রাখাইন নিয়ে 'ভুয়া তথ্য' ছড়ানো হচ্ছে: সু চি

অং সান সু চি
অং সান সু চি

ভুয়া তথ্যের অবাধ প্রবাহে মিয়ানমারের রাখাইনের পরিস্থিতি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এ ধরনের সংবাদ উগ্রপন্থীদের সাহায্য করছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে নতুন করে রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো দেওয়া বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি।

সু চির দপ্তর জানিয়েছে, তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে ফোনালাপে এসব মন্তব্য করেছেন। পাশাপাশি মিয়ানমার সরকার রাখাইন রাজ্যে প্রত্যেকের সুরক্ষা দিচ্ছে বলে দাবি করেছেন সু চি।

মিয়ানমারের ক্ষমতার রাশ কার্যত সু চির হাতেই। গত ২৫ আগস্ট নতুন করে রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটির ‘গণতন্ত্রকামী নেত্রী’ বলে পরিচিত সু চি মুখ না খোলায় কিংবা তাঁর দপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য না আসায় তাঁর নিন্দায় সরব হয় বিশ্ব। প্রসঙ্গত, নতুন করে রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর গত দুই সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে ১ লাখ ২৩ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে শরণার্থী হয়ে পাড়ি জমিয়েছে।

বিবৃতি অনুযায়ী মিয়ানমার সরকারের ভাষ্য হলো, অং সান সু চি এরদোয়ানকে বলেছেন যে তাঁর সরকার রাখাইনের বসবাসকারী লোকজনের নিরাপত্তায় সম্ভাব্য সবকিছুই করছে। অন্যদিকে ফোনালাপে সু চিকে এরদোয়ান বলেছেন, নিরপরাধ মানুষের ওপর সন্ত্রাসী তৎপরতার নিন্দা করছে তুরস্ক। রোহিঙ্গা সংকট পুরো মুসলিম বিশ্বের জন্য উদ্বেগ তৈরি করেছে।

ওই বিবৃতি অনুযায়ী, রাখাইন নিয়ে প্রচুর পরিমাণ ভুয়া ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সেগুলো উগ্রপন্থীদের স্বার্থ হাসিলে ছড়ানো হয়েছে।

৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাখাইন সংকট নিয়ে ১২ লাখ টুইট হয়েছে, যেগুলোর অনেকগুলোতে সহিংসতার ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক সংবাদদাতা জোনাথান হেড বলেন, এগুলোর বেশির ভাগই ভুয়া। ভালো করে লক্ষ করলে দেখা যায়, সব নয়, কিন্তু অনেক ছবিই ভুয়া যেগুলো বিশ্বের অন্যান্য সংকটের। উদাহরণস্বরূপ তিনি তুরস্কের উপপ্রধানমন্ত্রী মেহমেত সিমসেকের টুইটে দেওয়া ছবির উল্লেখ করেন, যেটি ১৯৯৪ সালের রুয়ান্ডার গণহত্যার।

কিন্তু বিবিসি বার্মিজ সার্ভিসের এক সংবাদদাতা বলেন, মিয়ানমার সরকার রাখাইনে গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকার দেয় না বলেই ভুয়া সংবাদ ছড়িয়েছে। তারা যদি জাতিসংঘ কিংবা মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করা সংস্থাগুলোকে সেখানে যেতে দিত, কী হচ্ছে তা দেখতে, তবে ভুয়া তথ্য ছড়াত না।

উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট ২০টি তল্লাশিচৌকিতে হামলার জেরে রাখাইনে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়। এই হামলার জন্য রোহিঙ্গাদের দায়ী করা হয়। উগ্রপন্থীদের ধরার নামে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এটিকে ‘জাতিগত নিধন’ ও ‘গণহত্যা’র সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে।