জাতিসংঘের অধিবেশনে যাচ্ছেন না সু চি

দল ক্ষমতায় আসার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছিলেন অং সান সু চি। ছবি: জাতিসংঘ
দল ক্ষমতায় আসার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছিলেন অং সান সু চি। ছবি: জাতিসংঘ

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে যাচ্ছেন না মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি। তাঁর মুখপাত্র আজ বুধবার এই কথা জানিয়েছেন। 

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মধ্যে সু চি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সংস্থাটির সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনের উদ্বোধন হয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই অধিবেশন চলবে। ১৯ সেপ্টেম্বর সাধারণ বিতর্ক শুরু হবে।

সু চির মুখপাত্র জ হাতয় আজ বলেন, মিয়ানমারের সু চি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেবেন না।

কী কারণে সু চি সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন না, তার কোনো ব্যাখ্যা দেননি জ হাতয়। তবে তিনি জানিয়েছেন, সু চির পরিবর্তে মিয়ানমারের পক্ষে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হেনরি ভ্যান থিও এই অধিবেশনে অংশ নেবেন।

সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ক্ষমতায় আসার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে প্রথমবারের মতো অংশ নেন সু চি। অধিবেশনে সু চির দেওয়া ভাষণ প্রশংসা কুড়ায়।

এবার এমন এক সময় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরু হয়েছে, যখন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ও কট্টরপন্থী বৌদ্ধরা সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংস দমন-পীড়ন চালাচ্ছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আজ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

রাখাইনে চলমান সহিংসতার মুখে সেখান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।

রাখাইন পরিস্থিতির কারণে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের চলতি অধিবেশনে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছে মিয়ানমার। মানবাধিকার কাউন্সিলের ৩৬তম অধিবেশনের শুরুর দিন গত সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার জেইদ রাদ আল হুসেইন বলেন, রাখাইনে যা ঘটছে, তা ‘জাতিগত নিধনের উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত’।

জেইদ রাদ আল হুসেইনের মন্তব্যের জবাবে মিয়ানমার বলেছে, তারা কখনো গণহত্যা অনুমোদন করে না।

জাতিগত নিধনের অভিযোগ অস্বীকার করার পাশাপাশি জেইদের মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে মিয়ানমার।

রোহিঙ্গাদের দমন-পীড়ন বন্ধে ব্যর্থতার জন্য শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচিত হচ্ছেন। শান্তিতে নোবেলজয়ী একাধিক ব্যক্তি সু চির সমালোচনা করেছেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনেও সু চি সমালোচনার মুখে পড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু এখন তিনি এই অধিবেশনেই যাচ্ছেন না।

রাখাইনের কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়ি ও তল্লাশিচৌকিতে গত ২৫ আগস্ট রাতে সন্ত্রাসী হামলা হয়। এরপর জেরে সেখানে নতুন করে সহিংস সেনা অভিযান শুরু হয়।