প্রেমিক জুটিকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে হত্যা!

১৭ বছরের কিশোর আর ১৫ বছরের কিশোরী ভালোবেসে নিজেদের মতো বাঁচার জন্য ঘর ছেড়েছিল। কিন্তু সমাজ তা মেনে নেয়নি। গ্রাম্য সালিস বসিয়ে নির্দেশ দিয়েছিল, এই প্রেমিক জুটিকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে হত্যা করা হোক। তাই হয়েছে। গোপনে তাদের দাফনও সম্পন্ন হয়। তবে শেষ পর্যন্ত চাপা থাকেনি সম্মান রক্ষার নামে পাকিস্তানের করাচিতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা।

ডনের খবরে বলা হয়েছে, পশতুন সম্প্রদায়ের কাউন্সিল যা জিরগা নামে পরিচিত, তারা সমাজের সুনাম নষ্ট করার অভিযোগ তুলে প্রেমিক যুগলকে এ শাস্তি দেয়।

স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা আমান মারওয়াত জানিয়েছেন, এ ঘটনায় কিশোর ও কিশোরীর বাবা, দুই চাচাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিরগার যারা এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাদের খোঁজ করা হচ্ছে।

ঘটনা সম্পর্কে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কিশোর-কিশোরী গত মাসে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর তাদের ধরে আনা হয়। জিরগার নেতারা তাদের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে হত্যা করার নির্দেশ দেন। এরপর এই প্রেমিক জুটিকে এভাবে হত্যা করা হয়।

২৫ বছর ধরে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আমান মারওয়াত বলেন, পরিবারের ও সমাজের সম্মান রক্ষার নামে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড করাচিতে খুবই সাধারণ ঘটনা। প্রতি বছর ৫০০-এর বেশি নাগরিক যাদের বেশির ভাগই নারী, তারা এ ধরনের হত্যার শিকার হন।

পাকিস্তানের মানবাধিকারকর্মী জোহরা ইউসুফ বলেন, জিরগার আধিপত্যের কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন একেবারে অসহায়। আর এ কারণে উপজাতি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সম্মান রক্ষার নামে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটে থাকে।

সাংবাদিক জিয়াউর রেহমান, যিনি এ ঘটনা নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন করেছেন, তিনি বলেন, দুই পরিবার বিয়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু জিরগার নেতারা তা মেনে নেননি। বরং তাঁরা হুমকি দেন, জিরগার নির্দেশ অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।