিত করেন। যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকেই ট্রাম্প-রাশিয়া সম্পর্ক নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।