বন্য প্রাণী বাঁচাতে ১৪৪ ধারা জারি

ভারতের আসাম রাজ্যের কাজিরাঙা জাতীয় অভয়ারণ্য বর্ষার পানিতে তলিয়ে যায়। বণ্যপ্রাণীদের রক্ষায় তাই জারি করা হলো ১৪৪ ধারা। ছবি: রয়টার্স
ভারতের আসাম রাজ্যের কাজিরাঙা জাতীয় অভয়ারণ্য বর্ষার পানিতে তলিয়ে যায়। বণ্যপ্রাণীদের রক্ষায় তাই জারি করা হলো ১৪৪ ধারা। ছবি: রয়টার্স

ভারতের আসাম রাজ্যে বন্য প্রাণীদের বাঁচাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা হলো ১৪৪ ধারা। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের বন্য প্রাণীদের বাঁচাতে মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।

ভারতের আসাম রাজ্যে কাজিরাঙা জাতীয় অভয়ারণ্য। শৃঙ্গ গন্ডার থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রাণীর বাসভূমি এটি। কিন্তু প্রতিবছর বর্ষাতেই ব্রহ্মপুত্র ও ডিফুর নদীর পানি ভাসিয়ে দেয় এই বিশাল অভয়ারণ্যকে। প্রাণীরা বাধ্য হয় জাতীয় সড়কে একটু উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিতে। কিন্তু দ্রুতগতির যানবাহন তাদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এবার তাই গাড়ির গতিনিয়ন্ত্রণে আনতে জারি করা হলো ১৪৪ ধারা।

৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে আসামের গোলাঘাঁটি জেলার বোকাখাত থেকে নগাঁও জেলার জাখলোবান্ধা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মহকুমা শাসক ধীরাজ দাস। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৪৪ ধারায় গাড়ি চলাচলকে ৩০ কিলোমিটার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। চালকেরা নিষেধাজ্ঞা মানছেন কি না, সেটা নজরদারিরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

চলতি মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রের পানি এখনই ভাসিয়ে দিয়েছে কাজিরাঙার বিস্তীর্ণ এলাকা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বর্ষার প্রাদুর্ভাবে আসামে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আসামে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে নয়জনের শরীরে মশাবাহিত এই রোগের জীবাণু মিলেছে।

আসামের পাশাপাশি অরুণাচল প্রদেশেও ভালো মতো থাবা বসিয়েছে বর্ষা। মাটি ধসে রাজ্যের ভালুক পাং এলাকায় ব্যাপক ধস নামায় সেনাবাহিনীকে উদ্ধারকাজে নামাতে হয়। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লে. কর্নেল সুনীল নিউটন জানিয়েছেন, ৭০ শিশু ও ৫০ নারীসহ দুই শতাধিক মানুষকে তাঁরা উদ্ধার করেছেন। ৭০টি গাড়িও আটকা পড়ে ধসে।

প্রবল বর্ষণে ত্রিপুরাতেও পাহাড় থেকে পানি নামায় বন্যার চেহারা নিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। মঙ্গলবার সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যে পশ্চিম ত্রিপুরা ও খোয়াই জেলায় ৫০টির বেশি ত্রাণ শিবিরে ২০০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। খোয়াই ও হাওড়া নদী এখনো ফুঁসছে। দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীকে সতর্ক করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।