কোবিন্দকে নিয়ে কী ভাবছেন মোদি-সোনিয়া?

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী রামনাথ কোবিন্দ ও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। ছবি: রয়টার্স
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী রামনাথ কোবিন্দ ও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। ছবি: রয়টার্স

ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ-মনোনীত প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দের জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এই নির্বাচনকে সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ হিসেবে দেখছেন।

এনডিটিভির খবরে জানা যায়, গতকাল রোববার নির্বাচনের প্রাক্কালে এক বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি বলেন, কোবিন্দের সঙ্গে তিনি খুবই আনন্দ নিয়ে কাজ করবেন। অন্য আরেক বৈঠকে সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, ফলাফল যা-ই হোক লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িকতার কাছে ভারতকে জিম্মি করা যাবে না।

আজ সোমবার ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। রাজধানী দিল্লির সংসদ ভবন ও দেশের রাজ্য বিধানসভাগুলোতে লোকসভা, রাজ্যসভা ও বিধানসভার সদস্যরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন ভারতের চতুর্দশ রাষ্ট্রপতিকে।

এবারের লড়াই দ্বিমুখী। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএর প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দ, বিহারের রাজ্যপাল ছিলেন। আর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএর প্রার্থী লোকসভার সাবেক স্পিকার মীরা কুমার।

নির্বাচনের এক দিন আগে গতকাল সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনের আগে এনডিএর সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদি। সংসদবিষয়ক মন্ত্রী এইচ এন অনন্ত কুমার জানান, পার্লামেন্ট হাউস লাইব্রেরি ভবনে ওই বৈঠক হয়েছে। সেখানে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতি অমিত শাহ এবং জোট দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ছিলেন লোক জনশক্তি পার্টির প্রধান রামবিলাস পাসওয়ান ও শিরোমণি আকালি দলের হরসিমরাত কাউর বাদল।

অনন্ত কুমার বলেন, মোদি লক্ষ করেছেন, ওডিশা, বিহার, তেলেঙ্গানা ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীরা কোবিন্দকে সমর্থন দিয়েছেন। কোবিন্দের প্রতি ৪০ দলের সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছেন মোদি।

এনডিএ সাংসদদের তরুণ ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারির পর যাঁরা ভোটার হচ্ছেন, তাঁদের মিলেনিয়াম ভোটার বলে চিহ্নিত করেছেন মোদি। ২০১৯ সালে হতে যাওয়া লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে তরুণ এবং নতুন ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন তিনি।

এদিকে গতকাল রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী মীরা কুমার, উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী গোপালকৃষ্ণ গান্ধী এবং কংগ্রেসের আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সোনিয়া গান্ধী।

এই বৈঠক গণমাধ্যমের জন্য উন্মুক্ত ছিল না। তবে বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলেন, কংগ্রেস সভানেত্রী ভোট দেওয়ার সময় দল নয়, বিবেকের কথা শোনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই নির্বাচনের ফল আমাদের বিরুদ্ধে যেতে পারে। তবে লড়াই কঠিন হতে হবে।’

সোনিয়া আরও বলেন, ‘সংবিধান ও আইন রক্ষা করে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতিকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু সংবিধান ও আইন দুইই আজ অবরুদ্ধ। এ কারণে আমাদের সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে।’

বৈঠকে অংশ নেওয়া কংগ্রেসের আইনপ্রণেতাদের মধ্যে ছিলেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। এ ছাড়া বিরোধী ১৬ দলের নেতারা এতে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এনসিপির প্রধান শরদ পাওয়ার, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া, বিএসপির সতীশ মিশ্র ও সমাজবাদী দলের রাম গোপাল যাদব। ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার প্রধান সিবু সরেনও এতে অংশ নেন।

তবে কোবিন্দের সমর্থক নীতিশ কুমারের জনতা দল (ইউনাইটেড) অথবা জেডি (ইউ) এই বৈঠকে অংশ নেননি।

ভোট গণনা হবে ২০ জুলাই। দেশের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৪ জুলাই। নতুন রাষ্ট্রপতি শপথ নেবেন ২৫ তারিখ।