যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের ফল নির্ধারক অশ্বেতাঙ্গরা!

ছবি: রয়টার্স
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনের অন্যতম ফলাফল নির্ধারক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন অশ্বেতাঙ্গ ভোটাররা (কালো ও সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী বা বিএমই)। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনের এক বিশ্লেষণ বলছে, অশ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর ভোট কম পাওয়ায় থেরেসা মের কনজারভেটিভ দল অন্তত ২৮ আসন হারিয়েছে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ব্রিটিশ ফিউসার থিঙ্ক ট্যাংক’-এর বিশ্লেষণ বলছে, বয়স, লিঙ্গ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, সামাজিক শ্রেণিবিভাজন নয়; বরং জাতিগত পরিচয় ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে বড় নির্ধারক।

এই গবেষণার বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার গার্ডিয়ান-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনে শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের কাছ থেকে ক্ষমতাসীন দল যে হারে সমর্থন পেয়েছে, একই হারে অশ্বেতাঙ্গ ভোটারদের সমর্থন পেলে তারা প্রায় ৬ লাখ ভোট বেশি পেত এবং আরও ২৮টি আসনে জয় পেত। সে ক্ষেত্রে বর্তমানের ঝুলন্ত পার্লামেন্টের বদলে ৪২ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় থাকত কনজারভেটিভ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর সহাবস্থানের জন্য পরিচিত ৭৫টি আসনের মধ্যে কনজারভেটিভ দল জিতেছে কেবল ৫টি আসন। যা ২০১৫ সালের তুলনায় ৯টি এবং ২০১০ সালের নির্বাচনের তুলনায় ১০টি কম।

রানিমেড ট্রাস্টের এক জরিপ বলছে, ২০১৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে উল্লিখিত ৭৫টি আসনে লেবার পার্টি ৬৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে, যা এক বছর আগের নির্বাচনে (২০১৫) ছিল ৫৪ শতাংশ। এর বিপরীতে ২০১৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কনজারভেটিভ দলের ভোট গড়ে ৬ শতাংশ বাড়লেও উল্লিখিত ৭৫টি আসনে কমেছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ।

‘ব্রিটিশ ফিউসার থিঙ্ক ট্যাংক’-এর গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, অশ্বেতাঙ্গ ভোটারদের ৪৭ শতাংশ কখনো কনজারভেটিভ দলকে ভোট দেবে না বলে জানিয়েছে। আর লেবার দলের প্রতি একই মনোভাব পোষণকারী অশ্বেতাঙ্গ ভোটারের হার ১৩ শতাংশ। তবে ৩৯ শতাংশ অশ্বেতাঙ্গ ভোটার জানিয়েছে, তারা সব সময় লেবার দলকে সমর্থন দিয়ে যাবে।

ঐতিহাসিকভাবে কনজারভেটিভ দলের প্রতি অভিবাসী ও অশ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর সমর্থন কম। দলটির রক্ষণশীল মনোভাব ও অভিবাসনের প্রতি কঠোর নীতির কারণেই এমন অবস্থা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এ অবস্থার পরিবর্তনে দলীয় নীতির কিছুটা উদারীকরণ করেছিলেন। কিন্তু থেরেসা মে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পরিস্থিতি আবারও বদলে যায়।

এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর কনজারভেটিভ দলের নেতারা বলছেন, ভোটের রাজনীতিতে অশ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর গুরুত্বকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের বার্ষিক সম্মেলনে অভিবাসী ও সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর সমর্থন আদায়ের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।