রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের সমালোচনা

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতন নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করছে দুটি শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থা দুটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে।

এর সমালোচনার মধ্যেই গতকাল বুধবার নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। যুক্তরাজ্য ও সুইডেনের আহ্বানে এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক হবে। এর আগে ৩০ আগস্টও রোহিঙ্গা ইস্যুতে বৈঠক করেছিল নিরাপত্তা পরিষদ। তবে তখন কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

এইচআরডব্লিউর জাতিসংঘবিষয়ক পরিচালক লুইস চাহবনু এক বিবৃতিতে বলেছেন, মিয়ানমারের জাতিগত নিধন হচ্ছে ব্যাপক আকারে। কিন্তু মনে হচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদ বদ্ধ দুয়ার খুলে ক্যামেরার সামনে আসতে পারছে না। এটা খুবই দুঃখজনক। এইচআরডব্লিউ বলছে, কেবল নিন্দার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারে।

গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা জঙ্গিদের পুলিশের চেকপোস্টে সিরিজ হামলার পর দেশটির সেনাবাহিনী মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন শুরু করে। সহিংসতা থেকে বাঁচতে চার লাখের মতো রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। কয়েক হাজার রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের জাতিসংঘবিষয়ক প্রধান শেরিন ত্যাডরস বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদ সদস্যরা জনসম্মুখে কোনো ঘোষণা না দেওয়ার মাধ্যমে মিয়ানমারের কাছে যে বার্তা দিচ্ছে, তা প্রাণঘাতী। তারা (মিয়ানমার) এই নৃশংসতা অব্যাহত রাখবে।

রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে নিশ্চুপ থাকায় মিয়ানমারের নোবেল বিজয়ী নেত্রী অং সান সু চির সমালোচনা করে এই দুটি মানবাধিকার সংস্থা।

এইচআরডব্লিউর জাতিসংঘবিষয়ক উপপরিচালক অক্ষয় কুমার বলেন, মিয়ানমার নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদ সর্বশেষ যখন বসেছিল, এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ১০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে শরণার্থী হতে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন, এইচআরডব্লিউর মাঠপর্যায়ের কর্মীরা জানিয়েছেন, রাখাইন রাজ্যে এখনো আগুন জ্বলছে। হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালাচ্ছে।