ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার আরও এক 'বাবা'

ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার কথিত ধর্মগুরু বাবা সিয়ারাম দাস। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার কথিত ধর্মগুরু বাবা সিয়ারাম দাস। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

ভারতের কথিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিং দুই অনুসারীকে ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর এবার একই অভিযোগ উঠল আরও এক ‘স্বঘোষিত বাবার’ বিরুদ্ধে। উত্তর প্রদেশের সীতাপুরের কথিত ওই ধর্মগুরু বাবা সিয়ারাম দাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মঙ্গলবার ২১ বছর বয়সী এক তরুণী সিয়ারামের (৬০) বিরুদ্ধে তাঁকে আট মাস আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন। ওই তরুণী ডিগ্রি শ্রেণির শিক্ষার্থী।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিয়ারাম আশ্রম, স্কুল ও ডিগ্রি কলেজসহ বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। এ ছাড়া লক্ষ্ণৌ, বারবাঁকি, আগ্রা ও হাতরাস জেলায় তাঁর অনেক সম্পত্তি রয়েছে।

ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর অভিযোগ, দূরসম্পর্কের এক আত্মীয় সিয়ারামের অনুসারী রিন্টু সিংয়ের কাছে তাঁকে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। রিন্টু মিশরিখ এলাকায় সিয়ারামের শ্রী চন্দ্র ভগবান ইন্টার কলেজের ব্যবস্থাপক। গত বছর রিন্টু ওই তরুণীকে সিয়ারামের কাছে নিয়ে যান। পরে সিয়ারাম তাঁকে আটকে রাখেন।

তরুণী বলেন, তাঁর ওপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে। প্রায় আট মাস আটকে রেখে বাবা সিয়ারাম তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। এ ছাড়া আশ্রমে আটকে থাকা অবস্থায় অপরিচিত অনেকেও তাঁর ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনোমতে ওই তরুণী সম্প্রতি সিয়ারামের আশ্রম থেকে পালাতে সক্ষম হন। গত সোমবার রাতে তিনি পুলিশকে টেলিফোনে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। অভিযান চালিয়ে আগ্রা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মিশরিখ থানার কর্মকর্তা অশোক কুমার সিং বলেন, সিয়ারাম আগ্রায় জমিজমাসংক্রান্ত কাজে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিতাপুরে সিয়ারামের দখলে থাকা সম্পদের হিসাব নিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, সিয়ারামের কলেজে তাঁর একটি শোয়ার ঘর রয়েছে। সেখান থেকে কিছু কাপড় জব্দ করেছে পুলিশ। এ ছাড়া রিন্টু ও ওই তরুণীর দূরসম্পর্কের আত্মীয়কে গ্রেপ্তারে চেষ্টা করছে পুলিশ।

এর আগে দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের অভিযোগে করা দুটি মামলায় গত ২৫ আগস্ট দোষী সাব্যস্ত করা হয় হরিয়ানার কথিত ধর্মগুরু রাম রহিমকে। তাঁকে দুটি মামলায় ১০ বছর করে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন সিবিআই আদালত।

২০ সেপ্টেম্বর রাজস্থানের কথিত ধর্মগুরু কৌশলেন্দ্র প্রপানাচার্য ফলাহারি মহারাজের (৭০) বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন তাঁরই অনুসারী এক তরুণী।

তবে দেশটিতে এমন কর্মকাণ্ড শুধু রাম রহিম ও কৌশলেন্দ্র প্রপানাচার্য ফলাহারি মহারাজই ঘটাননি, তাঁদের আগেও অনেক ‘ধর্মগুরু’ এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। অনেকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তারও হয়েছেন। কথিত এসব ধর্মগুরুর মধ্যে আছেন ওডিশার সন্তোষ রাউল ওরফে সারথি বাবা, মধ্যপ্রদেশের লাল বুলচান্দনি ওরফে লাল সাঁই, বেঙ্গালুরুর স্বামী নিত্যানন্দ, কেরালার তিরুঅনন্তপুরমের স্বামী গঙ্গেশানন্দ, রাজস্থানের আশারাম বাপু, তাঁর ছেলে নারায়ণ সাঁই, হরিয়ানার সন্ত রামপাল, তামিলনাড়ুর স্বামী প্রেমানন্দ, উত্তর প্রদেশের প্রেমানন্দ মহারাজ, উত্তর প্রদেশের চিত্রকূটের স্বামী ভীমানন্দজি মহারাজ প্রমুখ।